জিকো বনাম মলিনা। আজ যুদ্ধ।
কলকাতাকে দেখেই কি ফের পুরনো কথা মনে পড়ে গেল জিকোর!
শহরে এসে রেফারিকে বেজায় গালমন্দ করে ফিরেছিলেন এফসি গোয়া কোচ। সঙ্গে অবশ্য কিংবদন্তি ব্রাজিলীয় এটিকে ম্যাচ ড্র করে নিয়ে গিয়েছিলেন এ বারের আইএসএলে তাঁর দলের প্রথম পয়েন্টও।
বৃহস্পতিবার মারগাওতে সেই কলকাতা-গোয়ার ফিরতি লড়াই। এ বার ম্যাচের আগেই জিকোর মুখে রেফারি! জিকো সাংবাদিক সম্মেলনে বুধবার বলেছেন, ‘‘রেফারির ভুলের অনেক খেসারত দিতে হয়েছে আমাদের। এর সঙ্গে টিমের গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ারদের চোট-আঘাত। না হলে ভাল জায়গায় থাকতাম আমরা।’’
সেমিফাইনালে উঠতে দু’দলের কাছেই মারগাওয়ের ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। আটলেটিকো দে কলকাতা এগারো রাউন্ডের পর ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকলেও সেমিফাইনালে যেতে গেলে জিকোর দলের বিরুদ্ধে জিততেই হবে। কারণ, এই মুহূর্তে লিগ টেবলে ১৪ থেকে ১৫, মাত্র এক পয়েন্টের ব্যবধানে রয়েছে আটটার মধ্যে পাঁচটা দল। একটা জয়ই তাই বদলে দিতে পারে লিগ টেবলের ছবিটা। গোয়ার অবশ্য দরকার তাদের শেষ তিন ম্যাচে জয়। এগারো ম্যাচে গোয়ার পয়েন্ট ১১। কিন্তু যা পরিস্থিতি তাতে তিনটে ম্যাচ জিতলেও সেমিফাইনালের টিকিট না জুটতে পারে গোয়ার। সতর্ক জিকো তাই বলেছেন, ‘‘আমার ছেলেরা জানে পরিস্থিতিটা এখন কী। তাই এই ম্যাচে আমাদের প্রধান অস্ত্র কাউন্টার অ্যাটাক। কলকাতাকে হারাতেই হবে।’’
জিকোর হুঙ্কার শুনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এটিকে ফুটবলার এ দিন বেশ সতর্ক। গোয়া থেকে ফোনে জানালেন, তিন বছরে এক বারও এটিকে-কে হারাতে পারেনি জিকোর গোয়া। তবে এ বার ঘরের মাঠে তারা নাকি মরিয়া। জিকো মুখে কাউন্টার অ্যাটাকের কথা বললেও অলআউট আক্রমণে এলে অবাক হওয়ার নেই।
জিকোর বিরুদ্ধে কলকাতার নতুন স্প্যানিশ কোচ জোসে মলিনার ছক কী আজ? শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ানের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও তাঁর ডিফেন্সিভ স্ট্র্যাটেজির জেরে ড্র করা নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে কলকাতার ফুটবলমহলে। প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, তিনি কতটা সাহসী কোচ তা নিয়ে। কিন্তু গোয়া ম্যাচের আগে মলিনার জন্য ভাল খবর রয়েছে তাঁর ড্রেসিংরুমে। নিজেই এ দিন বলেছেন, ‘‘হিউম ফিট হয়ে গিয়েছে। সেরেনো ফিট। দ্যুতিও আজ প্র্যাকটিস করল। আমাদের তিন পয়েন্ট নিয়ে কলকাতা ফিরতেই হবে।’’ যদিও মলিনার মতোই জিকো কলকাতার বিরুদ্ধে পুরো দল পাচ্ছেন। কার্ড আর চোট সমস্যা সারিয়ে বৃহস্পতিবার গোয়া দলে ফিরছেন লুসিয়ানো, আর্নোলিন, জোফ্রে। জিকো তাই বলেছেন, ‘‘আমাদের নতুন করে শুরু করতে হবে এই ম্যাচ থেকেই।’’
আইএসএলে কলকাতা-গোয়া মুখোমুখি হলেই ঘটনার কমতি থাকে না। ফিকরু, বলজিতের সঙ্গে আর্নোলিনের মাথা ঠোকাঠুকি করে রক্তাক্ত হওয়া। প্রাক্তন কলকাতা কোচ হাবাসের সঙ্গে জিকোর মুখ দেখাদেখি কার্যত বন্ধ হওয়া— সব এই ম্যাচে। এ বারও চড়া মেজাজের প্রথম পর্বের ম্যাচে দু’দলের দুই ফুটবলারকে মার্চিং অর্ডার দিয়ে বার করে দিয়েছিলেন মেক্সিকান রেফারি। কাজেই মারগাওতে দুই কোচের মগজাস্ত্রের ঝনঝনানি ছাড়াও থাকবে ব্যক্তিগত ডুয়েল। টুর্নামেন্টে তিন গোল করা গোয়া স্ট্রাইকার রাফায়েল কোয়েলহো বনাম এটিকে ডিফেন্ডার অর্ণব মণ্ডল। মাঝমাঠে গোয়ার রিকার্লিসন বনাম কলকাতার বোরহা।
জিকো অবশ্য এ সবের থেকেও পস্তিগা-ফ্যাক্টর নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন। কলকাতার মার্কি রবীন্দ্র সরোবরে খেলেননি আনফিট থাকায়। কিন্তু গোয়ায় খেলবেন। মাঠে ফিরে দু’টো গোল যেমন করেছেন, তেমনই বাড়িয়েছেন দু’টো গোলের পাস। জিকোর মুখে তাই শোনা গিয়েছে, ‘‘পস্টিগা বেশ ভাল খেলছে। ওকে ফ্রি খেলতে দেওয়া যাবে না।’’
না হারলেও শেষ চারটে গোয়া ম্যাচ জিততেও পারেনি কলকাতা। আর মলিনার কলকাতা তো ড্র করতে করতেই এগোচ্ছে আপাতত। বৃহস্পতিবার তাই এক ঢিলে দুই পাখি মারা টার্গেট এটিকের। মলিনাও বলছেন, ‘‘তিন পয়েন্টের জন্যই তো মাঠে নামি। এ বার গোয়াকে হারাতেই হবে। আমাদের জয়ে ফিরতে হবে আইএসএলে।’’
বৃহস্পতিবারে
আইএসএল— এটিকে : এফসি গোয়া (মারগাও, ৭-০০)