ফাইনালে উঠতে রোনাল্ডোর চাই ‘সিকিওরিটি গার্ড’

এ বারের ইউরোয় প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠলেও এই পর্তুগাল টিমকে যত দেখছি ততই হতাশায় ভুগছি। পর্তুগাল মানে অনেকটা ব্যক্তি নির্ভর টিম। যেমন ইউসেবিওর সময়। তার পরে লুইস ফিগোর আমলে।

Advertisement

দীপেন্দু বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৬ ০৩:৫৪
Share:

এ বারের ইউরোয় প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠলেও এই পর্তুগাল টিমকে যত দেখছি ততই হতাশায় ভুগছি।

Advertisement

পর্তুগাল মানে অনেকটা ব্যক্তি নির্ভর টিম। যেমন ইউসেবিওর সময়। তার পরে লুইস ফিগোর আমলে। এখন রোনাল্ডোর যুগেও দেখছি। তা সত্ত্বেও অবাক লাগছে এ বারের ইউরোর পর্তুগালকে দেখে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ভাবতে পারিনি, এই টিমটা ব্যক্তি নির্ভরতার সঙ্গে সঙ্গে এতটা ভাগ্যে নির্ভরশীলও হয়ে উঠবে। ইউরোর শেষ চারে জায়গা পাকা করে নিল ঠিকই। তবু একটা ম্যাচও হলফ করে বলতে পারব না যে, রোনাল্ডো নিজের দাপটে ম্যাচ জিতিয়েছেন। উল্টে দলের সবচেয়ে বড় ভরসা হয়েও চূড়ান্ত ব্যর্থ তিনি। হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ইউরোর সেরা গোলটা রোনাল্ডোই করেছেন, জেনেও বলছি।

যদি পারফরম্যান্সই বিচার্য হয়, তা হলে আমি বলব পর্তুগালের চাকা সেমিফাইনালেই থেমে যেতে পারে। কেন না এই টিমের সবচেয়ে বড় শক্তি রোনাল্ডো আবার দুর্বলতাও রোনাল্ডো। গোটা টিম তাঁর দিকেই তাকিয়ে। আর তিনি? এখনও পর্যন্ত যা খেলেছেন, তাতে তাঁর দল কোয়ার্টার টপকেছে সেটাই মনে হচ্ছে অনেক। এ সব টিমে এমনিতেই অ্যাঙ্করের ভূমিকা পালন করার লোক থাকে না। তার উপর যদি রোনাল্ডোর মতো মহাতারকা ব্যর্থ হন, টিমের শিরদাঁড়াই ভেঙে যায়।

Advertisement

তবে আমি পর্তুগালকে একেবারে ছেঁটে ফেলছি না। ভাগ্যের এপিসোড বাদ দিলে এই টিমে দু’টো বদল অবিলম্বে করা উচিত। রোনাল্ডো যখন চাপ নিতে পারছেন না, তখন মাঝমাঠে কার্ভালহো আর জোয়াও মারিওকে বাড়তি দায়িত্ব দিতে হবে। পোল্যান্ডকে যে পর্তুগাল আর গোল করতে দেয়নি সেই কৃতিত্ব প্রাপ্য হোল্ডিং মিডিও কার্ভালহোর। গোল শোধের পরেই পর্তুগিজরা তাঁকে ব্যাক ফোরের সামনে দাঁড় করিয়ে সামনের পাঁচ জনকে শাফল করাচ্ছিল বিভিন্ন স্পেলে। পর্তুগিজদের এই স্ট্র্যাটেজি সামাল দিতে পারেনি পোল্যান্ড। কিন্তু কার্ভালহো-ই যে কার্ড সমস্যায় সেমিফাইনালে নেই!

তাই পর্তুগাল কোচকে এ বার নতুন কার্ভালহোর খোঁজ করতে হবে। যিনি মারিওর সঙ্গে শুধু মাঝমাঠ থেকে বল তৈরি করবেন না, ইতালির কিয়েলিনির মতো উঠে গিয়ে গোলও করবেন। ঠিক যেমন স্পেনের বিরুদ্ধে গোল করে পেল্লের চাপ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছিলেন কিয়েলিনি। সে রকমই কোনও এক জন ফুটবলারকে সেমিফাইনালের আগে তৈরি রাখতে হবে ফার্নান্দো সান্তোসকে। শেষ চার ম্যাচে চার রকম ফর্মেশনে দলকে খেলিয়েছেন। সেটা কি রোনাল্ডোর ব্যর্থতা ঢাকতে? না, নিজের উপর আত্মবিশ্বাসের অভাবে? আর এখানেই সেমিফাইনালে পর্তুগাল কোচের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।

পর্তুগালকে ইউরো জিততে হলে এখন রোনাল্ডোর জন্য ‘সিকিওরিটি গার্ড’ রাখতে হবে। যাঁরা শুধু তারকা সতীর্থকে দেখলেই পাস দেবেন না, নিজেরাও কোনও কিছু না ভেবে গোলে শট নেবেন। কেন না এখন রোনাল্ডোর আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানিতে। সেই কবর থেকে যত দিন না তিনি বেরোচ্ছেন, তত দিন নানি-স্যাঞ্চেজদেরও বাড়তি সাহস দেখাতে হবে। তাতে গোলের সুযোগও তৈরি হবে, রোনাল্ডোর উপরও বাড়তি চাপ পড়বে না।

তবে এ সবের পরেও বলছি, রোনাল্ডোর মতো ফুটবলারকে বেশি দিন দাবিয়ে রাখা যায় না। বড় ফুটবলাররা বড় ম্যাচেই জ্বলে ওঠেন। কে বলতে পারে, সেটা সেমিফাইনাল আর ফাইনাল হবে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন