লক্ষ্মণের ধমকে চেতনা ফিরল সুদীপদের

বুধবার বিশাখাপত্তনমে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে ধারাভাষ্য দিতে গিয়েছিলেন লক্ষ্মণ। বৃহস্পতিবার সকালেই বাংলার প্রাথমিক রঞ্জি দলকে অনুশীলন করাতে ফিরে এলেন কলকাতায়।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২২
Share:

ধমক: বাংলার অনুশীলনে ক্রিকেটারদের গা-ছাড়া মনোভাব দেখে ক্ষুব্ধ লক্ষ্মণ। প্র্যাক্টিস ম্যাচের লাঞ্চ বিরতির পরেই প্রত্যেক সদস্যকে কঠোর পরিশ্রম করার নির্দেশ দেন তিনি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

যা আগে কখনও হতে দেখা যায়নি, তা দেখা গেল বৃহস্পতিবার। বাংলার প্রাথমিক দলের অনুশীলনে ক্রিকেটারদের গা-ছাড়া মনোভাব দেখে ক্ষুব্ধ ভিভিএস লক্ষ্মণ। গোটা দলকে দাঁড় করিয়ে রীতিমতো ধমক দিতে দেখা গেল প্রাক্তন ভারতীয় তারকাকে। দিনের শেষে নিজের হাতেই তুলে নিলেন ব্যাট। দেখিয়ে দিলেন, এখনও তিনি ফুরিয়ে যাননি।

Advertisement

বুধবার বিশাখাপত্তনমে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে ধারাভাষ্য দিতে গিয়েছিলেন লক্ষ্মণ। বৃহস্পতিবার সকালেই বাংলার প্রাথমিক রঞ্জি দলকে অনুশীলন করাতে ফিরে এলেন কলকাতায়। বৃহস্পতিবার নেট প্র্যাক্টিসের বদলে প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলানো হল সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, বিবেক সিংহদের। ঠিক করা হল প্রথম দু’ঘণ্টা পেসারদের বিরুদ্ধে ব্যাট করবেন সুদীপেরা। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলবে স্পিনারদের বিরুদ্ধে অনুশীলন।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সল্টলেক ক্যাম্পাসের উইকেটে সে রকম বাউন্স পাচ্ছিলেন না পেসারেরা। অশোক ডিন্ডা, কণিষ্ক শেঠদের বল কোমরের উপরেও উঠছিল না। তবুও বিবেক সিংহ, বি অমিতেরা বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে সেই পিচেই দু’- তিন বার করে আউট হন। ছেলেদের এই মনোভাব দেখে কোচ সাইরাজ বাহুতুলে দু’তিন বার বোঝানোর চেষ্টা করলেও কাজে দেয়নি। লাঞ্চ বিরতির পরে লক্ষ্মণের নজরে আসে পেসারেরা আর মাঠে ফিল্ডিং করতে নামছেন না। জুতো, মোজা খুলে বিশ্রাম করছেন। তা দেখেই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন সিএবি-র ‘ভিশন ২০২০’ প্রকল্পের ব্যাটিং উপদেষ্টা লক্ষ্মণ।

Advertisement

তক্ষুনি গোটা দলকে মাঠের মাঝখানে ডেকে নেন। দাঁড় করিয়ে ক্রিকেটারদের ধমক দিতে থাকেন তিনি। সুদীপ, বিবেক, অভিষেক রামনদের মাথা নিচু করে শোনা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তোমরা নিজেদের সুপারস্টার ভেবে ফেলেছ? জেনে রাখো তোমরা কেউ সুপারস্টার নও। বাংলা ক্রিকেটের সুপারস্টার একজনই। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তোমরা নিজেদের বড় ক্রিকেটার ভেবে ফেলো না। বিরাট কোহালির ধারাবাহিকতা দেখেছ? পরিশ্রম ছাড়া কখনও এটা সম্ভব!’’

বোঝাই যাচ্ছিল, ক্রিকেটারদের গা-ছাড়া মনোভাব দেখে ক্ষিপ্ত লক্ষ্মণ। যাদবপুর সল্টলেক ক্যাম্পাসের মতো পাটা উইকেটেই যদি দু’তিন বার করে আউট হন, হিমাচল প্রদেশের আমতারে গতিময় উইকেটে কী করবেন সুদীপেরা, সেই প্রশ্ন ওঠাও খুব স্বাভাবিক।

লক্ষ্মণের এই ধমকের পরে ক্রিকেটারদের আচরণ বদলে যায়। পাল্টে যায় মাঠের পরিবেশও। ব্যাটসম্যানেরা আর বাইরের বল তাড়া করে মারলেন না, ভুল শটও খেললেন না। কিন্তু লক্ষ্মণ চাইছিলেন বলের আরও কাছে শরীর নিয়ে গিয়ে খেলুক কৌশিক ঘোষ, অভিষেক রামনরা। পাশাপাশি শেষ পর্যন্ত বল লক্ষ্য করে দেরিতে শট খেলুক ব্যাটসম্যানেরা।

অনুশীলনের শেষের দিকে নিজেই প্যাড পড়ে নিলেন দু’পায়ে। বাঁ হাতি স্পিনার প্রদীপ্ত প্রামাণিককে বল করতে ডেকে হাতে তুলে নিলেন ব্যাট। পাঁচটি বল খেললেন। তার মধ্যে তিনটিই কুড়িয়ে আনতে হল বাউন্ডারির বাইরে থেকে। বলের দিকে শেষ পর্যন্ত নজর রেখে কী ভাবে রান করা যায়, নিজেই ব্যাট হাতে তুলে দেখিয়ে দিলেন ‘ভেরি ভেরি স্পেশ্যাল’ ক্রিকেটার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন