বাগানই কিন্তু আমাদের সামনে দরজাটা ফাঁক করে দিয়েছে

মরসুমের শেষ ম্যাচটা যে জিতবে, সে-ই নিয়ে যাবে সব সম্মান। এই জায়গা থেকে আজ আই লিগ জেতার প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নামছে দু’টো টিমই। এমন মারকাটারি চিত্রনাট্যকে টেক্কা দেওয়া কিন্তু অসম্ভব। তা সেই আলোচনাটা বিশ্বের যে কোনও লিগ নিয়েই হোক না কেন! ক্লাব হিসেবে মরসুম জুড়ে এত দিন আমরা যা যা পারফরম্যান্স করে এসেছি, যত পরিশ্রম করেছি, সেই সব কিছু এখন এসে দাঁড়িয়েছে এই একটা ম্যাচে কী হবে তার উপর।

Advertisement

সুনীল ছেত্রী

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ০৩:২৩
Share:

মরসুমের শেষ ম্যাচটা যে জিতবে, সে-ই নিয়ে যাবে সব সম্মান। এই জায়গা থেকে আজ আই লিগ জেতার প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নামছে দু’টো টিমই। এমন মারকাটারি চিত্রনাট্যকে টেক্কা দেওয়া কিন্তু অসম্ভব। তা সেই আলোচনাটা বিশ্বের যে কোনও লিগ নিয়েই হোক না কেন!
ক্লাব হিসেবে মরসুম জুড়ে এত দিন আমরা যা যা পারফরম্যান্স করে এসেছি, যত পরিশ্রম করেছি, সেই সব কিছু এখন এসে দাঁড়িয়েছে এই একটা ম্যাচে কী হবে তার উপর। আর আমরা প্রত্যেকে মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।
আমাদের মরসুম শুরু হয়েছিল ফেড কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া দিয়ে। তার পর এএফসি কাপের মতো টুর্নামেন্টের প্রি-কোয়ার্টারে খেলেছি। আর এখন নিজেদের আই লিগ খেতাব ধরে রাখার থেকে মাত্র এক ম্যাচ দূরে বেঙ্গালুরু এফসি। সব মিলিয়ে এটা জোর দিয়ে বলছি, আজ ফলাফল যা-ই হোক না কেন, এই মরসুমটা আমরা শেষ করব টানা দ্বিতীয় বছর হিরো আই লিগে ভাল খেলে সফল হয়েছি জেনেই।
মোহনবাগান অবশ্য খুব কঠিন প্রতিপক্ষ। ওদের গত কয়েক বছরের পারফরম্যান্সের দিকে তাকালেই পরিষ্কার, ইদানীং কালে এটাই ওদের সেরা মরসুম যাচ্ছে। দুরন্ত ফর্মে টিমটা। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল ওরা অপ্রতিরোধ্য গতিতে খেতাবের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার পরেই পরপর কয়েকটা ম্যাচে ওরা হোঁচট খেল। যাতে আমাদের সামনে সুযোগের দরজাটা একটু ফাঁক হয়। যেটা কাজে লাগাতে আমাদের ছেলেরা ভুল করেনি।

Advertisement

মোহনবাগানকে রীতিমতো তাড়া করে আমরা ফিরে এসেছি খেতাবের লড়াইয়ে। আমাদের টিম ঠিক কতটা জমাট আর মনোবলের দিক থেকে কতটা মজবুত, সেটা এর থেকেই বুঝবেন। মরসুমে পরিস্থিতি যখন যা-ই থাকুক, আমাদের টিমের প্লেয়ারদের মধ্যে দায়বদ্ধতার অভাব কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও দেখিনি।

যেটা আমাদের টিমের সেরা অস্ত্র, আর ড্রেসিংরুমের ভিতর যা সবচেয়ে বেশি দলকে সাহায্য করেছে, সেটা আমাদের টিম স্পিরিট। প্রয়োজনের সময় টিমের প্রত্যেক ফুটবলার এগিয়ে এসে নিজের সবটুকু দিয়ে দায়িত্বের জায়গাটা একেবারে ঠিকঠাক পালন করেছে। যে কারণে এই মরসুমে আমাদের এত জন প্লেয়ার গোল করেছে। গোল পাওয়ার জন্য টিমকে কোনও বিশেষ এক বা দু’জনের উপর নির্ভর করে থাকতে হয়নি। আর এটাই একটা শক্তিশালী টিমের প্রথম লক্ষণ। ট্রেনিং আর প্রস্তুতির দিক থেকে দেখলে, এ বছর আমরা কোথাও কোনও ত্রুটি রাখিনি। এ বার কঠিন পরিশ্রমের পুরস্কারটা পাওয়ার সময় এসেছে। যে পুরস্কারের থেকে আর মাত্র একটা জয়ের দূরত্বে দাঁড়িয়ে আমরা।

Advertisement

আই লিগে আমাদের টিম এই মুহূর্তে দুরন্ত ফর্মে। আর ছেলেরা সেই ফর্মটা ধরে রেখে আরও একটা ম্যাচে নিজেদের সবটুকু নিংড়ে দেওয়ার জন্য তেতে আছে। টিমের প্রত্যেকে, সে কোচিং স্টাফ হোক বা ফুটবলার, সারা মরসুম একটাই লক্ষ্যে খেটে এসেছে—আই লিগ খেতাব রক্ষা। সেটা আমরা পারলাম কি না, তার ফয়সালা হবে এই একটা ম্যাচে। খেলাটা জমজমাট হতে বাধ্য। কথা দিচ্ছি, দুর্দান্ত একটা ম্যাচ হবে। যা সহজে ভোলা যাবে না।

গত মরসুমে গোয়ায় খেতাব জিতেছিলাম। আমাদের খুব বেশি সমর্থক সেখানে ছিলেন না। কিন্তু এ বার ঘরের মাঠে ভরা গ্যালারির সামনে জিততে পারলে সমর্থকদের সেরা উপহারটা দেওয়া যাবে। তাই রবিবার যত কাজই থাক, বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে সন্ধে সাতটায় হাজির থেকে নীল জার্সিকে সমর্থন করতে ভুলবেন না। মরসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এই সমর্থন আমাদের খুব দরকার।

ফাইনালের লড়াই। অনেক কিছু বাজি থাকছে। পাশে থাকবেন। দেখা হবে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন