সফল: রঞ্জিতে প্রথম ম্যাচেই রান পেলেন সুদীপ। ফাইল চিত্র
রঞ্জি ট্রফির শুরুটা রীতিমতো দাপটের সঙ্গে শুরু করল বাংলা। শুক্রবার নয়াদিল্লির পালাম মাঠের যে ঘাসের উইকেট পেসারদের স্বর্গ হতে চলেছে বলে মনে করা হয়েছিল, সেই উইকেটে উল্টে দাপট দেখালেন বাংলার ব্যাটসম্যানরাই।
বাংলার সহ অধিনায়ক সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, যিনি এত দিন ফর্মে ছিলেন না, তাঁর ব্যাটও এ দিন ঝলসে ওঠে সার্ভিসেস বোলারদের বিরুদ্ধে। দিনের শেষে সুদীপ অপরাজিত ১১৪ রানে। বাংলা ৩৪১-৩। বড় রান করে ছেড়ে দিয়ে আর দ্বিতীয় বার ব্যাট করতে না নামার ভাবনাই বাংলা শিবিরে রয়েছে বলে শোনা গেল। সুদীপ ও অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির ১৫৩ রানের পার্টনারশিপের পরে ফের একটা বড় পার্টনারশিপের লক্ষ্যে এগোচ্ছেন সুদীপ ও ঋদ্ধিমান সাহা (৩২)।
শুক্রবার দুই ওপেনার দেহরাদুন-জুটি অভিমন্যু ঈশ্বরন ও অভিষেক রামন ব্যাট হাতে লড়াকু মেজাজে ছিলেন। তাঁরা ৯৭ রানের পার্টনারশিপ গড়েন ৩১ ওভার ব্যাটিং করে। দলীপ ট্রফির ফাইনালে সেঞ্চুরি করা অভিমন্যু ৬৫ রান করেন ন’টি চার মেরে। অভিষেক ৪০। সাত ওভারের মধ্যে দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পরে দায়িত্ব নেন মনোজ-সুদীপ জুটি।
রঞ্জি ট্রফি রাউন্ড-আপ
• নয়াদিল্লিতে: গ্রুপ ‘এ’- অসম ২২৪-৭ বনাম দিল্লি (ইশান্ত শর্মা ৩-৩১)।
• লখনউয়ে: গ্রুপ ‘এ’- রেলওয়েজ ১৮২ অলআউট বনাম উত্তরপ্রদেশ ৯-০।
• লাহলিতে: গ্রুপ ‘বি’- সৌরাষ্ট্র ২৭১-৭ বনাম হরিয়ানা।
• জয়পুরে: গ্রুপ ‘বি’- রাজস্থান ২৪৯-৪ (রবিন বিস্ত ১০৫ নআ) বনাম
জম্মু-কাশ্মীর।
• তিরুঅনন্তপুরমে: গ্রুপ ‘বি’- ঝাড়খন্ড ২০৯-৯ (জলজ সাক্সেনা ৬-৫০) বনাম কেরল।
• চেন্নাইয়ে: গ্রুপ ‘সি’- তামিলনাড়ু ১৭৬ অল আউট বনাম অন্ধ্রপ্রদেশ ৮-০।
• ইনদওরে: গ্রুপ ‘সি’- মধ্যপ্রদেশ ২৬৮-৫ বনাম বরোদা।
• ধর্মশালায়: গ্রুপ ‘ডি’- হিমাচল প্রদেশ ৪৫৯-২ (প্রশান্ত চোপড়া ২৭১ নআ) বনাম পঞ্জাব।
• পরভোরিমে: গ্রুপ ‘ডি’- ছত্তিশগড় ১৮৯-৫ বনাম বনাম গোয়া।
দলীপে চার ইনিংসে ৯৩ রানের বেশি পাননি। তাই একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে এ দিন পালামে নেমেছিলেন বলে জানান বাংলার সহ-অধিনায়ক। নয়াদিল্লি থেকে এ দিন ফোনে সুদীপ বলেন, ‘‘শেষ কয়েকটা ম্যাচে বড় রান পাচ্ছিলাম না। এই চ্যালেঞ্জটা আমাকে জিততেই হবে, এ রকমই মনে করে আজ ক্রিজে নেমেছিলাম। আর মনোজের মতো ব্যাটসম্যান উল্টোদিকে থাকলে মনোবল আপনিই বেড়ে যায়। সেটাই হল।’’
মনোজ হাফ ডজন বাউন্ডারি ও দুটো ওভার বাউন্ডারি মেরে ৬৯ রান করার পাশাপাশি স্ট্রাইক রোটেট করে সুদীপকে রান নিতে সাহায্যও করে যান সমানে। তা ছা়ড়া ডানহাতি-বাঁহাতি জুটি ভাঙার কাজও বেশ কঠিন হয়ে ওঠে বিপক্ষ বোলারদের কাছে। কিন্তু যে সবুজ উইকেটের জন্য দলে তিন পেসার ও এক পেসার অলরাউন্ডার নিয়ে নামে বাংলা, টস জিতে সার্ভিসেস ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তও নেন, সেই উইকেটে ব্যাটসম্যানদের এই দাপট কী ভাবে? সুদীপ বলেন, ‘‘উইকেটটা সে রকমই। তবে আমরা ভাল ব্যাট করেছি। ওরা ঠিকঠাক জায়গায় বল রাখলেও আমরা তার উপযুক্ত মোকাবিলাও করেছি।’’ এই উইকেটে অবশ্য তাঁদের দলের বোলাররা ভাল বল করবেন বলে আশা সুদীপের। বলেন, ‘‘আমাদের দলে মহম্মদ শামি, অশোক ডিন্ডার মতো বোলার রয়েছে। এই উইকেটে ওদের কুড়ি উইকেট ফেলা ওদের পক্ষে সম্ভব।’’ বাংলা শিবিরে ফোন করে জানা গেল, শনিবার সারা দিন ব্যাট করে বিপক্ষের সামনে রানের পাহাড় তুলে আর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে না নামাই তাদের লক্ষ্য।