রুনিরও এ বার সরে যাওয়া উচিত

লিওনেল মেসি আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে অদ্ভুত একটা হতাশা দেখছি। আমিও যে মেসির সিদ্ধান্তে হতাশ সেটা লুকোচ্ছি না। তবে অধিনায়ক হিসেবে কোপা জিততে ব্যর্থ হওয়ার পর মেসির দায়বদ্ধতা দেখে আমার শ্রদ্ধা কিন্তু বেড়ে গিয়েছে।

Advertisement

সঞ্জয় সেন

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৬ ০৩:৪৭
Share:

লিওনেল মেসি আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পর ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে অদ্ভুত একটা হতাশা দেখছি।

Advertisement

আমিও যে মেসির সিদ্ধান্তে হতাশ সেটা লুকোচ্ছি না। তবে অধিনায়ক হিসেবে কোপা জিততে ব্যর্থ হওয়ার পর মেসির দায়বদ্ধতা দেখে আমার শ্রদ্ধা কিন্তু বেড়ে গিয়েছে।

আবার তার চব্বিশ ঘণ্টার মঝ্যে আইসল্যান্ডের কাছে ১-২ হেরে ইউরো থেকে ইংল্যান্ডের জঘন্য বিদায়ের পর ওয়েন রুনিকে দেখে আমার মনে প্রশ্ন জাগছে, ছেলেটার দেশের প্রতি কি কোনও দায়বদ্ধতাই নেই? আইসল্যান্ডের মতো বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে আনকোরা একটা দলের কাছে হারের পরেই ইংল্যান্ড কোচ হজসন পদত্যাগ করেছেন। রুনির কোনও হেলদোল নেই!

Advertisement

ইউরো বা বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড যখন খেলতে নামে তখনই কেন জানি না মনে হয়, এ বার কিছু একটা করবে। কেন? কারণ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা সেরা ফুটবলারদের অনেকেই সেই টিমে থাকে। আর একটা কারণে ইংল্যান্ডকে আমার ভাল লাগে। বেশির ভাগ সময় দলটায় একঝাঁক তরুণ ফুটবলার থাকে। এ বারও ছিল। স্টার্লিং, দেলে আলি, হ্যারি কেন্, স্মলিং, স্টারিজ, কাইল ওয়াকার— ইপিএলে সফল সব তরুণ ফুটবলার। আর তাদের সঙ্গে রুনি। মেসির মতোই ক্লাবের হয়ে প্রায় সব ট্রফি যার জেতা। দেশের হয়ে রুনি অবশ্য বিগ জিরো। মেসির চেয়েও সেখানে ওর খারাপ পারফরম্যান্স। রুনি তো কোনও টুর্নামেন্টের ফাইনালেই তুলতে পারেনি ইংল্যান্ডকে।

সবিস্তারে দেখতে ক্লিক করুন

আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর ম্যাচে রুনি পেনাল্টিতে গোল করার পর মনে হয়েছিল, শেষ আটে অন্তত এ বার উঠবে ওর দেশ। কিন্তু কোথায় কী? কিছুক্ষণের মধ্যেই ম্যাচ ১-১ হয়ে গেল। আইসল্যান্ডের র‌্যাগনার সিগার্ডসন যে এ ভাবে চমকে দেবে কেউ বোধহয় ভাবেনি! নিজে কোচ হিসেবে জানি, এ রকম ম্যাচ সিচুয়েশনে কতটা সতর্ক থাকতে হয়। মোহনবাগানের আই লিগ জেতার বছরে বারাসতে অনেকটা এ রকম হয়েছিল এক বার। আমাদের ডেনসন গোল করার পর সালগাওকর গোল শোধ করে আমাদের মহাবিপদে ফেলে দিয়েছিল। হাফটাইমে সবাইকে ডেকে বলেছিলাম, সতর্ক না হলে কিন্তু আজ হেরে যাব। শেষমেশ ম্যাচটা জিতেছিলাম। সনি আর কাতসুমি গোল করেছিল।

হজসন কেন ওই সময় নিজের দলকে সতর্ক করেননি জানি না। অথবা সতর্ক করলেও রুনি-স্টারিজরা কেন সে ভাবে লড়াইয়ে ফিরতে পারল না, বুঝতে পারলাম না। উল্টে আইসল্যান্ড আরও একটা গোল করে টুর্নামেন্টের তো বটেই, ইংল্যান্ডের ফুটবল ইতিহাসেই অন্যতম বড় অঘটন ঘটাল। দ্বিতীয় গোলটার জন্য অবশ্য জো হার্ট-কে দায়ী করব।

অথচ ইউরোয় ইংল্যান্ডের ফরোয়ার্ড লাইন এ বার দারুণ ছিল। লিভারপুলের স্টারিজ আর টটেনহ্যামের হ্যারি কেন্— যারা গোলের পর গোল করেছে ক্লাবের হয়ে। ইপিএলের সোনার বুট পেয়েছে কেন্। তবুও ইউরোয় ইংল্যান্ড ব্যর্থ। আমার মনে হচ্ছে, বিশ্ব ফুটবলে এখন ফেভারিট বলে কিছু হয় না। ফারাকটা ক্রমশ ক্রমে আসছে। আইসল্যান্ড সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে।

শেষ আটে আইসল্যান্ডের সামনে ফ্রান্স। পায়েত-গ্রিজম্যান-পোগবা সতর্ক হও। না হলে তোমাদেরও রুনিদের দশা হতে পারে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন