ভারতীয় বক্সিং ফেডারেশনের দলাদলিতে তিতিবিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই আচমকা অ্যামেচার বক্সিং ছেড়ে পেশাদার বক্সিংয়ে ঢুকে পড়লেন তিনি। বলছেন বিজেন্দ্র সিংহ।
মঙ্গলবার একান্ত সাক্ষাৎকারে আনন্দবাজারকে বিজেন্দ্র সিংহ বললেন “ফেডারেশনের অস্বস্তিকর পরিবেশ দেখে আমি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। তিনটে অলিম্পিকে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছি। দেশে বক্সিংয়ের প্রশাসনিক পরিবেশটা ভাল হলে হয়তো আমি রিওতেও যেতাম।’’
এখানেই না থেমে বিজেন্দ্র তাঁর পেশাদার বক্সিংয়ে আগ্রহী হওয়ার কারণ হিসেবে বলছেন, ‘‘ম্যাঞ্চেস্টারে গিয়ে কুইন্সবেরিতে প্রো-বক্সিংয়ের পরিকাঠামো ও পেশাদার কাজকর্ম দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। তখনই ঠিক করে ফেলি পেশাদার বক্সিংয়ে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে। তারপর বাড়িতে কথা বলি। শেষ পর্যন্ত ঠিক করে ফেললাম অলিম্পিক বক্সিংয়ে দেশকে পদক দিয়েছি। এবার পেশাদার বক্সিংয়েও দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই।”
আসন্ন সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ম্যাঞ্চেস্টার অথবা লন্ডনে পেশাদার বক্সিংয়ে প্রথমবার লড়বেন বিজেন্দ্র। তার প্রোমোটার ফ্র্যান্সিস ওয়ারেনও জানাচ্ছেন, সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী বছর সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে ভারতে প্রথমবার বিজেন্দ্রকে লড়তে দেখা যাবে। তাঁর মতে, বিজেন্দ্র খুব খাটিয়ে বক্সার। পরিশ্রমী। তা ছাড়া একরোখা মনোভাবই বিজেন্দ্রকে বাছাই করার পেছনে কাজ করেছে বলে জানান ওয়ারেন।
প্রথম মরসুমে বিজেন্দ্র চার রাউন্ড দিয়ে শুরু করে ছয় ও আট রাউন্ডের মোট ছটি বাউটে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁর প্রোমোটার। সব কিছু ঠিকঠাক চললে প্রথম দু’ বছরের মধ্যেই এশিয়ান টাইটেলের জন্য ফাইট করবেন বিজেন্দ্র। তারপর ধাপে ধাপে তিনি উপরে উঠবেন বলে জানাচ্ছেন ওয়ারেন।
বিজেন্দ্র সম্পর্কে তাঁর ট্রেনার লি বার্ডও বলছেন “পেশাদার সার্কিটে বিজেন্দ্রর ভবিষ্যত্ বেশ উজ্জ্বল। তবে ওর ফুট-ওয়ার্ক বাড়াতে হবে। রিংয়ে স্পিড ও স্ট্রেংথ বাড়াতে ওকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। দু-তিন মাস ট্রেনিং করার পরই ওর ব্যাপারে আরও নির্দিষ্ট মুল্যায়ন করতে পারব আমরা।”
বিজেন্দ্র নিজে কী বলছেন? “অ্যামেচার বক্সিংয়ের থেকে আলাদা প্রো-বক্সিং। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এর জন্য। তবে আমি ছাড়ার পাত্র নই। নিজের সর্বশক্তি দিয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই। বাকিটা আমার ভাগ্য।”
রিও অলিম্পিকে বক্সিংয়ে ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিজেন্দ্রর বক্তব্য, “আমার জায়গায় বিকাশ কৃষ্ণ, সুমিত সাঙ্গওয়ান ও শিব থাপারা রয়েছে। ওদের থেকে রিও অলিম্পিকে ভারত পদক আশা করতেই পারে।”