‘লক্ষ্মণের ২৮১ আমার নেতৃত্ব বাঁচায়’, স্বীকারোক্তি সৌরভের

দক্ষিণ আফ্রিকায় সেই বিশ্বকাপে লক্ষ্মণের জায়গায় দীনেশ মোঙ্গিয়াকে দলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্মণ সেই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি। বুধবার সেই ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ওটা ছিল আমার জীবনের সব চেয়ে খারাপ সময়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২৩
Share:

খোলামেলা: ক্রিকেট জীবনের স্মৃতি রোমন্থন লক্ষ্মণের। ফাইল চিত্র

একটিও বিশ্বকাপে খেলেননি তিনি, এটাই ভিভিএস লক্ষ্মণের জীবনে সব চেয়ে বড় আফসোস। ২০০৩ বিশ্বকাপের দলে তাঁকে না দেখে দেশের ক্রিকেট মহলে অনেকে অবাক হয়েছিলেন। আর লক্ষ্মণ এতটাই হতাশ হয়েছিলেন যে, ক্রিকেট ছাড়ার কথাও ভেবে ফেলেছিলেন। বুধবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এই না বলা কথা শোনালেন লক্ষ্মণ। এই অনুষ্ঠানেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বীকারোক্তি, ইডেনে লক্ষ্মণের ২৮১ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস তাঁর নেতৃত্ব বাঁচিয়ে দিয়েছিল। ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লক্ষ্মণ সেই টেস্ট না জেতালে তাঁর নেতৃত্বই থাকত না বলে মনে করেন সৌরভ।

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকায় সেই বিশ্বকাপে লক্ষ্মণের জায়গায় দীনেশ মোঙ্গিয়াকে দলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্মণ সেই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি। বুধবার সেই ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ওটা ছিল আমার জীবনের সব চেয়ে খারাপ সময়। এতটাই ভেঙে পড়েছিলাম যে, নিজেকে ক্রিকেট থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে চলে গিয়েছিলাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে। ক্রিকেট ভুলে থাকার জন্য।’’ সে সময় ক্রিকেট ছাড়ার ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তখন ভেবেইছিলাম ক্রিকেট ছেড়ে দেব। মনের সঙ্গে অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বাবা-মা আমাকে অনেক বুঝিয়ে ক্রিকেটে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন।’’

মার্চে ভারত বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে যাওয়ার পরে লক্ষ্মণ ওয়ান ডে দলে ফিরে আসেন অক্টোবরে। ফিরে এসে দ্বিতীয় ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১০২ রান করেন তিনি। পরের বছর জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে তিনটি ওয়ান ডে সেঞ্চুরিও করেন। ‘‘নিজেকে ক্রিকেটে ফিরিয়ে আনতে ওই পাঁচ মাস আমার যা গিয়েছিল, তা আমিই জানি। ওই সময় বাবা-মা দু’জনেই আমাকে না বোঝালে হয়তো তখনই ক্রিকেটজীবন শেষ করে দিতাম।’’

Advertisement

সেই সময়ে ভারতীয় অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ। লক্ষ্মণের ওয়ান ডে দলে যে বেশি সুযোগ দেওয়া হয়নি, তা স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ্মণ যে কোনও ধরনের ক্রিকেটেই ভাল খেলার মতো ব্যাটসম্যান। ওকে ওয়ান ডে দলে না নেওয়াটা হয়তো আমার ভুলই ছিল। আসলে ক্যাপ্টেনদের সব সিদ্ধান্ত বোধ হয় ঠিক হয় না।’’ তবে ইডেনের সেই ২৮১ যে তাঁর অধিনায়কত্ব বাঁচিয়েছিল, তা এ দিন স্বীকার করে নিয়ে সৌরভ বলেন, ‘‘লক্ষ্মণ সে দিন ওই ইনিংস না খেললে আমরাও জিততে পারতাম না আর আমাকেও নেতৃত্ব হারাতে হত।’’ সেই দলের সদস্য জাহির খানও এই অনুষ্ঠানে ছিলেন। তিনি ও সৌরভ দু’জনেই একমত যে, তাঁদের ও সচিন, সহবাগ, যুবরাজ হরভজনদের সেই স্বর্ণযুগের দলের সব চেয়ে ভদ্র সদস্যটি ছিলেন লক্ষ্মণই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন