Sports News

আমি যদি গ্রুপবাজি করে থাকি তা হলে বাকিরা কোথায়

প্রশ্নটা তা হলে তিনি তুলেই দিলেন। কলকাতায় বেটন কাপ খেলতে এসে এই জবাবটাই চাইলেন জাতীয় হকি দল থেকে নির্বাসিত হওয়া গুরবাজ সিংহ।

Advertisement

সুচরিতা সেন চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:১৬
Share:

গুরবাজ সিংহ

প্রশ্নটা তা হলে তিনি তুলেই দিলেন। কলকাতায় বেটন কাপ খেলতে এসে এই জবাবটাই চাইলেন জাতীয় হকি দল থেকে নির্বাসিত হওয়া গুরবাজ সিংহ। ভারতীয় দলের মধ্যে গ্রুপবাজি করার জন্য বাদ পড়তে হয়েছিল গুরবাজ সিংহকে। তিনি নাকি অন্যান্য পঞ্জাবীদের নিয়ে দল করতেন। দলের মধ্যের নিয়ম মানতেন না। এরকম একগুচ্ছ অভিযোগে অভিযুক্ত হতে হয়েছিল তাঁকে। সব শুনে এখনও হেসে ফেলেন তিনি। আসলে এতদিনের অপবাদ শুনতে শুনতে এখন অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। তাই হাসতে হাসতে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি, ‘‘আমি মেনে নিলাম আমি গ্রুপ করেছি। তা হলে যাদের নিয়ে করলাম বা যাঁরা আমাকে সমর্থন করে আমার গ্রুপে এল তারাও তো সমান দোষী। তা হলে তাঁদের বাদ দেওয়া হল না কেন?’’ থেমে বলেন, ‘‘আমি যাদের নিয়ে এই দল করলাম তারা কোথায়? একা একা তো আর গ্রুপবাজি হয় না।’’

Advertisement

সত্যিই তো এমন একটা কারণে গুরবাজকে নির্বাসিত করা হল যার শাস্তি কেউ একা পেতে পারে না। বেটন কাপে ওএনজিসির হয়ে খেলতে এসেছিলেন গুরবাজ। ইন্ডিয়ান অয়েলের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় হয়ে গিয়েছে। মাঠ থেকেই দৌঁড়চ্ছিলেন ফ্লাইট ধরতে। বাড়ি যাবেন। তাও যেতে যেতে বলে গেলেন, ‘‘এই প্রশ্নটা ওদের একবার করুন না? এর উত্তর তো ওরাই দেবে।’’ তার পরই সোজা এয়ারপোর্ট।

শুধু দলবাজি নয় তার সঙ্গে দলের মধ্যের শান্তি বিঘ্নিত করার দায়ও চেপেছিল গুরবাজের উপর। তাঁকে ‘প্রবলেম চাইল্ড’ বলে ব্যাখ্যা করেছিল হকি ইন্ডিয়া। গত বছর অগস্টে এই অপরাধে ন’মাসের জন্য নির্বাসিত করা হয় এই মিড ফিল্ডারকে। হকি ওয়ার্ল্ড লিগের সেমিফাইনালের পরই এই অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এখন তিনি মুক্ত। নির্বাসন কাটিয়ে বেরিয়ে এসেছেন। কিন্তু জাতীয় দলে ফেরা হয়নি। ‘‘ফেরানো হয়নি কেন আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না। সেটা ওরা বলতে পারবে ভাল। আমার কাজ নিজেকে তৈরি রাখা। আমি সেটাই করছি।’’ গুরবাজের বিরুদ্ধে সব থেকে বড় অভিযোগ এনেছিলেন ফেলিক্স ডি’সুজা। তিনি তাঁর রিপোর্টে বলেন, ও কোচেদের সঙ্গে সহযোগিতা করেন না। দেশের স্বার্থে খারাপ উদাহরণ। অতীতেও নির্বাসিত হয়েছিলেন গুরবাজ লন্ডন অলিম্পিক্সের পর। একই অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। বার বার এক অভিযোগ উঠছে মানে তো কিছু একটা রয়েছেই? প্রশ্ন শুনে থমকালেন গুরবাজ। তার পর বললেন, ‘‘আসলে সত্যি কথাটা স্পষ্ট করে বলে দেওয়াটা যদি অপরাধ হয় তা হলে হয়তো আমিই ভুল।’’

Advertisement

২০১৬ অলিম্পিক্সে ডাকা হয়নি এই মিডফিল্ডারকে। দেশের সেরা রাইট হাফ তিনিই। ২০১৬ অলিম্পিক্স দেখেননি কষ্টে। দেশের হকি দেখা ছেড়েই দিয়েছেন। এতক্ষণের কঠিন কাট কাট জবাব হঠাৎই বদলে যায় হতাশায়। গলা বুজে আসে। বলেন, ‘‘আমি এমন একটা কারণে শাস্তি পেলাম যে দোষটা আমি করিইনি। আমি সবাইকে শ্রদ্ধা করতাম। আমার বিরুদ্ধে যদি সেই অভিযোগই থাকে তা হলে জুড কেন দোষটাকে নির্দিষ্ট করে বলতে পারল না। দলের সব প্লেয়ারদের কাছে জানতে চাওয়া হোক আমি ঠিক কী করেছি।’’ ভেঙে পড়েছিলেন। ‘‘সেরা সময় কাটাচ্ছিলাম। ফর্মের তুঙ্গে ছিলাম। ওটা তো আর ফিরে আসবে না।’’ একরাশ হতাশায় যেন আবার ডুবে গেলেন দেশের সেরা মিড ফিল্ডার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন