ভারতীয় হকির বিরল দৃশ্য

গভীর রাতেও বিমানবন্দরে সর্দারদের জন্য ভাংড়া নাচ

চিন, জাপান, কোরিয়ার সমকক্ষ এশীয় ক্রীড়াশক্তি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ইনচিওনে গিয়ে বাইশ ইভেন্টে পাঁচশোরও অধিক ক্রীড়াবিদপুষ্ট ভারতের সংগ্রহ ১১ সোনা-সহ ৫৭ পদক। যা চার বছর আগে গুয়াঝৌ গেমসের চেয়েও আটটি কম। সোনাও কম তিনটি। যেখানে চিনের ঝুলিতে ১৫১ সোনা-সহ ৩৪২ পদক। উদ্যোক্তা দক্ষিণ কোরিয়ার ২৩৪ পদকের মধ্যে সোনা ৭৯টি। জাপানও ৪৭ সোনা-সহ জিতেছে ২০০ পদক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩৭
Share:

পাকিস্তানকে হারিয়ে সোনা তুলে। ছবি: পিটিআই

চিন, জাপান, কোরিয়ার সমকক্ষ এশীয় ক্রীড়াশক্তি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ইনচিওনে গিয়ে বাইশ ইভেন্টে পাঁচশোরও অধিক ক্রীড়াবিদপুষ্ট ভারতের সংগ্রহ ১১ সোনা-সহ ৫৭ পদক। যা চার বছর আগে গুয়াঝৌ গেমসের চেয়েও আটটি কম। সোনাও কম তিনটি। যেখানে চিনের ঝুলিতে ১৫১ সোনা-সহ ৩৪২ পদক। উদ্যোক্তা দক্ষিণ কোরিয়ার ২৩৪ পদকের মধ্যে সোনা ৭৯টি। জাপানও ৪৭ সোনা-সহ জিতেছে ২০০ পদক। পদক তালিকায় বেশ পিছনে, আট নম্বরে থাকা ভারত তা সত্ত্বেও ১৭তম এশিয়ান গেমসে একটা ইভেন্টে ঐতিহাসিক কীর্তি গড়ে হইচই ফেলে দিয়েছে। সেটা পুরুষদের হকি!

Advertisement

ষোলো বছর পর এশিয়াড হকির সোনা আবার ভারতের। এই নিয়ে এশিয়াডে ভারতের মাত্র তৃতীয় হকি সোনা। যা ২০১৬ রিও অলিম্পিকের হকিতে যোগদানের দরজা সরাসরি খুলে দিয়েছে সর্দার সিংহের দলের জন্য। মহাত্মা গাঁধীর জন্মদিনে ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে পেনাল্টি শু্যট-আউটে ৪-২ গোলে হারিয়ে ভারত সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক হকিতে তার স্মরণীয়তম জয়টি তুলে নেয়।

বিজয়া দশমীর গভীর রাতে দিল্লি বিমানবন্দরে এশিয়াড সোনাজয়ী ভারতীয় হকি দল ফিরলে ওই সময়েও শত শত হকিপ্রেমী মহানন্দে ভাংড়া নাচতে নাচতে সেখানেই সর্দার সিংহদের অভ্যর্থনা জানান। অত রাতেও বিমানবন্দরে ফুলের মালা হাতে জাতীয় দলকে বরণ করতে উপস্থিত ছিলেন হকি ইন্ডিয়া-র শীর্ষ কর্তারা। যা ইদানীং কালে ভারতীয় হকির ক্ষেত্রে বিরল দৃশ্য। আপ্লুত জাতীয় দলের অস্ট্রেলীয় কোচ টেরি ওয়ালশ বলে দেন, “এটা ভারতের মতো সুপ্রাচীন হকি-ঐতিহ্যের দেশের পক্ষেও একটা বিরাট মুহূর্ত। ভারতীয় হকির আজ এক স্মরণীয় দিন।” অধিনায়ক সর্দার সিংহের কথায়, “এশিয়াড সোনা জয় আমার জীবনের বৃহত্তম ঘটনা।”

Advertisement

ফাইনালে তিন মিনিটের মধ্যে রিজওয়ান মহম্মদের গোলে পাকিস্তান ১-০ এগোলেও দ্বিতীয় কোয়ার্টারের বারো মিনিটে গুরবাজ সিংহের পাস পাক ডি-এর ভেতর ডিফেন্ডারদের বুটের জঙ্গলের মধ্যেও ধরে কোঠাজিৎ সিংহ কোনাকুনি হিটে ১-১ করেন। নির্ধারিত ৬০ মিনিট শেষে ওই স্কোরলাইন থাকায় অবশেষে পেনাল্টি শু্যট-আউটে ভারত তিনটি আর পাকিস্তান একটি মাত্র গোল করে। টাইব্রেকারে ভারতীয় গোলকিপার শ্রীজেস যেমন পাকিস্তানের হাসিম খান ও মহম্মদ উমরের পেনাল্টি স্ট্রোক বাঁচিয়ে মহানায়ক হয়ে ওঠেন, তেমনই নির্ণায়ক পেনাল্টি শু্যটে ভারতের ধরমবীর সিংহ স্নায়ু ঠান্ডা রেখে বল পেনাল্টি স্পট থেকে সরাসরি হিট না করে, তরতর করে এগিয়ে পাক গোলকিপারকে ড্রিবল করে উল্টো দিকে ফেলে দিয়ে জয়ের গোল করেন। তার পরেই গোটা ভারতীয় হকি দল উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়ে জাতীয় তেরঙ্গা নিয়ে স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ শুরু করে দেয়।

সর্দারদের বিদেশি কোচ অবশ্য বাস্তবের মাটিতে পা রেখে বলে দেন, “আট মাসের পরিশ্রম ও পরিকল্পনার ফসল এটা। এ বার লক্ষ্য অলিম্পিক সোনা। তার জন্য দু’বছর পরিশ্রম আর পরিকল্পনার সুযোগ আছে। এশীয় সেরা হওয়াটা গ্রেট। তবে ছেলেদের এখনও অনেক দূর যেতে হবে বিশ্বসেরা হতে গেলে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন