বর্ষবরণের জন্য দেড় দিনের ছুটি ভারতীয় শিবিরে

স্টিভন ভারতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে তারকা প্রথা বিলোপের পাশাপাশি, কড়া অনুশাসন জারি করেছেন। অতীতে ভারতীয় দলের ফুটবলারেরা অনুশীলনের পরে নিজেদের ইচ্ছে মতো সময় কাটাতেন। কেউ কেউ পরিচিতদের টিম হোটেলে নিজেদের ঘরে ডেকে নিতেন।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৭
Share:

উল্লাস: প্রস্তুতি ম্যাচে স্টিভনের দলকে হারিয়ে উচ্ছ্বাস ফুটবলারদের।

এশিয়ান কাপে অভিযান শুরু করার সাত দিন আগে ব্যতিক্রমী ছবি ভারতীয় শিবিরে। বর্ষশেষে হঠাৎই বদলে গিয়েছেন জাতীয় কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন। ইংরেজি নববর্ষের উৎসবে সামিল হওয়ার জন্য ফুটবলারদের দেড় দিন নিজেদের ইচ্ছে মতো সময় কাটানোর অনুমতি দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

স্টিভন ভারতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে তারকা প্রথা বিলোপের পাশাপাশি, কড়া অনুশাসন জারি করেছেন। অতীতে ভারতীয় দলের ফুটবলারেরা অনুশীলনের পরে নিজেদের ইচ্ছে মতো সময় কাটাতেন। কেউ কেউ পরিচিতদের টিম হোটেলে নিজেদের ঘরে ডেকে নিতেন। অনেকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়তেন। স্টিভন ভারতের কোচ হওয়ার পরে প্রথম দিন থেকেই সব বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রাতরাশ থেকে নৈশভোজ, মাঠে অনুশীলন থেকে জিমে ফিটনেস ট্রেনিং ও সুইমিং সেশন— কখন কী হবে সবই আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। ফুটবলারদের তা কঠোর ভাবে মেনে চলতে হয়। ম্যাচ না থাকলে ফুটবলারেরা কী খাবেন। ম্যাচের দিন তাঁদের কী খেতে হবে সেটাও আগে থেকে ঠিক করা থাকে। কোনও অবস্থাতেই তার ব্যতিক্রম হবে না।

স্টিভনের পূর্বসূরি নেদারল্যান্ডসের উইম কোভারম্যান্সও কড়া ছিলেন। কিন্তু তাঁর সময়ে মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজে এত কড়াকড়ি ছিল না। সেই সময় গোলরক্ষক সুব্রত পাল প্রবল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন আলুভাতে মাখার জন্য। স্টিভনের জমানায় এই ধরনের কোনও পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাই নেই। জাতীয় দলের ক্রীড়াবিজ্ঞানী ড্যানি ডেগানের ডায়েট চার্ট সুনীল ছেত্রীদের মেনে চলতে হবে। অস্ট্রেলীয় ড্যানিকে প্রথম দিনই স্টিভন বলে দিয়েছিলেন, টানা ৯০ মিনিট একই ভাবে খেলার মতো ফিটনেস তিনি চান ফুটবলারদের। শুধু তাই নয়। স্টিভনই তাঁকে আর্সেনাল, টটেনহ্যাম হটস্পার, লেস্টার সিটি-সহ একাধিক ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবে পাঠিয়েছিলেন অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য। কয়েক দিন আগে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড্যানি বলেছিলেন, ‘‘মাঠে নেমে দৌড়তে না পারলে লড়াই করা অসম্ভব। তাই ফিটনেস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ ফুটবলারদের ফিট রাখার জন্যই মশলাযুক্ত, চর্বি ও শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন তিনি। গুরপ্রীত সিংহ সাঁধুদের ডায়েট চার্টে রয়েছে গ্রিলড চিকেন, শাকসব্জি, তাজা ফল, ক্রিমহীন দুধ ও প্রচুর পরিমাণে জল। জাতীয় শিবিরে না থাকলেও যাতে ফুটবলারেরা তাঁর নির্দেশ মেনে চলেন, সে দিকেও কড়া নজর রয়েছে ড্যানির।

Advertisement

এ বার আবু ধাবিতে ছবিটা বদলাতে চলেছে। ভারতীয় শিবিরের অন্দরমহলের খবর, ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি ফুটবলারদের নিজেদের মতো করে সময় কাটানোর অনুমতি দিয়েছেন জাতীয় কোচ। সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে ও দুপুরে খাওয়ার ব্যাপারে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে শর্ত একটাই— টিম হোটেলে মঙ্গলবারের নৈশভোজে সবাইকে হাজির থাকতে হবে।

কোচ ছাড়পত্র দিলেও ফুটবলারদের মধ্যে কত জন যে বর্ষবরণের উৎসবে যোগ দিতে বেরোবেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, অধিকাংশই এই মুহূর্তে এশিয়ান কাপের প্রস্তুতিতে মগ্ন। কোনও অবস্থাতেই মনঃসংযোগে ব্যাঘ্যাত ঘটাতে রাজি নন। এশিয়ান কাপে ভারতের প্রথম ম্যাচ তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৬ জানুয়ারি। রবিবার অনুশীলন ম্যাচে তার মহড়াই দিলেন বলবন্ত সিংহেরা। অনুশীলন ম্যাচে সহকারী সম্মুগম বেঙ্কটেশের দলের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে ৪-৫ হারে স্টিভন একাদশ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন