আর শুনানি নয়। বিসিসিআই মামলায় এ বার রায় দেবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তবে বৃহস্পতিবার সেই রায় দিলেন না প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর ও বিচারপতি ইব্রাহিম কলিফুল্লাহ। কবে দেবেন, তাও এ দিন জানানো হয়নি। তবে বিচারপতি কলিফুল্লাহ যেহেতু ২১ জুলাই অবসর নিতে চলেছেন, তাই ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, তার আগেই এই মামলার রায় বেরবে।
ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ রয়েছে যাদের রিপোর্টে, সেই সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত লোঢা কমিটির কয়েকটি সুপারিশ বাস্তবসম্মত নয় বলে আদালতকে জানায় বোর্ড ও তার কয়েকটি অনুমোদিত সংস্থা। এই নিয়ে বোর্ডের আইনজীবীর যুক্তি ও পাল্টা যুক্তিতে ঝড় ওঠে কোর্টরুমে। এমনকী প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুরের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানানো হয় বিচারকদের কাছে।
বোর্ডের আইনজীবী কেকে বেণুগোপাল প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে সওয়াল করেন। তিনি জানান কমিটির বেশির ভাগ সুপারিশই বোর্ড মেনে নিতে রাজি। তবে ছ-সাতটি সুপারিশ ছাড়া। গত শুনানিতে আদালত একজন সহযোগী (অ্যামিকাস কিউরি) নিয়োগ করেছিল এই মামলায়। সেই গোপাল সুব্রহ্মণ্যম পাল্টা বোর্ডের দূর্নীতির বেশ কয়েকটি উদাহরণ দিতে শুরু করলে কোর্টরুমের নাটক জমে ওঠে।
গোয়া ক্রিকেট সংস্থার তিন শীর্ষকর্তার দুর্নীতি ও গ্রেফতারির উদাহরণ তুলে তিনি বলেন, ‘‘এই সংস্থাকে বোর্ড গত পাঁচ বছরে ১৪১ কোটি টাকা দিয়েছে। ক্রিকেট প্রশাসনে যে দুর্নীতি এখনও বহাল রয়েছে, এ তারই প্রমাণ।’’ সৌরাষ্ট্র ও দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কর্তাদের ড্রাইভার, পরিচারক, রাঁধুনি, আত্মীয়-বন্ধুদেরও সংস্থার সদস্য বানানো হয়েছে। ডিডিসিএ-তে ডি ১১, শকুর বস্তি ঠিকানায় ১৪জন সদস্য রয়েছে। অথচ অঞ্চলটি মাত্র ৪৮ বর্গমিটারের!’’ এ রকম ঝুড়ি ঝুড়ি উদাহরণ তাঁদের কাছে রয়েছে বলে জানিয়ে সুব্রহ্মণ্যম দাবি করেন, এ সব বন্ধ করা দরকার।
এই সময়েই বিহার ক্রিকেট সংস্থার কৌঁসুলি নলিনী চিদাম্বরম প্রশ্ন তোলেন, তিন-তিনটি ফৌজদারি মামলা চলছে যাঁর বিরুদ্ধে, সেই অনুরাগ ঠাকুর কী করে বোর্ডের মসনদে বসে রয়েছেন? লোঢা কমিশনের অন্যতম প্রধান সুপারিশই যেখানে চার্জশিট দেওয়া ব্যক্তিদের প্রশাসনের বাইরে রাখার পক্ষে, সেখানে এই ঘটনা কী করে সম্ভব?
এ দিনের পর বিচারপতিরা জানিয়ে দেন, আর কোনও শুনানি হবে না। এ বার রায় দেবেন তাঁরা। শোনা যাচ্ছে, বিচারপতি কলিফুল্লাহ আগামী সপ্তাহে ঈদের ছুটি কাটিয়ে ফিরে তার পরের সপ্তাহে হয়তো রায় দিতে পারেন।