রাঁচীতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গী সাফল্য

ঠান্ডা মাথায় জবাব স্মিথের

এক দিকে যন্ত্রণা ভরা এক অভিব্যক্তি, অন্য দিকে এক ঝলমলে মুখ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাঁচীর জেএসসিএ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ড্রেসিংরুমে এ রকমই দুই ছবি।

Advertisement

রাজীব ঘোষ

রাঁচী শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪১
Share:

হর্ষে: রাঁচী টেস্টের প্রথম দিনে সেঞ্চুরি করলেন স্টিভ স্মিথ। ছবি: পিটিআই।

এক দিকে যন্ত্রণা ভরা এক অভিব্যক্তি, অন্য দিকে এক ঝলমলে মুখ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাঁচীর জেএসসিএ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ড্রেসিংরুমে এ রকমই দুই ছবি।

প্রথমটা যদি হয় বিরাট কোহালির, অন্যটা অবশ্যই স্টিভ স্মিথের। বৃহস্পতিবার বিকেলে যিনি এক তৃপ্ত, সুখী অধিনায়ক।

Advertisement

মুরলী বিজয়ের ফুল লেংথ বল মিড অন দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে স্টিভ স্মিথ যখন খুশিতে ঝলমল করছিলেন, ব্যাট তুলে সতীর্থদের অভিবাদন গ্রহন করছিলেন, তখন জায়ান্ট স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে তাঁর মুখের ক্লোজ আপ। পরের শটেই অস্ট্রেলিয়ার ড্রেসিংরুমের সামনের ব্যালকনির ছবি ভেসে উঠল পর্দায়। অধিনায়কের ১৯তম টেস্ট সেঞ্চুরিই চাঙ্গা করে তুলল গোটা দলটাকে। যা আবার কি না স্মিথের টেস্ট জীবনের সবচেয়ে মন্থর সেঞ্চুরিও। প্রেস বক্সের পাশেই কমেন্ট্রি বক্সে দেখা গেল উত্তেজনায় উঠে দাঁড়িয়েছেন ম্যাথু হেডেন, ব্রেট লি, মাইকেল ক্লার্করা। বক্স থেকে বেরনোর সময় ম্যাথু হেডেন বলে গেলেন, ‘‘ছেলেটার মানসিক শক্তি দেখে গর্ব হয়। যেন আয়রনম্যান।’’

আরও পড়ুন

ঋদ্ধির বিনোদন, অশ্বিন কোণে মেঘ

গত এক সপ্তাহ ধরে তাঁকে যা কঠিন মানসিক যুদ্ধ চালাতে হয়েছে মাঠের বাইরে, এ যেন তারই জবাব। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরেও স্মিথের অভিব্যক্তিতে সেই প্রতিশোধের ছাপ নেই। চোয়াল শক্ত নয়, বরং চোখদুটো আরও উজ্জ্বল। যদিও তাঁর দল, দেশের বোর্ড ও মিডিয়া সমানে তাঁকে সাহস জুগিয়ে এসেছে এই সাত দিনে। তবু লড়াইটা ছিল স্মিথের একারই। সেই সাহস নিয়েই তিনি বৃহস্পতিবার লড়ে গেলেন যাঁর শহরে, সেই এমএস ধোনির ঠান্ডা মাথাটা যেন তাঁর শহর থেকে ধার করেছিলেন।

এই ক’দিন মাঠের বাইরে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গিয়েছেন। এ বার সেই লড়াই তিনি দেখালেন মাঠেও। মাঠের এই লড়াইয়ে তাঁর সঙ্গী হলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ক্যাপ্টেন সেঞ্চুরিতে পৌঁছতেই তাঁর উচ্ছ্বাসও ছিল দেখার মতো। ভারতীয় বোলারদের রীতিমতো শাসন করে ১৩টা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দিনের শেষে ১১৭ রান করে যখন প্যাভিলিয়নে ফিরছেন, তখন গ্যালারির ভারতীয় সমর্থকরাও সবাই উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানালেন স্মিথকে।

এই না হলে ক্রিকেটের জয়?

দিনের শেষে টিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘অতীতটা তো আর আমার হাতে নেই। অতীতে যা ভুল করেছি, তা স্বীকারও করে নিয়েছি। সেই জায়গা থেকেই আজ শুরু করেছিলাম। ম্যাক্সি দারুণ সঙ্গ দিয়েছে।’’ কন্ঠস্বরে যুদ্ধজয়ের তৃপ্তি স্পষ্ট। বললেন, ‘‘উইকেটটা এখনও সাহায্য করছে। যতক্ষণ করে, ততক্ষণে যতটা সম্ভব রান তুলে রাখতে হবে আমাদের। কাল সারা দিন ধরে খেলতে চাই। তবে সকালটা কেমন কাটে, সেটা আগে দেখতে হবে।’ দিনের শেষে ম্যাট রেনশ বলছিলেন, ‘‘স্মিথ কিন্তু গোটা ব্যাপরটা দারুণ সামলেছে। ও দেখিয়ে দিয়েছে, কঠিন পরিস্থিতিতে কী ভাবে হাল ধরতে হয়।’’

এই টেস্টে তো আসলে দুটো ম্যাচ খেলতে নেমেছেন স্মিথ। একটা নিজের হয়ে, অন্যটা দলের হয়ে। প্রথম ম্যাচটা টেস্টের প্রথম দিনই জিতে নিলেন স্মিথ। এ বার লক্ষ্য পরের জয়টা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন