বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সাইয়ের সাহায্য আর পাবেন না স্বপ্না। —ফাইল চিত্র।
অলিম্পিক্স পোডিয়াম স্কিম (টপস) থেকে বাদ পড়লেন বাংলার মেয়ে স্বপ্না বর্মন। তালিকায় নাম নেই দু’বারের অলিম্পিক্সের পদক জয়ী কুস্তিগির সুশীলকুমারেরও। স্বপ্নার নাম না থাকলেও হিমা দাশ, নীরজ চোপড়া, সীমা পুনিয়া, জন জনসনদের মতো অ্যাথলিটদের রাখা হয়েছে তালিকায়। ‘টপস’ থেকে বাদ পড়ার অর্থ, স্বপ্না বা সুশীলদের উপর অলিম্পিক্স পদকের ভরসা রাখছে না সাই।
২০২০ ও ২০২৪ অলিম্পিক্সের দিকে চোখ রেখে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (সাই) ‘টপস’ স্কিমের তিনটি খেলার তালিকা বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে। তাতে জাকার্তা এশিয়াডে হেপ্টাথলনে দেশের প্রথম সোনাজয়ী মেয়ে স্বপ্নার না থাকার পিছনে যুক্তি, জলপাইগুড়ির মেয়ের এশিয়াডের সাফল্য অলিম্পিক্সের ধারে কাছে নয়। সাইয়ের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘স্বপ্নার উপর আমাদের নজর থাকবে। সামনের বছর এপ্রিলে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ও কেমন ফল করে সেটা দেখা হবে। হেপ্টাথলনে স্বপ্না যে পয়েন্ট করেছে (৬০২৬) সেটা বিশ্ব পর্যায়ের ধারেকাছে নেই। তাই বাদ পড়েছে।’’ ‘টপস’-এ না থাকার অর্থ আর্থিকভাবে তাঁর ক্ষতি তো হবেই, বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সাইয়ের সাহায্য আর পাবেন না স্বপ্না।
এ দিন কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে মোহরকুঞ্জে স্বপ্না ও তাঁর কোচ সুভাষ সরকারকে সংবর্ধনা জানানো হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে আনন্দবাজারের কাছ থেকে ‘টপস’ থেকে বাদ পড়ার খবর পান বাংলার সোনার মেয়ে। বললেন, ‘‘বাদ পড়েছি তো কী হয়েছে? ২০১৭ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের আগেও তো ‘টপস’ এ ছিলাম না। সেখানে পদক পাওয়ার পর স্কিমে ঢুকি। আবার নিজেকে প্রমাণ করে সেখানে ঢুকব। অলিম্পিক্সে যোগ্যতা পাওয়ার জন্য ৬২০০ বা ৬৩০০ পয়েন্ট করতে হবে। সেই যোগ্যতা অর্জন করে টোকিয়ো যাওয়াই এখন লক্ষ্য আমার।’’ আর তাঁর কোচ সুভাষ সরকার বললেন, ‘‘এশিয়াডের পদক পাওয়া ৩১ জনের মধ্যে থেকে আট জনকে মাত্র নেওয়া হয়েছে। আমরা খবর পাচ্ছিলাম স্বপ্নাও বাদ পড়তে পারে। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে যাতে ৬২০০ করতে পারে সে জন্য স্বপ্নাকে পরিশ্রম করতে হবে। কয়েকটা ইভেন্টে ওর অনেক উন্নতি দরকার।’’ স্বপ্না ইতিমধ্যেই অনুশীলনে নেমে পড়েছেন সল্টলেক সাইতে।
অ্যাথলেটিক্সের স্বপ্না ছাড়াও জাকার্তায় পদকজয়ীদের মধ্যে বাদ পড়েছেন মনজিৎ সিংহ, তেজস্বীন শঙ্কর, গাভিত মুরলি এবং বিয়ন্ত সিংহ। ভারোত্তোলক বাংলার রাখী হালদার, প্রদীপ সিংহরা বাদ পড়েছেন ‘টপস’ থেকে। স্বপ্নার ফিরে আসার সুযোগ থাকলেও ২০০৮-এর বেজিং এবং ২০১২-র লন্ডন অলিম্পিক্সে পদকজয়ী সুশীলকুমারের অবশ্য ফেরার কোনও সুযোগ নেই। কারণ তাঁর ইভেন্টের বদল হয়ে গিয়েছে। সুশীলের যাবতীয় সাফল্য ৬৬ কেজিতে। ৭৪ কেজিতে বিশ্ব পর্যায়ের ধারে কাছে নেই সুশীলের ফল। এক সাই কর্তা বললেন, ‘‘সুশীলের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নামার রাস্তা মনে হয় চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেল।’’