অদম্য: মুখে আঘাত লাগল। তবু হার না মানা স্মিথ। ছবি: গেটি ইমেজেস।
ইংল্যান্ডের দুই সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান দাউইদ মালান, জনি বেয়ারস্টোই বলুন, বা দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়াকে লড়াইয়ে নিয়ে আসা স্টিভ স্মিথের ৯২ রানের ইনিংস। এঁদের ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে ওয়াকার বাইশ গজ। শুক্রবার তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশনে যে ভাবে ইংল্যান্ড ৩৬৮-৪ থেকে ৪০৩ অল আউট হয়ে গেল, তাতে রহস্যে ভরা উইকেট নিয়ে জোর আলোচনা হওয়ারই কথা।
সঙ্গে চলছে জল্পনাও। দিনের শেষে স্টিভ স্মিথ ৯২ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে দুশো পার করিয়ে দিলেন (২০৩-৩) বটে। কিন্তু এতে তাদের বিপদ কেটেছে, এমন কথা কি বলা যায়? বোধহয় না। শুক্রবার প্রথম সেশনে পিচ যদি আবার পাগলামি শুরু করে, তা হলে তো অজিদের ব্যাটিংয়েও ধস নামতে পারে। তখন কি আর স্মিথদের বিপদ কেটেছে বলা যাবে?
অ্যাসেজের মাঠের বাইরে যখন স্পট ফিক্সিং নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে তখন মাঠের মধ্যের লড়াইও ক্রমশ নজর কাড়ছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। শনিবার তৃতীয় দিনের সকালটা খুব গুরুত্বপূর্ণ তৃতীয় অ্যাশেজ টেস্টের। এই সেশনে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ে যদি ধস নামে, যে রকম নামল শুক্রবার সকালে, ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ে, তা হলে যে টেস্ট জমে যাবে এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
ইংরেজ ইনিংসে ধস নিয়ে অবশ্য সরব হয়েছেন জিওফ্রি বয়কট, ইয়ান বোথামের মতো প্রাক্তনরা। তাঁদের প্রশ্ন, কেন এমন ধস নামল ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ে? যেখানে সিরিজে ০-২ পিছিয়ে ইংল্যান্ড। যেখানে আগের দিন ৩০৫-৪-এ শেষ করে মাঠ ছাড়ে তারা। দু’জন সেঞ্চুরিও করেন (মালান ১৪০ ও বেয়ারস্টো ১১৯)। সেখানে মাত্র ৩৫ রানে শেষ ছ’উইকেট পড়ে যাবে! মাত্র ৫১ বলে, ৪৮ মিনিটের মধ্যে! নাথান লায়ন, প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, জোশ হেজেলউডরা এ দিন প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েন ইংল্যান্ডের মিডল ও লোয়ার অর্ডারের ওপর। মইন আলি, ক্রিস ওকস-সহ শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যান সব মিলিয়ে ২২ রান করেন এ দিন। এই সময় বাউন্স ও গতি দেখে মনে হচ্ছিল এই পিচ ব্যাটসম্যানদের বধ্যভূমি হয়ে উঠেছে যেন। যেখানে পাঁচশো তুলতে পারলে ইংল্যান্ড একটা লড়াইয়ের জায়গায় আসতে পারত, সেখানে চারশোতেই শেষ তারা। এর ফলে বিশেষজ্ঞরা অনেকে এই ম্যাচেই ইংল্যান্ডের সিরিজ হার দেখতে পাচ্ছেন। শুক্রবার লাঞ্চের পরে ৫৫ রানের মধ্যে ডেভিড ওয়ার্নার ও তাঁর সঙ্গী ওপেনার ব্যাঙ্ক্রফট ফিরে যান। তার পরে উসমান খোয়াজার (৫০) সঙ্গে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ১২৪ রানের পার্টনারশিপ করে দিনের শেষে ৯২ রানে অপরাজিত। চায়ের বিরতির ঠিক আগেই তীব্র গতিতে বল এসে এক বার হেলমেটের গার্ডের ফাঁক দিয়ে লাগে স্মিথের মুখে। তবে তাঁকে বেশ স্বাচ্ছন্দে ব্যাট করতে দেখা গেল। তবু আশঙ্কা থেকেই গেল।