—প্রতীকী চিত্র।
ধাক্কাধাক্কি, হুমকি, চক্রান্ত করে পদক কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে শনিবার বিকেলে রীতিমতো উত্তাল হল রাজ্য অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা।
ছেলেদের আটশো মিটার দৌড়ে ৩৯ বছর আগের রেকর্ড কী ভাবে ভাঙলেন শশীভূষণ সিংহ, এটা নিয়ে আলোড়নের মধ্যেই হঠাৎ দেখা যায় মাঠের পাশে ধাক্কাধাক্কি হচ্ছে। রাজ্য সংস্থার সচিব কমল মৈত্রকে ঘিরে ধরে নদিয়া টিমের ম্যানেজার জয়ন্ত দালাল ও তাঁর সঙ্গীদের অভিযোগ করতে দেখা য়ায়। ‘‘দুটো ইভেন্টে আমাদের মৌসুমী মণ্ডল ও দেবকুমার বিশ্বাসকে দৌড় শেষ করার পরও বাড়তি পাক দিতে বলেছেন নির্বাচকরা। না হলে ওঁরা পদক পেত। কেন এটা হল?’’
কমলবাবু তাদের বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে আপনারা লিখিত অভিযোগ করুন।’’ তখন এক মহিলা অ্যাথলিটকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি পুলিশে কাজ করি। আপনাকে দেখে নেব।’’
এতে ঝামেলা বাড়ে। কমলবাবু ও তাঁর সঙ্গীরা পাল্টা তেড়ে যান। ধাক্কা দিতে দিতে বের করে দেন নদিয়ার বিক্ষোভকারীদের। কমলবাবু বললেন, ‘‘ওরা প্রতিযোগিতা বন্ধের হুমকি দিচ্ছিল। তাই ধাক্কা মেরে বের করে দিয়েছি।’’
এই ঝামেলার মধ্যেও এ দিন আলো ছড়ালেন তিনজন। তিনটি রেকর্ড গড়ে। সাই কোচ কল্যাণ চৌধুরীর দুই ছাত্র শশীভূষণ সিংহ এবং তাপস দে নতুন রেকর্ড গড়লেন। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে অনূর্ধ্ব ১৮ বিভাগে ৮০০ মিটার দৌড়ে রেকর্ড গড়া (১ মিনিট ৫৭.৩) তাপস মাসখানেক হল সাইতে এসেছেন। তাপস পেশায় টোটো চালক। আসানসোলের রাস্তায় টোটোয় যাত্রীভাড়া খাটেন। পাশাপাশি অনুশীলনও করেন। বলছিলেন, ‘‘ভাড়া খাটার টাকাতেই সংসার চলে। আবার পুষ্টিকর খাবারও খাই।’’
গতবারও সোনা জিতেছিলেন তাপস। তাপসের মতোই চমকপ্রদ জীবন হাইজাম্পে রেকর্ড গড়া রাজেশ্বরী দাসের। রাজ্যের অন্যতম প্রতিভাবান এই অ্যাথলিটের বাড়ি সুন্দরবনে। বলছিলেন, ‘‘প্রতি বারই বন্যায় অনেক বাড়ি তলিয়ে যায়। আমাদের বাড়ির দিকেও সমুদ্র এগিয়ে আসছে। আতঙ্ক হয়।’’ এই আতঙ্ক নিয়েও সোনা ও পদক জিতলেন রাজেশ্বরী।