দৌড়: ফিফা ফ্রেন্ডলি খেলতে রাশিয়ায় লিওনেল মেসি। অনুশীলনে বেশ আগ্রাসীও দেখাল মঙ্গলবার। ছবি: এএফপি
ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। কিন্তু নিরাপত্তা বিশ্বকাপের মতো!
আগামী ১১ নভেম্বর মস্কোর লুজনিকি স্টেডিয়ামে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নামছে আর্জেন্তিনা। সোমবারই মস্কো পৌঁছে গিয়েছেন লিওনেল মেসি-রা। মস্কোয় এ দিন মাইনাস এক ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অনুশীলনও করেন তাঁরা। মেসি-আগুয়েরো-রা গ্লাভস, লেগিন্স পরেই অনুশীলন সারলেন। তবে প্রবল ঠান্ডাতেও খোশমেজাজে আর্জেন্তিনা ফুটবলাররা। কিন্তু ঘুম উধাও রাশিয়া ফুটবল ফেডারেশনের কর্তাদের।
সপ্তাহখানেক আগেই জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএস-এর তরফে ২০১৮ বিশ্বকাপে হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। মেসি ও নেমারের ছবিও তারা ব্যবহার করেছিল হুমকিবার্তায়। আরও একটা পোস্টার ছিল আতঙ্কিত হওয়ার মতো। রাশিয়া বিশ্বকাপের লোগোর সামনে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক জঙ্গির ছবি। এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেন রাশিয়া ফুটবল ফেডারেশনের কর্তারা। জানা গিয়েছে, বিশ্বকাপের মতোই নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলা হচ্ছে ১১ নভেম্বরের ম্যাচে।
ফ্রেন্ডলি ম্যাচে বিশ্বকাপের মতো নিরাপত্তা কেন?
রুশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্তাদের যুক্তি, মেসি খেলছেন বলে এই ম্যাচটার গুরুত্ব একেবারেই আলাদা। তা ছাড়া এই সময় ক্লাব ফুটবলে বিরতি চলছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, বুন্দেশলিগায় সমস্ত খেলাই বন্ধ থাকবে। ফলে মেসিকে দেখতে প্রচুর বিদেশি দর্শকের মস্কো যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ রাশিয়া ফুটবল ফেডারেশন। মস্কো থেকে ফোনে এক শীর্ষ কর্তা বলছিলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো এখন ফ্রেন্ডলি ম্যাচকেই নিশানা করছে। প্যারিসে ফ্রান্স বনাম জার্মানি ম্যাচের ঘটনাই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘আসলে এই ধরনের ম্যাচকে ঘিরে উৎসবের আবহ তৈরি হয়। নিয়মিত ফুটবল স্টেডিয়ামে যান না, এ রকম প্রচুর দর্শক, শিশু ও মহিলারা আসেন ফ্রেন্ডলি ম্যাচ দেখতে। এই কারণেই এই ধরনের ম্যাচগুলোকে নিশানা করে সন্ত্রাসবাদীরা। ওরা জানে, এই সব ম্যাচে হামলা চালালে সহজেই গোটা বিশ্বে মুহূর্তের মধ্যে আলোড়ন ফেলে দেওয়া সম্ভব।’’
সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হুমকির পাশাপাশি রুশ কর্তারা চিন্তিত নিজেদের দেশের দর্শকদের নিয়েও। ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে অতীতে ফুটবল মাঠে অশান্তির অভিযোগে রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে, তাদের। তৈরি করা হয়েছে বিশেষ তালিকা। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বৈধ টিকিট থাকলেও অভিযুক্তদের কোনও অবস্থাতেই লুজনিকি স্টেডিয়ামে ১১ নভেম্বরের ম্যাচে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এখানেই শেষ নয়। রাশিয়ার রেস্তোরাঁয় অশান্তির অভিযোগে অতীতে গ্রেফতার হয়েছে যারা, তাদেরও স্টেডিয়ামে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রুশ ফুটবল ফেডারেশন এক কর্তা খোলাখুলি বলে দিলেন, ‘‘কনফেডারেশন্স কাপ আমরা সফল ভাবে করেছি। আর সাত মাস পরেই বিশ্বকাপ। এই ম্যাচটাকে আমরা বিশ্বকাপেরই মহড়া হিসেবে দেখছি। তাই নূন্যতম ঝুঁকিও নিতে চাই না। অতীতে ফুটবল মাঠে ও রেস্তোরাঁয় মারামারি বা ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কোনও অবস্থাতেই ওদের স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেওয়া হবে না।’’