ডিআরএস নিয়ে বিতর্ক, প্রশ্ন তুললেন বিরাটও

রাতের শিশির, নিজেদের ফিল্ডিংকে দুষছেন বিরাট কোহালি। ক্ষুব্ধ ডিআরএস নিয়েও। তবে অ্যাশটন টার্নারই যে সব হিসেব পাল্টে দিলেন, তা স্বীকার করে নিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন 

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩৭
Share:

বিমর্ষ: মোহালিতে আবার হার। বিষণ্ণ অধিনায়ক কোহালি। পিটিআই

রাতের শিশির, নিজেদের ফিল্ডিংকে দুষছেন বিরাট কোহালি। ক্ষুব্ধ ডিআরএস নিয়েও। তবে অ্যাশটন টার্নারই যে সব হিসেব পাল্টে দিলেন, তা স্বীকার করে নিলেন তিনি। রবিবার মোহালিতে ৩৫৮ রান তুলেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে চার উইকেটে হেরে বিরাটের প্রতিক্রিয়া, ‘‘অ্যাশটনের ইনিংসই ম্যাচের ছবিটা পুরো পাল্টে দিল। অস্ট্রেলিয়াও খুব ভাল খেলেছে। এই জয়টা ওদের প্রাপ্য ছিল।’’

Advertisement

রবিবার অস্ট্রেলিয়ার শেষ দশ ওভারে জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল ৯৮ রান। এই অবস্থা থেকে টার্নার ৪৩ বলে ৮৪ রান করে ১৩ বল বাকি থাকতেই দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। ২৬ বছরের এই আগ্রাসী ব্যাটসম্যানের ইনিংসের প্রশংসা করে বিরাট বলেন, ‘‘হ্যান্ডসকম্ব ও খোয়াজাও খুব ভাল ব্যাটিং করেছে। কিন্তু অ্যাশটনের বিধ্বংসী ইনিংসে ম্যাচ বেরিয়ে গেল।’’

তবে মোহালিতে রাতের শিশির তাঁদের বোলারদের ভুগিয়েছে বলে জানান বিরাট। বলেন, ‘‘উইকেট ভাল ছিল ঠিকই। কিন্তু রাতের দিকে শিশিরের জন্য বল করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এ জন্য আমরা পঞ্চম বোলারকে ঠিক মতো ব্যবহার করতে পারিনি। কেদার বা বিজয়কে শিশির ভেজা বল দিলে সমস্যা বাড়ত।’’

Advertisement

ডিআরএস নিয়েও বেশ বিরক্ত বিরাট। ঋষভ এ দিন টার্নারকে স্টাম্পড করার সুযোগ নষ্ট করেন। রিপ্লেয় দেখা যায়, সেই বলটি টার্নারের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে পন্থের গ্লাভসে গিয়ে জমা হয়। কিন্তু ভারত রিভিউ চাইলেও সেই বলে টার্নারকে আউট দেওয়া হয়নি। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিরাট বলেন, ‘‘ওই ঘটনাটা আমাদের সবাইকে বেশ অবাক করে দেয়। প্রতি ম্যাচে এমন হচ্ছে। ডিআরএস তেমন ধারাবাহিক নয় বোধহয়। ওখানেই ম্যাচের ছবিটা পাল্টে যায়।’’

তবে এ দিন ভারতীয়দের ফিল্ডিংও মোটেই ভাল হয়নি। শেষ দিকে কেদার যাদব ও শিখর ধওয়ন টার্নারের আকাশে ওঠা ক্যাচ ফেলে দেন। যা নিয়ে বিরক্ত অধিনায়ক বলেন, ‘‘আমাদের ফিল্ডিং মোটেই ভাল হয়নি। স্টাম্পিংয়ের সুযোগও কাজে লাগাতে পারিনি আমরা। ফিল্ডারদের সুযোগগুলো কাজে লাগানো উচিত ছিল।’’

পরের ম্যাচ অধিনায়কের শহর দিল্লিতে। যার আগে এই দুই হার তাঁদের চোখ খুলে দিয়েছে বলে মনে করেন বিরাট। বলেন, ‘‘পরের ম্যাচে ব্যাপক লড়াই হবে। এই দুই হারই আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। দিল্লির ম্যাচে আর কোনও সুযোগ ছাড়া যাবে না।’’

অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ বলেন, ‘‘আমার মনে হয় উসমান এবং হ্যান্ডসকম্বের মধ্যে পার্টনারশিপটাই আসল। পিট যে ভাবে প্রথম সেঞ্চুরিটা করল দারুণ লেগেছে। আমার মনে হয় অস্ট্রেলিয়াতেও তিনশো রান তাড়া করতে গিয়ে আমরা এই একই ছকে খেলেছিলাম।’’ পাশাপাশি তিনি স্বীকার করে নেন, ভারত এত বড় রানের লক্ষ্য চাপিয়ে দিলেও অস্ট্রেলীয় দল রান তাড়া করতে নেমে চাপে পড়ে যায়নি। ‘‘কোনও চাপ ছিল না আমাদের। আমরা জানতাম রান তাড়া করতে নেমে যদি ওভারে ১০-১২ রানও তুলতে হয়, তা হলেও লড়াই করতে পারব। আমরা চেয়েছিলাম ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে। সেটা করতে পেরেই সুযোগের সদ্ব্যাবহার করেছে দলের ব্যাটসম্যানরা।’’ এ দিনের জয়ের নায়ক অ্যাশটন টার্নারের প্রশংসায় অধিনায়ক বলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেছিল অ্যাশটন। সেখানে যে ভাবে ও ব্যাটিং করল, কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। বিগ ব্যাশেও অ্যাশটন এ রকম ব্যাটিং করেছে। কিন্তু এখানে যে ভাবে বিশ্ব মানের দু’জন ডেথ বোলারের বিরুদ্ধে ও খেলেছে, তা দুরন্ত লাগল।’’

পিটার হ্যান্ডসকম্ব বলেন, ‘‘দারুণ লাগছে। আমার ভূমিকা ছিল শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাওয়া নিশ্চিত করা। উজ্জি (খোয়াজা) আর আমি খুব বেশি কথা বলিনি। শুধু নিজেদের খেলাটা খেলে গিয়েছি। যখন থেকে শিশির পড়তে আরম্ভ করল, আমরা লক্ষ্য করলাম স্পিন খুব একটা কাজ করছিল না। সেটাই আমাদের সুবিধে করে দিয়েছিল।’’ পাশাপাশি ম্যাক্সওয়েল ও অ্যাশটনের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘‘ম্যাক্সিও (ম্যাক্সওয়েল) দারুণ একটা ভূমিকা পালন করল। আমার উপর থেকে চাপটা ও অনেকটা কমিয়ে দিয়েছিল। ওর ইনিংসটাও কিন্তু সোজা ছিল না। অ্যাশটন দুর্দান্ত খেলোয়াড়। বিবিএলে আমরা সেটা আগেই দেখেছি। খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যাটিং

করতে পারে ও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন