নোট বাতিলের ধাক্কায় ভোগান্তি

আটকে রইল ‘খেলো ইন্ডিয়া’র টিম

নোট বাতিলের ধাক্কায় বিপাকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘খেলো ইন্ডিয়া’র প্রতিযোগীরা। কলকাতায় টুর্নামেন্টে যোগ দিতে আসা জেলার তিন টিমের সবাই এক সময় ঘর ছাড়া হয়ে পড়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:০৬
Share:

সল্টলেক স্টেডিয়াম সংলগ্ন যুব আবাসের সামনে বিধ্বস্ত মেদিনীপুর টিম।-শঙ্কর নাগ দাস

নোট বাতিলের ধাক্কায় বিপাকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘খেলো ইন্ডিয়া’র প্রতিযোগীরা। কলকাতায় টুর্নামেন্টে যোগ দিতে আসা জেলার তিন টিমের সবাই এক সময় ঘর ছাড়া হয়ে পড়েছিলেন। খাবারও ছিল না। এমনকী প্রবল দুর্ভোগে একজন অ্যাথলিট অসুস্থও হয়ে পড়েন। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যে দুর্ভোগ চলল। রাতে আনন্দবাজার থেকে ফোন পেয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অবশেষে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

Advertisement

ঘটনাটা কী?

সল্টলেক সাইয়ে দু’দিন ধরে চলা রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতা শেষ হয় বুধবার। এবং তার পরেই সবার নিজের নিজের জেলায় ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা রাজ্য ক্রীড়া পর্ষদ মুর্শিদাবাদ, বীরভূম এবং বাঁকুড়া টিমের ফিরে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি। এ ব্যাপারে রাজ্য ক্রীড়া পর্ষদের অন্যতম আধিকারিক সুরজিৎ দত্ত শর্মা বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার সমস্যা আছে। তাই নগদে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। চেক নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’ চেক কেন নিচ্ছেন না প্রশ্নে বাঁকুড়া জেলা দলের ম্যানেজার গোলক হালদার বলেন, ‘‘চেক নিতে অসুবিধে নেই। কিন্তু বাস ও ট্রেনের টিকিট কাটার মতো প্রয়োজনীয় নগদ টাকা আমাদের কারও কাছে নেই।’’ এর পর বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত কোনও রকম যোগাযোগ করা হয়নি টিমগুলোর সঙ্গে। উল্টে হঠাৎ যুবভারতীর যুব আবাস ছাড়তে বলে দেওয়া হয় সব টিমকে। মুর্শিদাবাদ জেলা দলের ম্যানেজার শ্যামল কুমার মণ্ডল এও অভিযোগ করেন, ‘‘আমাদের এক মেয়ে অ্যাথলিট গত কাল থেকেই অসুস্থ। তাঁকে নিয়ে আমরা হাসপাতালে দৌড়োদৌড়ি করছি। কারও কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাইনি।’’

Advertisement

এর পরেই ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ব্যাপারটা তিনি জানার পরেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এ দিন রাতের দিকে মুর্শিদাবাদ জেলার এক আধিকারিক বললেন, ‘‘আমাদের টিমের জন্য যুব আবাসেই থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে একটা বাস ঠিক করা হয়েছে। ওটা করেই আমরা ফিরব।’’

যুবভারতীর যে আধিকারিকরা কোনও দায়িত্ব নেবেন না বলে হাত তুলে নিয়েছিলেন, ক্রীড়ামন্ত্রীর এক ফোনে অসুস্থ অ্যাথলিটেরও সুচিকিৎসার ব্যবস্থাও করে দেন তাঁরা। শ্যামলবাবু বলছিলেন, ‘‘১৮ ছাত্র ও ১৪ ছাত্রী-সহ মোট ৩৪ জনের দল নিয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর বহরমপুর থেকে বাসে করে কলকাতা আসি। বাস ভাড়া বাবদ লেগেছে ৮ হাজার ২২০ টাকা। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা তুলে নিয়ে আসি। এখনও আসার ভাড়া পাইনি।’’ প্রসঙ্গত, রাজ্য স্তরের এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য থাকা-খাওয়ার পাশাপাশি যাতায়াত ভাড়া প্রতিটি জেলা দলকে দেওয়া বাধ্যতামূলক। যেটা লিখিত ভাবে জানানো হয় সব টিমকেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন