ডার্বি-দামামার মাঝেই চনমনে মেজাজে ইস্টবেঙ্গলের দুই সেরা অস্ত্র

কোনও ব্যক্তি নয়, মোহনবাগানকে রুখতে হবে মাঠে: জনি

পছন্দের গায়িকা শাকিরা। মেসির বিরুদ্ধে খেলেছেন। রাশিয়া বিশ্বকাপে প্রায় আটকে দিয়েছিলেন নেমারের ব্রাজিলকে। রবিবার যুবভারতীতে বড় ম্যাচের আগে দিপান্দা ডিকাদের সামনে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণে ‘জিব্রাল্টারের পাহাড়’ তিনিই। কোস্টা রিকার সেই বিশ্বকাপার জনি আকোস্তা ডার্বির ৪৮ ঘণ্টা আগে সাউথ সিটির ২৬ তলায় নিজের ফ্ল্যাটে দোভাষী নিয়ে আড্ডা দিলেন আনন্দবাজারের সঙ্গে।রবিবার যুবভারতীতে বড় ম্যাচের আগে দিপান্দা ডিকাদের সামনে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণে ‘জিব্রাল্টারের পাহাড়’ তিনিই। কোস্টা রিকার সেই বিশ্বকাপার জনি আকোস্তা ডার্বির ৪৮ ঘণ্টা আগে সাউথ সিটির ২৬ তলায় নিজের ফ্ল্যাটে দোভাষী নিয়ে আড্ডা দিলেন আনন্দবাজারের সঙ্গে।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১২
Share:

আকর্ষণ: খোশমেজাজে তারকা। সাউথ সিটির ফ্ল্যাটে জনি আকোস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

প্রশ্ন: কলকাতায় প্রায় এক মাস থাকার পরে রবিবার মাঠে নামছেন। তাও ডার্বি। চাপ লাগছে?

Advertisement

জনি: কোনও চাপ নেই। কারণ, আমি অনুশীলনের মধ্যেই ছিলাম। তবে ডার্বির আগে দু’একটা ম্যাচ খেলে নিতে পারলে একটু ভাল হত।

Advertisement

প্র: মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ মানে আত্মসম্মানের লড়াই। এটা জানেন ?

জনি: (হেসে) এই ক’দিনে তার অনেকটাই জেনে ফেলেছি। ইস্টবেঙ্গল কর্তারা ইউটিউবে ভিডিয়ো দেখিয়েছেন। বন্ধু অ্যালভিটো ডি’কুনহার একটা দুরন্ত গোলও দেখলাম অনেক আগের একটা ম্যাচে। শুনলাম, আমাদের সমর্থকরা ক্লাবের লাল-হলুদ পতাকা দিয়ে গ্যালারি নাকি মুড়ে দেয়। ওরা আমাদের দেশের মতো ফুটবল পাগল। নাচে-গায়-কাঁদে। খুব আবেগপ্রবণ। আমার তো দারুণ লেগেছে ওদের। বিশেষ করে লাল-হলুদ রংটা। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, এ রকম সমর্থকদের সামনে একটা দুর্দান্ত ম্যাচ খেলার শক্তি দিন। বিশ্বের অনেক জায়গায় খেলেছি। কিন্তু এখানকার মতো ভালবাসা খুব কম জায়গায় মিলেছে। ভাবুন আমার ভাষা কেউ জানেন না। কিন্তু ক্লাব কর্তা, সতীর্থ ফুটবলার থেকে কোচ, সহকারী কোচ, টিডি সকলেই আমার সঙ্গে এই ক’দিন দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন। কোথায় ভালভাবে থাকতে পারব, কোথায় পছন্দের খাবার পাব, সব হদিশ ওঁরা দিয়েছেন। আমি অভিভূত।

প্র: যুবভারতীতে এই ম্যাচটায় গত ছ’বারের সাক্ষাতে অপরাজিত মোহনবাগান।

জনি: তাই! শেষ ছ’বারে জিতিনি! এত নেতিবাচক কেন আপনি! বলুন, আমরা গত আট বছর এই লিগটাই জিতছি। এ বারও জিতব। মোহনবাগানের দু’টো ম্যাচ খুঁটিয়ে দেখেছি ভিডিয়োতে। ডিকা-হেনরিদের বেশ কিছু মুভ আমি মাথায় রেখেছি।

প্র: বছরের শুরুতে এই ম্যাচেই মোহনবাগান জার্সি গায়ে ডিকা জোড়া গোল করে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলকে। এ বার কি ম্যাচটা মোহনবাগান আক্রমণ বনাম ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের?

জনি: ম্যাচটা ডিকা বনাম জনি করে দেবেন না। ডিকা বেশ ভাল ফুটবলার। ওদের জুটিকে আটকাতে গেলে শুধু আমাকে নয় গোটা দলকে দক্ষতার শীর্ষে থাকতে হবে। আমার ব্যক্তিগত জয় নয়। দলের জয়টাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। ওদের পুরো দলকেই রুখতে হবে মাঠে।

প্র: নেমারকে বিশ্বকাপে আটকে এসেই কলকাতায় মোকাবিলা করতে হবে ডিকা-হেনরিকে। কাজটা কি সহজ?

জনি: না না, ব্যাপারটা ও ভাবে দেখছি না। নব্বই সালে ইতালি বিশ্বকাপে আমাদের দেশের কোচ ছিলেন বোরা মিলুটিনোভিচ। আমার প্রিয় ফুটবল ব্যক্তিত্ব। তিনি বলতেন, কোনও ম্যাচই সহজ নয়। এমনকি পাড়া ফুটবলেও সহজ ম্যাচ হয় না।

প্র: বিশ্বকাপে নেমারের ব্রাজিল আপনাদের রক্ষণের কাছে প্রায় আটকে গিয়েছিল। নেমার কি সত্যিই খুব নাটুকে?

জনি: একটু প্লে-অ্যাক্টিং করে তা ঠিক। ওগুলো খেলার অঙ্গ। তবে বিশ্বকাপে ওকে ডিফেন্ডাররা বেশ চোরাগোপ্তা মেরেছেও। আমাদের বিরুদ্ধেও ওকে বেশ মার খেতে হয়েছিল।

প্র: দু’টো বিশ্বকাপ খেলেছেন। হাতের ট্যাটুতে তার উল্লেখ রয়েছে? তার নিচে হাতের কব্জির ট্যাটুটা কার জন্য।

জনি: আমার পরিবারের জন্য ওই ট্যাটু। ছেলে কেভিনের বয়স ১৫ বছর। স্কুলে পড়ে। ডিসেম্বরেই ওর মায়ের সঙ্গে কলকাতায় আসবে।

প্র: ভারতে এসে বলিউডের কোনও ছবি দেখেছেন এই একমাসে?

জনি: ভারতে আসার আগেই আপনার দেশের ছবি দেখেছি কোস্টা রিকায় বসে। স্লামডগ মিলিয়োনেয়ার।

প্র: ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে আপনার ধারণা?

জনি: প্রচুর ভাল প্রতিভা রয়েছে এখানে। আই লিগের কয়েকটি ম্যাচ দেখলাম। মান বেশ ভাল। ফুটবলে কত উৎসাহ মানুষের! বুঝতে পারছি না, এ দেশে ফুটবল নিয়ে মানুষের এত আগ্রহ থাকলেও ফিফা র‌্যাঙ্কিং কেন এত নিচে রয়েছে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন