চ্যাম্পিয়ন: শ্রীলঙ্কাকে তিন টেস্টের সিরিজে ১-০ হারিয়ে ফটোসেশন ভারতীয় দলের। বুধবার। ছবি: পিটিআই
ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট জেতা আটকে গেলেও কীর্তি গড়ার দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেন না বিরাট কোহালি। এ দিন টানা ৯টি সিরিজ জিতে তিনি ধরে ফেললেন অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং-কে। ২০০৫-এর অক্টোবর থেকে ২০০৮-এর জুন পর্যন্ত টানা ৯টি সিরিজ জিতেছিল পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া। কোহালির ভারত ২০১৫ সালের অগস্ট থেকে ২০১৭-র ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সমসংখ্যক সিরিজ জিতে ফেলল।
পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আরও একটা দিক থেকে কোহালির ভারত সমান-সমান। পন্টিংদের ৯টি সিরিজ জয়ের মধ্যে ৬টি ছিল নিজেদের দেশে। ৩টি বিদেশে। কোহালিদেরও তা-ই। এই সময়ের মধ্যে কোহালিরা ৩০টি টেস্ট খেলে জিতেছেন ২১টিতে। ৭টি ড্র হয়েছে, হেরেছেন ২টি টেস্টে। পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া ২৬টি টেস্টের জিতেছিল ২২টিতে। পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার দুই প্রধান অস্ত্র ছিলেন অধিনায়ক স্বয়ং এবং পেস বোলার ব্রেট লি। এখানে অধিনায়ক কোহালি এবং আর. অশ্বিন। পন্টিং তাঁদের জয়যাত্রার সময়ে করেছিলেন ২৭৯০ রান। কোহালি এই আড়াই বছরে টেস্টে করেছেন ২৭০৭ রান। পন্টিংয়ের দলের ব্রেট লি ১৩০ উইকেট নিয়ে ছিলেন সর্বোচ্চ শিকারি। কোহালির দলের এক নম্বর শিকারি আর. অশ্বিন পেয়েছেন ১৮০ উইকেট।
যদিও রেকর্ডের মতো উজ্জ্বল দেখাল না ফিরোজ শাহ কোটলার শেষ দিনটা। ৩১-৩ অবস্থায় শেষ দিনের ব্যাটিং শুরু করে খুব বেশি দল ভারতের মাটিতে জয় আটকে দিতে পারেনি। শ্রীলঙ্কা করে দেখাল। ভারতীয় বোলারদের নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বেশি করে কাঠগড়ায় কোটলার বাইশ গজ। এমন নিষ্প্রাণ পিচ দেশের মাটিতে শেষ কবে দেখা গিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আকাশ চোপড়া দিল্লির ছেলে হয়ে যেমন বলেছেন, ‘‘বুঝতে পারছিলাম না, পিচ রোলার চালানো হয়েছে না রোড রোলার। এমন উইকেট কেউ চায় না। সবাই উত্তেজক ক্রিকেট দেখতে আসে।’’
শেষ দিনে ভেসে উঠল শ্রীলঙ্কার দুই নতুন মুখ। ধনঞ্জয় ডি’সিলভা (১১৯) শেষ ইনিংসে ভারতের মাটিতে সর্বোচ্চ স্কোরার হয়ে গেলেন ভিভ রিচার্ডসকে ছাপিয়ে। অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা রোশন সিলভা অপরাজিত থাকলেন ৭৪ করে। এই দু’জনকেই নাগপুরে বসিয়ে রেখেছিল শ্রীলঙ্কা। লড়াই করে টেস্ট ড্র করার পরে চান্দিমাল বলে গেলেন দিল্লির দূষণ নিয়ে। ‘‘আমাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন ছিল। শ্রীলঙ্কায় আমাদের দূষণের মধ্যে পড়তে হয় না। প্রথম দু’দিনের পরে নিজেদের মধ্যে কথা বলে আমরা ঠিক করি, দূষণ নিয়ে না ভেবে আমরা ক্রিকেটে মন দেব।’’
ভারত সারা দিনে দু’টিই মাত্র উইকেট তুলতে পারল। তা-ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের উইকেটটা পরে রিপ্লেতে দেখা যায় ‘নো’ বলে। আম্পায়ার খেয়াল করেননি, টিভি আম্পায়ারের সাহায্যও নিলেন না। চান্দিমালকেও ‘নো’ বলে আউট করেছিলেন জাডেজা। এ বার আম্পায়ার প্রযুক্তির সাহায্য নিতে ভোলেননি। চান্দিমাল তাই বেঁচে গেলেন। এর পর ধনঞ্জয়ের সঙ্গে তিনি যোগ করলেন ১১২ রান। তার পরে ধনঞ্জয়-রোশন যোগ করলেন ৫৮। আহত, অবসৃত হয়ে এর পর বেরিয়ে যেতে হল ধনঞ্জয়-কে। কিন্তু রোশন এবং নিরোশান ডিকওয়েলা মিলে অবিচ্ছেদ্য থেকে ৯৪ রান যোগ করে আটকে দিলেন কোহালিদের জয়।
খেলার খবরে সব সময় আপডেটেড থাকতে চোখ রাখুন আনন্দবাজারে।