চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বুধ-রাত কোন নক্ষত্রের দ্যুতিতে সবচেয়ে উজ্জ্বল?
উত্তর খুঁজতে ফুটবলমহলে তর্ক লাগতেই পারে!
মুলার? লেভানডস্কি? গুয়ার্দিওলা? মোরিনহো? নেইমার? সুয়ারেজ? উইলিয়ান? কে!
আর্সেনালের কাছে প্রথম ম্যাচে হারের বদলা নিতে গ্রুপের ফিরতি লড়াইয়ে আর্সেন ওয়েঙ্গারের টিমকে পাঁচ গোল মারল বায়ার্ন মিউনিখ। যে ম্যাচকে ‘মুলার্ড’ না পেপ গুয়ার্দিওলার চূড়ান্ত অ্যাটাকিং ফুটবলের জলজ্যান্ত প্রমাণ— কী আখ্যা দেবে ইউরোপীয় ফুটবল মিডিয়া যেন বুঝে উঠতে পারছে না! বায়ার্নের ৫-১ জয়ের পিছনে টমাস মুলার নিজে দু’গোল করেন, বাকি তিনের মধ্যে দু’টোর রাস্তা গড়ে দেন।
মহাতারকা ফুটবল ম্যানেজার জোসে মোরিনহো আর তাঁর চেলসির যদি এ মরসুমের ইউরোপিয়ান ফুটবলে এত দিন দুর্ভাগ্য-অধ্যায় যায় তো গত কালটা ছিল তেমনই সৌভাগ্যের। চাকরি খোয়ানোর কিনারে দাঁড়িয়ে থাকা মোরিনহোকে আচমকা স্বস্তি দিয়ে উইলিয়ানের ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে ডিনামো কিয়েভের দ্রাগোভিচ নিজের গোলেই ঢুকিয়ে দিলে চেলসি এগিয়ে যায়। কিন্তু খেলা শেষ হওয়ার মাত্র মিনিট তেরো আগে সেই দ্রাগোভিচ-ই ১-১ করেন। কিন্তু অনবদ্য বাঁকানো ফ্রি-কিক নিয়ে উইলিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপে চেলসিকে দ্বিতীয় স্থানে তুলতে দিতে সাহায্য করেন।
ন্যু কাম্পে আবার চোট-পরবর্তী রিহ্যাবে থাকা লিও মেসি নীল গলফ টুপি মাথায় বার্সেলোনার ডাগআউটে বসে দলের ৩-০ সহজ জয় উপভোগ করলেন বরিসভের বিরুদ্ধে। কিংবা তার চেয়েও বেশি উপভোগ করলেন নেইমার-সুয়ারেজ যুগলবন্দি! মেসি-বিহীন বার্সার শেষ ১৭টা গোলই হয় নেইমার কিংবা সুয়ারেজের। বুধবার রাতেও নেইমারের দু’গোল, একটা সুয়ারেজের। সুয়ারেজের গোলের ফাইনাল পাসও নেইমারের। প্রথম গোলটা যে পেনাল্টি থেকে করেন নেইমার, সেটা সুয়ারেজের আদায় করা। সব মিলিয়ে উরুগুয়ান তারকার সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডারকিডের নিখুঁত যুগলবন্দি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নেইমারের ১৬ গোল হল। রোনাল্ডিনহোর চেয়ে দু’টো বেশি। আবার বার্সায় মাত্র দেড় মরসুমে সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে ৩৭ গোল করে ফেললেন সুয়ারেজ। মারাদোনার চেয়ে একটা, রোমারিওর চেয়ে দু’টো কম। ৪ ম্যাচে ১০ পয়েন্টে পৌঁছনো বার্সেলোনার শেষ ষোলোয় উঠতে দরকার আর মাত্র ১ পয়েন্ট। বার্সা উয়েফার জরিমানার কবলেও পড়তে চলেছে। গত কাল ম্যাচ শুরুর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ‘অ্যান্থেম’ নিয়মমাফিক বাজার সময় ঘরের মাঠে বার্সা সমর্থকেরা টিটকিরি দিয়ে দলের ম্যানেজমেন্টকে বিপদে ফেলে দেন।
বায়ার্ন এখনই গ্রুপ থেকে নক আউটের টিকিট পেয়ে গিয়েছে। দু’সপ্তাহ আগে এমিরেটসে আর্সেনালের কাছে ০-২ হারের জ্বালায় গুয়ার্দিওলার দল যে কতটা জ্বলছিল, যেন সেটা বোঝাতেই গত রাতে ম্যাচের ১০ থেকে শেষ মিনিট পর্যন্ত গোল করে আর আগাগোড়া আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেন লেভানডস্কিরা। প্রথমার্ধেই লেভানডস্কি, মুলার আর আলাবার গোলে ৩-০ এগিয়ে যায় বায়ার্ন। বিরতির পরে রবেন আর মুলারের দ্বিতীয় গোলে একতরফা ম্যাচে জয় পেল বায়ার্ন।