আগমন: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে রাঁচীতে চলে এলেন বিরাট কোহালি।
মাথায় নীল টুপি। কালো টি শার্ট। কানে ইয়ার ফোন। পিঠে ও হাতে দু’দুটো ব্যাগ নিয়ে পাঁচটা পনেরো নাগাদ বিরাট কোহালি যখন রাঁচীর বিরসা মুণ্ডা এয়ারপোর্ট থেকে বেরোচ্ছেন, তখন ‘কোহালি-কোহালি’ আওয়াজে কান পাতা দায়। বিরাটদের বিমান নামার একটু আগেই আধঘন্টার ওপর ঝেঁপে বৃষ্টি হয়েছে রাঁচীতে। কিন্তু বৃষ্টি বিরাটের ভক্তদের দমাতে পারেনি। বিমানবন্দরে বিরাট কোহালির ভক্তদের উন্মাদনা দেখে বিমানবন্দরের কর্মরত এক পুলিশ অফিসার মুচকি হেসে বললেন, ‘‘বিমানবন্দরে এই উন্মাদনা শুধু দেখা যায় ধোনি নামলে। ধোনির শহরে কোহালি রীতিমতো জনপ্রিয়তায় ভাগ বসাচ্ছেন।’’
শুধু বিমানবন্দরেই নয়, রাঁচী মেন রোডের যে পাঁচতারা হোটেলে টিম ইন্ডিয়া উঠেছে, সেই হোটেলের সামনেও ভিড় জমে গিয়েছিল কোহালিকে দেখতে। হোটেলের ঠিক উল্টোদিকেই পানের দোকান রয়েছে শানু নামে এক যুবকের। বিরাটের ভক্ত বলেন, ‘‘গতকাল রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ অষ্ট্রেলিয়ার কয়েকজন ক্রিকেটারকে হোটেলের সামনে রাস্তায় ঘুরতে দেখেছি।’’ শানুর আফসোস, ‘‘এত বছর ধরে দোকান রয়েছে হোটেলের উল্টোদিকে। কোনওদিন ভারতীয় ক্রিকেটারদের দেখিনি রাতে রাস্তায় ঘুরতে। তবু আজ একটু বেশি রাত পর্যন্ত দোকান খুলে রাখব। যদি কোহালিকে দেখা যায়।’’
তারকা: রাঁচীতে ভারতের অন্যতম ভরসা হার্দিক।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোহালিরা এসে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই হোটেলে চলে আসেন ঘরের ছেলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। শোনা যাচ্ছে, তাঁর নতুন রিং রোডের বাড়িতে রাতে ডিনার পার্টি দিয়েছেন। নানা ব্যস্ততার মাঝে ধোনি একবার শুধু স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন জিম করে গা ঘামাতে।
বিকেলের বিমানে কোহালিরা পৌঁছালেও দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে দফায় দফায় এসেছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। সকাল সাড়ে বারোটার বিমানে আশিস নেহরা, যশপ্রীত বুমরারা চলে আসায় তাঁরা বিকেলে জেএসসিএ স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে যান। কিন্তু বৃষ্টি এসে যাওয়ায় আর অনুশীলন করা যায়নি। জেএসসিএ-র সচিব দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আগামিকাল সকালে ইন্ডিয়া টিমের অনুশীলন করার কথা। বিকেলে করবে অষ্ট্রেলিয়া।’’
তবে ভারতীয় দল এখনও একবারও রাঁচীর মাঠে না নামলেও অস্ট্রেলিয়া কিন্তু রীতিমতো টানা দু’দিন ধরে দু’বেলা অনুশীলন করল। টি-টোয়েন্টি সিরিজে নতুন এক পেসারকে খেলানোর কথা ভাবছে অস্ট্রেলিয়া। তিনি হলেন বাঁ-হাতি পেসার জেসন বেহরেনডর্ফ। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি অস্ট্রেলীয় নির্বাচকদের নজরে আছেন। জেমস প্যাটিনসন, জ্যাকসন বার্ডরা চোট পেয়ে যাওয়ায় জেসনের রাস্তাটা আরও পরিষ্কার হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই বাঁ-হাতি পেসার বলে যান, ‘‘চোট পাওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। তবে আমি এখন শুধুই ভারতীয় চ্যালেঞ্জ আর আমার অভিষেক নিয়ে ভাবছি।’’
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ মূল মাঠের পাশে ওভাল গ্রাউন্ডে স্থানীয় বোলারদের ডেকে লম্বা লম্বা ছ’য় মারার সময় কাঁধে সামান্য চোটও পান। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় রাঁচীর সরকারি হাসপাতাল রিমসের কাছে একটি ডায়াগোনাস্টিক সেন্টারে। সেখানে তাঁর কাঁধের এমআরআই হয়। কাঁধ ও হাতের নড়াচড়া ঠিকমতো হচ্ছে কি না সেটাও দেখেন দু’ই চিকিৎসক। পরে অস্ট্রেলিয়ার দলের তরফ থেকে জানানো হয় স্মিথ পুরো ফিট। পরীক্ষায় কোনও অস্বাভাবিক কিছু পাননি চিকিৎসকরা।
ছবি: পিটিআই।