বোল্টকে বৃহস্পতিবার বিধ্বংসী মেজাজে দেখা গেল।
একাই পাঁচ উইকেট নিয়ে ভারতীয় ব্যাটিংকে ধ্বংস করে ট্রেন্ট বোল্ট সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘‘বল সুইং করলে কিন্তু আমি অন্য বোলার হয়ে যাই।’’
বৃহস্পতিবার হ্যামিল্টনের সেডন পার্কের পরিবেশে বল যে ভাবে সুইং করছিল, তাকে কাজে লাগিয়ে সত্যিই অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন নিউজ়িল্যান্ডের পেসার। ভারতের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে ৩৩ রানের মধ্যে ফিরিয়ে দেন বাঁ হাতি পেসার। পরে কেদার যাদব ও হার্দিক পাণ্ড্যকেও আউট করেন ২৯ বছর বয়সি বাঁহাতি পেসার। আগের তিন ম্যাচে যিনি চারটির বেশি উইকেট পাননি, সেই বোল্টকে বৃহস্পতিবার বিধ্বংসী মেজাজে দেখা যায়। টানা দশ ওভার বল করে ২১ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চারশোর বেশি উইকেট পাওয়া বোল্ট ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘পরিবেশটাই এমন ছিল যে, হাওয়ায় বল নড়াচড়া করছে দেখেই চনমনে হয়ে উঠি আমি। আসলে বল যখন সুইং করে, তখন আমি একেবারে অন্য বোলার হয়ে উঠি। পরিবেশটা দারুণ ভাবে কাজে লাগাতে পেরে খুশি আমি।’’ ভারত প্রথম তিন ম্যাচ জিতে যাওয়ায় যে হতাশ হয়েছিলেন, তা জানিয়ে বোল্ট বলেন, ‘‘যে ভাবে সিরিজটা শুরু করেছিলাম আমরা, তা খুব হতাশাজনক ছিল। আমরা জানি, আমাদের সফল হওয়ার মতো দক্ষতা বা পরিকল্পনা সবই আছে। সেটা যে অবশেষে প্রমাণ করতে পেরেছি, তা খুবই তৃপ্তিদায়ক।’’
দলে তাঁর নিজের ভূমিকা সম্পর্কে বোল্ট বলেন, ‘‘ওপেনিং বোলার হিসেবে আমার কাজ হল দলের বোলারদের নেতৃত্ব দেওয়া। এটা করে দেখানোর একটা তাগিদ তো ছিলই, ব্যাটসম্যানদেরও অনেক ভুল শোধরানোর ছিল। ফিল্ডিংয়ে আরও নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন ছিল। সব কিছু শুধরে জয়ে ফেরাটা তাই আনন্দের। দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়ালাম আমরা।’’
বিরাট কোহালির অনুপস্থিতিকে যে তাঁরা কাজে লাগিয়েছেন, তা স্বীকার করেই নেন বোল্ট। বলেন, ‘‘কোহালির মতো একজন জাত ক্রিকেটারের অভাব নিশ্চয়ই টের পেয়েছে ওরা। শুরুর দিকে ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছিলাম আমরা। সেই পরিকল্পনায় সফল হওয়ার পরে আমরা মাঝের ব্যাটসম্যানদের দিকে তাকাই। সব ম্যাচেই এ রকম নির্দিষ্ট ও নিখুঁত পরিকল্পনা নিয়ে নামি আমরা। কিন্তু সেটা কাজে লাগানোই হল আসল কথা।’’
নিউজ়িল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বোলারদের প্রশংসা করে বলেন, ‘‘ছেলেরা যে একেবারে ঠিক জায়গায় বল রাখতে পেরেছে, এটাই ওদের কৃতিত্ব। আমরা সব ম্যাচেই ওদের শুরুতে ধাক্কা দিতে চেয়েছি। সেটা করতে পারাটা অবশ্যই বড় ব্যাপার। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সুইংয়ে ঘায়েল করার পরিকল্পনা আমাদের আগেও ছিল। এই অস্ত্রেই ওদের কাবু করার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে সেটা দারুণ ভাবে করতে পেরেছি।’’ যোগ করেন, ‘‘ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে ভাল খেলেই তো একটা দল ক্রমশ উন্নতি করতে পারে। আমরা সেই সুযোগটাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাই।’’ তবে উইকেট তাঁদের এতটা সাহায্য করবে, তা যে তিনি ভাবতে পারেননি, এটাও জানাতে ভোলেননি উইলিয়ামসন।