বাংলার নেতৃত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত ক্ষুব্ধ মনোজের

সোমবার কলকাতাতেই ছিল জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলীর সভা। সেখানেই ছ’টি দল হয় এবং বাংলা থেকে সুযোগ পান সব মিলিয়ে মাত্র ছ’জন। উপেক্ষিত বাংলার অধিনায়ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৪:২৮
Share:

উপেক্ষিত: মঙ্গলবার সিএবি-তে মনোজ। হাতে ইস্তফাপত্র। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

কলকাতায় বসে নির্বাচকেরা ছ’টি দল গড়েছেন। প্রায় আশি জন ক্রিকেটারকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে নাম নেই তাঁর। বাংলার প্রশাসকেরা সকলে তার পরেও চুপচাপ বসে আছেন। অপমানিত, ক্ষুব্ধ মনোজ তিওয়ারি বাংলার অধিনায়কের পদই ছেড়ে দেবেন বলে মনস্থ করে ফেললেন।

Advertisement

সোমবার কলকাতাতেই ছিল জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলীর সভা। সেখানেই ছ’টি দল হয় এবং বাংলা থেকে সুযোগ পান সব মিলিয়ে মাত্র ছ’জন। উপেক্ষিত বাংলার অধিনায়ক। রাতে সেই খবর পাওয়ার পর থেকেই সম্ভবত চরম সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিএবি-তে গিয়ে তিনি দেখা করেন যুগ্ম-সচিব অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে। প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন না। অভিষেককেই তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানান মনোজ। বলে দেন, তিনি আর বাংলার অধিনায়কত্ব করতে চান না। পদত্যাগের চিঠিও নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

যদিও সিএবি যুগ্ম-সচিব অধিনায়ককে বোঝানোর চেষ্টা করে যান যে, এমন কোনও চরম সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভাল। অভিষেক তাঁকে বলেন, তাঁরা কথা বলবেন বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে। কথা বলবেন নির্বাচকমণ্ডলীতে। কিন্তু মনে হয় না সেই বোঝানোতে বরফ গলবে বলে। অতীতে এমন আশ্বাস অনেক বার দিয়েও কথা রাখেননি বাংলার কর্তারা। তাই তাঁদের নিয়ে এ বার যথেষ্টই ক্ষোভ জমা হতে শুরু করেছে ক্রিকেটারদের মনে। মনোজের মতো অশোক ডিন্ডাও পারফরম্যান্স করার পরে ব্রাত্য থেকে গিয়েছেন। প্রত্যেক বছর রঞ্জি ট্রফি বা ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় উইকেটশিকারীদের তালিকায় প্রথম তিনের মধ্যে থাকেন ডিন্ডা। তবু তাঁকে ভারতীয় ‘এ’ বা ‘বি’ দলে সুযোগ দেওয়া হয় না। তাঁর চেয়ে অনেক কম উইকেট পেয়েও দরজা খুলে যায় অঙ্কিত রাজপুতদের জন্য। সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেছেন স্বয়ং রাহুল দ্রাবিড়। ‘এ’ দলে অল্প যে কয়েকটি সুযোগ পেয়েছেন, খুব খারাপ করেননি সুদীপ। হঠাৎই তাঁকে ছেঁটে ফেলা হল। জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলীতে পূর্বাঞ্চল প্রতিনিধির মুখে কোনও কথা নেই এ নিয়ে। সিএবি কর্তারা চুপচাপ হাত গুটিয়ে বসে। অতীতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে যখন জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, প্রতিবাদে বোর্ডের কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছেন বাংলার ক্রিকেট কর্তারা। সে রকম কোনও চরম হুঁশিয়ারি এখনকার সিএবি কর্তাদের দিক থেকে নেই।

Advertisement

ক্ষোভের আগুন ধিকি ধিকি জ্বলতে জ্বলতে এখন ফেটে বেরনোর উপক্রম হয়েছে। বাংলার অধিনায়কত্ব আর করতেই চান না মনোজ। জানিয়ে দিয়েছেন যুগ্ম-সচিবকে যে, নির্বাচিত হলে বাংলার হয়ে খেলতে প্রস্তুত, কিন্তু নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন করতে চান না। সৌরভ নিজে এ দিন ছিলেন না। তিনি বোঝাতে চাইলে মনোজের ভাবান্তর হয় কি না, দেখার। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত যা ইঙ্গিত, মনোজের মনোভাবে বদল হওয়া কঠিন। আজ, বুধবারেই প্রাথমিক দল বাছা হতে পারে বাংলার। সেই সভায় অধিনায়ক হিসেবে কে থাকবেন, তা নিয়ে যথেষ্ট বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। মনোজ থাকবেন কি না, তা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা রয়েছে। যুগ্ম-সচিব অনুরোধ করলেও রাত পর্যন্ত তিনি তাতে সাড়া দিতে নারাজ।

নির্বাচনী সভায় পূর্বাঞ্চল প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন বাংলারই প্রাক্তন ক্রিকেটার দেবাঙ্গ গাঁধী। তাঁকে নিয়ে এমনিতেই ক্ষোভ রয়েছে বাংলার ক্রিকেটার মহলে যে, তিনি সভায় গিয়ে অন্যদের কথাই শুনছেন বেশি, নিজেদের কথা বলছেন কম। মনোজ তিওয়ারির দলীপ ট্রফির তিনটি দলের কোনওটাতে সুযোগ না পাওয়া সেই অভিযোগকেই আরও উস্কে দিচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন