মাহমুদউল্লাহ ফেরানোর পরে ইশান্তকে অভিনন্দন সতীর্থদের। -পিটিআই
প্রত্যাশিত টেস্ট জয়ের পরে বিরাট কোহালির চোখ এখন পরের টার্গেটে। মিশন অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশকে ২০৮ রানে হারিয়ে উঠে কোহালি বলে দিচ্ছেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম ইংল্যান্ডই এ মরসুমে সবচেয়ে বড় সিরিজ হতে যাচ্ছে। কিন্তু ওই সিরিজটা আমরা ৪-০ জিতলাম। এ বার আমাদের ফোকাস অস্ট্রেলিয়ার উপর। আমরা প্রত্যেকে মানসিক ভাবে অস্ট্রেলিয়া সিরিজটার জন্য তৈরি।’’
সোমবার প্রত্যাশিত জয় এলেও কোহালির একটা জিনিস মেনে নিতে সামান্য সমস্যা হচ্ছে। ভারত অধিনায়ক মনে করেন, অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে যে ব্যাপারটায় উন্নতি ঘটানো দরকার। সেটা কী? বিরাট বলছেন, ‘‘দ্বিতীয় ইনিংসে বিপক্ষকে আর একটু তাড়াতাড়ি আউট করতে হবে আমাদের। যেটা এ দিন হয়নি। বাংলাদেশের আট উইকেট পড়ে যাওয়ার সময় আমাদের মধ্যে একটু গা ছাড়া ভাব এসেছিল। আমাদের ম্যাচটা আগেই শেষ করে দেওয়া উচিত ছিল। অন্তত ৪৫ মিনিট আগে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই জায়গায় আমাদের উন্নতি করতেই হবে।’’
বাংলাদেশ শেষ দিনে লাঞ্চের পরেও ব্যাটিং চালিয়ে গিয়েছিল। যেটা পছন্দ হচ্ছে না ক্যাপ্টেন কোহালির। তবে তাঁর দুই স্পিনারের ফর্ম নিশ্চয়ই স্বস্তিতে রাখবে অধিনায়ককে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাডেজা— দু’জনেই এ দিন চারটে করে উইকেট তুলে নিলেন। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটা তুলেছেন ইশান্ত শর্মা। মাহমুদউল্লাহকে ৬৪ রানে ফিরিয়ে দিয়ে। এই ম্যাচে ভারতের তিন পেসারে খেলার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু ঘটনা হল, বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের শর্ট বল খেলার দুর্বলতার ফায়দা তোলার জন্যই ইশান্তকে আনা হয়েছিল। সেই স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী এ দিন ক্রিজে দাঁড়িয়ে যাওয়া মাহমুদউল্লাহকে শর্ট বলে পুল করতে বাধ্য করে উইকেট তুলে নেন দীর্ঘকায় পেসার।
মাঠের লড়াই শেষে অবশ্য দেখা গেল দুই শিবিরে মৈত্রীর সুর। বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা যেমন ভারত অধিনায়কের সঙ্গে ছবি তুললেন। আবার দেখা গেল এক অফস্পিনার অন্য অফস্পিনারের থেকে টিপস নিচ্ছেন। ম্যাচের পরে মেহদি হাসান মিরাজ সোজা চলে এলেন অশ্বিনের কাছে। তাঁর থেকে টিপস নিতে।
অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে বাংলাদেশের এই এক টেস্টের সিরিজকে অনেকে বলেছেন, ঝকমকে ওয়ার্ম আপ ম্যাচ। সেই ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই খুশি করবে কোহালিকে। মুরলী বিজয়, ঋদ্ধিমান সাহার সেঞ্চুরি। চেতেশ্বর পূজারার ভাল ফর্ম। এবং কোহালির নিজের ডাবল সেঞ্চুরি। টেস্ট জিতে আবার সতীর্থদের কৃতিত্ব দিচ্ছেন ভারত অধিনায়ক। কোহালি বলছেন, ‘‘সতীর্থরাই আমায় ক্যাপ্টেন হিসেবে এই জায়গায় এনেছে। আমরা একটা দল হিসেবে খেলি। আপনারা বলতে পারেন ২০১৬ মরসুমে আমি প্রচুর রান করেছি। কিন্তু ২০১৫-তেও আমরা প্রচুর ম্যাচ জিতেছি। তখন আমি রান না পেলেও বাকিরা পেয়েছে।’’
ভারত প্রথম ইনিংস ৬৮৭-৬ ডি:। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ৩৮৮। ভারত দ্বিতীয় ইনিংস ১৫৯-৪ ডি:। বাংলাদেশ (আগের দিন ১০৩-৩ এর পর) মাহমুদউল্লাহ ক ভুবনেশ্বর বো ইশান্ত ৬৪, সাকিব ক পূজারা বো জাডেজা ২২, মুশফিকুর ক জাডেজা বো অশ্বিন ২৩, সাব্বির এলবিডব্লিউ ইশান্ত ২২, মেহেদি ক ঋদ্ধিমান বো জাডেজা ২৩, কামরুল ন.আ. ৩, তাইজুল ক লোকেশ বো জাডেজা ৬, তাসকিন এলবিডব্লিউ অশ্বিন ১, অতিরিক্ত ১৪, মোট ২৫০। পতন: ১১, ৭১, ৭৫, ১০৬, ১৬২, ২১৩, ২২৫, ২৪২, ২৪৯, ২৫০। বোলিং: ভুবনেশ্বর ৮-৪-১৫-০, অশ্বিন ৩০.৩-১০-৭৩-৪, ইশান্ত ১৩-৩-৪০-২, উমেশ ১২-২-৩৩-০, জাডেজা ৩৭-১৫-৭৮-৪।