প্রস্তুতি: ওয়েলিংটনে প্রথম টেস্টের আগে ফিল্ডিং মহড়া অধিনায়কের। সঙ্গী ঋষভ ও রাহানে। ছবি টুইট করে স্বয়ং কোহালি লিখলেন, খুব ভাল অনুশীলন হল।
আর তিন বছর। তার পরে হয়তো কোনও এক ধরনের ক্রিকেটে আর খেলতে দেখা যাবে না বিরাট কোহালিকে। ভারত অধিনায়ক ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিন বছর পরে টেস্ট, ওয়ান ডে বা টি-টোয়েন্টির মধ্যে যে কোনও এক ধরনের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন তিনি।
বুধবার ওয়েলিংটনে সাংবাদিক বৈঠকে কোহালিকে প্রশ্ন করা হয়, ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরে কোনও এক ধরনের ক্রিকেট থেকে কি নিজেকে সরিয়ে নেবেন? যার জবাবে কোহালি বলেন, ‘‘আমি একটু দূরের ছবিটা দেখতে চাই। আগামী তিন বছরের কঠিন পরিশ্রমের জন্য নিজেকে তৈরি করতে চাই। তার পরে হয়তো এই আলোচনাটা অন্য রকম হবে।’’
২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ওয়েলিংটনে প্রথম টেস্ট। তার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কোহালি স্পষ্ট করে দেন, পরিশ্রমের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাটা এখন কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত অধিনায়কের কথায়, ‘‘এই আলোচনা থেকে এখন দূরে থাকার উপায় নেই। আট বছর হয়ে গেল বছরে ৩০০ দিন ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে আমি। যার মধ্যে যাতায়াত রয়েছে, প্র্যাক্টিস সেশন রয়েছে। আর সব সময়ই তীব্রতাটা ধরে রাখতে হয়। যার একটা প্রভাব তো শরীরে পড়বেই।’’
এ বছরে একত্রিশে পা দেবেন কোহালি। তিনি মানছেন, মাঝে মাঝে বিশ্রাম নেওয়ায় তাঁর উপকারই হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ক্রীড়াসূচিতে ফাঁক পাওয়া না গেলেও ব্যক্তিগত ভাবে আমরা বিশ্রাম নিয়ে থাকি। বিশেষ করে যারা তিন ধরনের ক্রিকেটেই খেলে চলেছি।’’ শুধু টেস্ট, ওয়ান ডে বা টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত খেলাই নয়, অধিনায়কত্ব করারও যে একটা ধকল আছে, মানছেন কোহালি। বলছেন, ‘‘অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করাটা সোজা কাজ নয়। প্র্যাক্টিস সেশনেও ওই তীব্রতাটা ধরে রাখতে হয়। সব মিলিয়ে শরীরের উপরে ভালই ধকল পড়ে।’’
এর পরেই উঠে আসে কোনও এক ধরনের ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম নেওয়ার প্রসঙ্গ। জবাবে কোহালি বলেন, ‘‘যখন বয়স ৩৪-৩৫ হবে, যখন শরীর আর নিতে পারবে না, তখন অন্য কিছু ভাবব। এখন কোনও সমস্যা নেই। আগামী তিন বছর অদম্য ক্রিকেট খেলে যেতে চাই।’’
এক দিকে যখন অতিরিক্ত ক্রিকেট নিয়ে কথা হচ্ছে, তখন আইসিসি আরও বেশি প্রতিযোগিতা চালু করার কথা ভাবছে। কিন্তু কোহালির কাছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়ে বড় আর কোনও প্রতিযোগিতা নেই। ভারত অধিনায়ক পরিষ্কার বলেছেন, ‘‘আইসিসি প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে আমার কাছে একেবারে উপরে থাকবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। বাকি সব ওর নীচে। সব দল চাইবে লর্ডসে ফাইনাল খেলতে। আমরাও সেই দলে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফাইনালে পৌঁছতে চাই। এবং আশা করব, প্রতিযোগিতাটা জিততেও পারব।’’ সাত টেস্টে ৩৬০ পয়েন্ট পেয়ে এখন টেবিলে সবার উপরে রয়েছে ভারত।
কোহালি মনে করেন, এই প্রতিযোগিতা প্রথাগত টেস্ট সিরিজকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার পরে টেস্ট ক্রিকেটের আকর্ষণ নিঃসন্দেহে অনেক বেড়ে গিয়েছে। সেটা আমরা বুঝতে পারছি। আমরা বিদেশে এখনও বেশি সিরিজ খেলিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলার পরে এই নিউজ়িল্যান্ড সফর।’’ ভারত অধিনায়ক আশা করছেন, ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মতোই উত্তেজক হবে ভারত-নিউজ়িল্যান্ডের দু’ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। ‘‘এখন সব দলই জেতার জন্য ঝাঁপাবে। টেস্ট ক্রিকেটের আকর্ষণের জন্য যেটা খুব দরকার ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ডের সিরিজটা দারুণ হয়েছে। কেপ টাউন টেস্টে শেষ ঘণ্টায় জিতেছে ইংল্যান্ড, ’’ বলেছেন কোহালি।
এ দিন ওয়েলিংটনের ভারতীয় হাইকমিশনে গিয়েছিলেন কোহালিরা। যেখানে ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘‘এই আমন্ত্রণ পেয়ে আমরা সম্মানিত। নিউজ়িল্যান্ড ক্রিকেটীয় স্পিরিট মেনেই খেলে। কোনও দলের সঙ্গে যদি আমাদের এক নম্বর জায়গাটা ভাগ করে নিতে হয়, তা হলে চাইব সেটা যেন নিউজ়িল্যান্ডই হয়।’’