আইজলে খেতাবি যুদ্ধের দামামা

আমাদের শেষ ম্যাচ এটাই, বলে দিলেন সনি

শুক্রবার দুপুর পৌনে দু’টো নাগাদ অনুশীলনে যাওয়ার জন্য মোহনবাগানের ফুটবলাররা টিম হোটেলের সামনে দাঁড়ানো বাসে উঠে পড়েছেন। কিন্তু সনি নর্দে দেখা নেই। কোথায় গেলেন হাইতি তারকা?

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

আইজল শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:০৩
Share:

লক্ষ্য: তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে চান সনি। ছবি: শুভজিৎ মজুমদার।

শুক্রবার দুপুর পৌনে দু’টো নাগাদ অনুশীলনে যাওয়ার জন্য মোহনবাগানের ফুটবলাররা টিম হোটেলের সামনে দাঁড়ানো বাসে উঠে পড়েছেন। কিন্তু সনি নর্দে দেখা নেই। কোথায় গেলেন হাইতি তারকা?

Advertisement

সবুজ-মেরুনের সেরা অস্ত্র লবিতে নামলেন মিনিট দশেক পরে। হাতে নীল রংয়ের বালতি! দেখেই চমকে উঠলেন সহ সচিব-সহ শুক্রবারই আইজল পৌঁছে যাওয়া মোহনবাগান সমর্থকরা। রীতিমতো আর্তনাদের মতো শোনাল সহ সচিবের গলা। সনি-কে তিনি বললেন, ‘‘তুমি এটা নিয়েছো কেন?’’ কিন্তু ভ্রুক্ষেপই করলেন না সনি। গটগট করে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে গেলেন। টিম বাসে সকলে উঠেছে কি না দেখার পরেই নিজে উঠলেন।

একই ছবি দেখা গেল রাজীব গাঁধী স্টেডিয়ামেও। এদুয়ার্দো পেরেইরা-সৌভিক চক্রবর্তীরা মাঠে নামার পরেই হাইতি তারকা বেরলেন ড্রেসিংরুম থেকে। সনি শুধু মোহনবাগানের সেরা অস্ত্রই নন। মেন্টরও। এক দিকে যেমন আগলে রাখেন আজহারউদ্দিন মল্লিক, পিন্টু মাহাতোর মতো জুনিয়রদের। অন্য দিকে কার কোথায় সমস্যা হচ্ছে সারাক্ষণ তার খোঁজও নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়। সতীর্থদের উদ্বুদ্ধ করতে নিজেই ৫০ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছেন।

Advertisement

অধিনায়ক না হয়েও সনি-ই আসল নেতা।

দ্বিতীয় আই লিগ খেতাবের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও তাই অক্লেশে তিনি বলতে পারেন, ‘‘আমার কোনও ব্যক্তিগত লক্ষ্য নেই। মোহনবাগান জিতলেই খুশি।’’

মাঠের ভিতরেও নেতা সনি। শুক্রবার দুপুরে আইজল-বধের শেষ মহড়ায় বারবার কোচের সঙ্গে আলোচনা করলেন। প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে হলে যে শুরু থেকেই প্রেসিং ফুটবল খেলতে হবে বোঝালেন বলবন্ত সিংহ, শেহনাজ হোসেন-দের।

এই মুহূর্ত যা পরিস্থিতি তাতে শনিবার জিতলেই চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান। কিন্তু ড্র করলেও খেতাবের স্বপ্ন বেঁচে থাকবে। সে ক্ষেত্রে রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে শেষ ম্যাচে চেন্নাই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে জিততে হবে। কিন্তু সনি জানিয়ে দিলেন, তাঁর কাছে আই লিগ শনিবারই শেষ হয়ে যাচ্ছে! বললেন, ‘‘এটাই আমাদের কাছে শেষ ম্যাচ।’’ তার পরেই হুঙ্কার, ‘‘আমরা এখানে এক পয়েন্ট পাওয়ার জন্য আসিনি। জিততে এসেছি।’’

ঘরের মাঠে চলতি আই লিগে আইজল এফসি এখনও পর্যন্ত একটাও ম্যাচ হারেনি। খালিদ জামিলের দলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নিয়ে যে সনি-ও চিন্তিত তা গোপন করলেন না। বললেন, ‘‘আইজল দারুণ খেলছে। এই ম্যাচটা একেবারেই সহজ হবে না। তাই সামান্যতম সুযোগও হাতছাড়া করলে চলবে না। আমাদের রক্ষণ মজবুত করে গোলের জন্য ঝাঁপাতে হবে।’’

হাইতি তারকার দ্বিতীয় চিন্তা রাজীব গাঁধী স্টেডিয়ামের কৃত্রিম ঘাসের মাঠ। বললেন, ‘‘টার্ফে খেলতে আমি কখনও পছন্দ করি না। এই কারণেই কোচ হাল্কা প্র্যাকটিস করিয়েছেন। যদিও শিলংয়ের চেয়ে এই টার্ফের মান ভাল।’’

তবে একেবারেই উদ্বিগ্ন নন আইজল সমর্থকদের নিয়ে। বললেন, ‘‘রিয়াল মাদ্রিদ যখন অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে যায়, তখনও প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকরা বিভিন্ন ভাবে চাপে ফেলার চেষ্টা করে। সোজা কথা হচ্ছে, আমাদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে হবে। বাইরে কী হচ্ছে তা নিয়ে ভেবে লাভ নেই।’’ কোচের সুরেই যোগ করলেন, ‘‘ঘরের মাঠে কিন্তু চাপ ওদেরই বেশি থাকবে।’’ শুক্রবার আইজল কোচ খালিদ জামিল অনুশীলনের পর স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরমে ফুটবলারদের নিয়ে মোহনবাগান ম্যাচের ভিডিও দেখতে বসেছিলেন। সূত্রের খবর, সনি-র ছন্দ নষ্ট করে দেওয়াই তাঁর প্রধান স্ট্র্যাটেজি। দু’বছর আগে বেঙ্গালুরুতেও সুনীল ছেত্রীদের প্রাক্তন কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউডের একই ছক ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন