গোল করা তাঁর কাছে অক্সিজেন। গোল না পেলে তাঁর মেজাজ ভাল থাকে না। শরীরের মধ্যে অস্বস্তি কাজ করে। কিছু করতে ইচ্ছেও করে না।
সোমবার আনন্দবাজারের সঙ্গে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের মনোভাব এ ভাবেই মেলে ধরলেন ফিকরু তেফেরা। আটলেটিকো দে কলকাতা সমর্থকদের হার্টথ্রব। দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা বলে দিলেন, “আমি একা নই। যে কোনও স্ট্রাইকারের কাছে গোল পাওয়াটা অক্সিজেনের মতো। গোল আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। আমার মনে হয় এটা একটু বেশিই। গোল না করতে পারলে আমি যেন পাগল হয়ে যাই।”
যুবভারতীতে এ দিন সকালে ফটোশ্যুট ছিল ফিকরুর। সেখানে যাওয়ার পথে গাড়িতে বসে কথা বলছিলেন শেষ ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে কলকাতার একমাত্র গোলদাতা। কিন্তু কেরল-হারের কথা এখন মন থেকে মুছে ফেলতে চাইছেন সামনে পুণে ম্যাচের কথা ভেবে। শনিবার সেই ম্যাচের প্রস্তুতি হিসাবে অনুশীলন শুরু করেছে আন্তোনিও হাবাসের দল। বিকেলে অনুশীলনে নামার আগে সকালে অবশ্য নিজের লক্ষ্য ঠিক করে নিয়েছেন ফিকরু। বলছিলেন, “আমার সেই দিনটার কথা মনে আছে। খুব খারাপ লেগেছিল আইএসএলে প্রথম হারের পর। এ বার প্রতিশোধ নিতেই হবে। ওদের মাঠে হারাব পুণেকে। কথা দিলাম। আশা করছি আমার মতো অন্যরাও নিজের সেরাটা দেবে।”
নিজের লক্ষ্যে এখানেই থেমে থাকতে রাজি নন কলকাতা স্ট্রাইকার। লিগ টেবলে দু’নম্বরে রয়েছে তাঁর দল। পিছন থেকে কেরল, মুম্বইয়ের মতো দল তাড়া করছে। এ রকম অবস্থার মধ্যেও ফিকরু বলে দিলেন, “অন্যরা কী ভাবছে জানি না। কিন্তু কলকাতা সমর্থকদের থেকে যা ভালবাসা পেয়েছি তাতে ট্রফি না জিততে পারলে অপরাধ হবে। শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করব ট্রফি জিততে। আমাদের দলে প্রতিভাবান ফুটবলারের অভাব নেই। দলে একাত্মতাবোধ আছে। তা হলে চ্যাম্পিয়ন কেন হতে পারব না?”
কেরল ম্যাচে বিশ্বকাপার রেফারির গোল বাতিল নিয়ে তাঁদের কোচ হাবাস থেকে কর্তারা সবাই সোচ্চার হলেও ফিকরু কোনও মন্তব্যে নারাজ। তবে বললেন, “পিছনে ফিরে তাকিয়ে লাভ নেই। আমাদের সামনে দেখতে হবে। পরপর তিনটে অ্যাওয়ে ম্যাচ আছে। সেগুলোতে ভাল ফল করতে হবে। আমরা তো আগেও অ্যাওয়ে ম্যাচে জিতেছি। তা হলে এ বার জিতব না কেন? সেমিফাইনালে যাওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
পরের ম্যাচই ত্রেজেগুয়ের পুণের সঙ্গে। সেই ম্যাচ নিয়ে কী ভাবছেন ফিকরু? “এক জন বা দু’জন ফুটবলারকে নিয়ে ভাবছি না। ওদের গোটা দলকে আটকাতে হবে। গোল করে জিততে হবে।” তবে পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, “আইএসএল এমন একটা টুর্নামেন্ট যেখানে যে কোনও দল যে কোনও দলকে হারাতে পারে। আর ফুটবল এমন একটা খেলা যেখানে যা কিছু হতে পারে।”
ফিকরু যখন কলকাতাকে চ্যাম্পিয়ন করার স্বপ্ন দেখছেন তখন তাঁর দলের কর্তারা অবশ্য কোচ হাবাসকে নিয়ে আলোচনায় বসেছেন। সেখানে দলের কোচকে বলে দেওয়া হয়, আরও সতর্ক হয়ে এগোতে। যাতে টিম সেমিফাইনালে যেতে পারে। কর্তারা কোচকে বলে দেন, টিমে যদি কোনও সমস্যা হয় তা হলে যেন কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নেন। সভা থেকে বেরিয়ে কলকাতার এক কর্তা বললেন, “রেফারি সমস্যা তৈরি করতেই পারে। কিন্তু আপনি ফুটবলারদের সতর্ক থাকতে বলুন। যাতে তারা কোনও ঝামেলায় না জড়ায়।”
শেষ ম্যাচে রেফারি তাঁদের নিশ্চিত গোল বাতিল করার বিষয়ে কর্তারা হইচই করলেও, হাবাসের টিম পরিচালনা এবং স্ট্র্যাটেজি নিয়েও সমালোচনা হওয়ায় সতর্ক কর্তারা। আজ মঙ্গলবার দলকে উদ্বুদ্ধ করতে অনুশীলনের সময় উপস্থিত থাকবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দেখবেন পুরো পরিস্থিতিও।