গ্যালারির গর্জন তামিমের সাহস বাড়ায়

হাসপাতালেই চিকিৎসকরা তামিমের কব্জির চোট পরীক্ষা করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তা ভেঙেছে। ফলে এশিয়া কাপে আর খেলা হবে না তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৭
Share:

অভিনব: এক হাতে ব্যাট করে মন জিতলেন তামিম। ছবি: টুইটার।

এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে হাতের কব্জি ভেঙেছিল তাঁর। যেতে হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু সেখান থেকে ফিরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ব্যাট করতে নেমে পড়েছিলেন। শনিবার রাতে বাংলাদেশ ইনিংসের শেষ দিকে এক হাতেই তামিমকে ব্যাট করতে দেখেছে গোটা বিশ্ব। যা দেখে বাংলাদেশ ওপেনারের সাহসের প্রশংসা শুধু তাঁর দেশেই নয়, গোটা ক্রিকেট বিশ্বেই এই মুহূর্তে চর্চার বিষয়।

Advertisement

জানা গিয়েছে, হাসপাতালেই চিকিৎসকরা তামিমের কব্জির চোট পরীক্ষা করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তা ভেঙেছে। ফলে এশিয়া কাপে আর খেলা হবে না তাঁর। হাসপাতাল থেকে ড্রেসিংরুমে ফিরে তামিম চুপ করেই বসেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের নবম উইকেট পড়তেই ব্যাট হাতে মাঠে নেমে পড়েন তিনি। দলের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে শেষ উইকেটে ৩২ রান তোলেন। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় ২৬১ রানে। যা শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ম্যাচেই বড় ব্যবধানে হারাতে সাহায্য করেছে বাংলাদেশকে।

ম্যাচ শেষে যে প্রসঙ্গে তামিম বলেন, ‘‘ওই সময় সাহসটা বেড়ে গিয়েছিল। গ্যালারির গর্জন শুনে মনে মনে বলছিলাম, যা হওয়ার হবে, দেশ ও দলের জন্য নিজের সেরাটা দিতে হবে। ব্যাপারটা খুব ঝুঁকির ছিল। কারণ, এক হাতে ব্যাট করার সময় জখম হাত সামনে চলে আসছিল। বল ব্যাটে না লাগলে ওই হাতে লেগে বড় বিপদ হতে পারত। সিদ্ধান্তটা আমারই ছিল।’’ এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের ওপেনার এর সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘যখন ড্রেসিংরুমে প্যাড পরছিলাম, তখন রুবেল ব্যাট করছিল। মাশরফিভাই, মোমিনুল (হক) আমাকে তৈরি হতে সাহায্য করে। ড্রেসিংরুমে সবাই আমার পাশে ছিল।’’ এশিয়া কাপে যে যথেষ্ট আশা নিয়ে এসেছেন, তা জানিয়ে তামিম বলেন, ‘‘এখানে অনেক আশা নিয়ে এসেছি আমরা। একটা বল খেলে দিতে পারলে যদি কিছু রান পাওয়া যায়, তা হলে দলেরই ভাল হবে, এই কথা ভেবেই আমি নেমে পড়ি। তখন আর অন্য কিছুই ভাবিনি। তা ছাড়া কেউই ভাবিনি যে, আমি ওই একটা বল খেলে দেওয়ায় অন্য দিক থেকে আরও ৩২টা রান চলে আসবে। মুশফিকভাই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। এমন রোমাঞ্চকর ঘটনা আমার ক্রিকেট জীবনে কখনও ঘটেনি।’’

Advertisement

অভিভূত বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরফি মর্তুজা। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘‘শুরুতে চাপটা খুব বেশি ছিল। দ্রুত কয়েক উইকেট চলে গিয়েছে। এই অবস্থায় তামিমও ব্যাট করতে পারবে না বলেই জানতাম। কিন্তু সেই চাপ ও নিজেই কমিয়ে দেয়। হাসপাতাল থেকে ফিরে ব্যাট করতে নামার সিদ্ধান্ত তামিমের একার।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘যদি ওই সময় তামিম ব্যাট করতে না যেত, তা হলে দলের কেউ ওকে মাঠে নামার জন্য চাপ দিত না। এই সিদ্ধান্তের পুরো কৃতিত্বটাই তাই একা তামিমের।’’

বাংলাদেশে অধিনায়ক প্রশংসা করেন মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত শতরানেরও। সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচগুলোতে তামিমকে দলে পাওয়া যাবে না বলে। তাঁর কথায়, ‘‘যে ভাবে বাংলাদেশ ইনিংসে মুশফিকুর টেনে নিয়ে গেল তা অনবদ্য।’’ একই সঙ্গে দুবাইয়ের সমর্থকদেরও প্রশংসা করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন