সমর্থকদের মাঝে ম্যাচের নায়ক ডু ডং। ছবি: উত্পল সরকার।
প্রশ্ন: ডার্বি খেলার কোনও অভিজ্ঞতা আছে আপনার?
ডং: না। অস্ট্রেলিয়ায় ‘এ’ লিগেও সুযোগ পাইনি। জাপানে ‘জে’ লিগেও না। রবিবারই জীবনের প্রথম।
প্র: টেনশন হচ্ছে?
ডং: হচ্ছে। চোরা একটা উত্তেজনা হচ্ছে ভেতর ভেতর। আসলে এত সদস্য-সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ যে, রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে বলতে পারেন। আমি চাইছি ম্যাচের প্রথম পাঁচটা মিনিট টেনশন হোক। যাতে পরের পঁচাশি মিনিট ফোকাস করতে অসুবিধা না হয়।
প্র: বাগানের কোন ফুটবলারকে সবচেয়ে বিপজ্জনক মনে হচ্ছে?
ডং: ডুডু। ওর দু’তিনটে ম্যাচ দেখেছি। গোল চেনে, হেডটা দুর্দান্ত। বডি ব্যালেন্সও ভাল। তবে ডুডু-কাতসুমিকে এক সঙ্গে খেলতে দেখলেও, ডুডু-আভেস্কাকে দেখিনি। পরের জুটিটা ডার্বিতে নামলে নতুন অভিজ্ঞতা হবে।
প্র: আপনি ইস্টবেঙ্গল কোচ হলে ডুডুকে কী ভাবে আটকাতেন?
ডং: মোহনবাগানের উইং প্লে বন্ধ করে দিতাম। যেখান থেকে ডুডুর জন্য ক্রসগুলো আসে। এক জন ভাল চেহারার ডিফেন্ডারকে পুলিশম্যান মার্কিং রাখতাম। যাতে ও নড়াচড়া করতে না পারে এবং ডান দিকে টার্ন করার সুযোগও যাতে আটকে যায়। ও-ই আসল। ওকে পাওয়া মানেই ম্যাচ পেয়ে যাওয়া।
প্র: কিন্তু ডুডু ছাড়াও তো বাগানের অন্যরা গোল পাচ্ছেন?
ডং: সেটা তো শুধু গত ম্যাচের পরিসংখ্যান। বেশি ভাগ সময়ই দেখা যাচ্ছে, ডুডু গোল করলে মোহনবাগান জিতছে। ডুডু গোল না পেলেও, গোল তৈরি করছে অন্যদের জন্য। যেটা আরও ভয়ঙ্কর।
প্র: ওদের ভারতীয় ফুটবলাররা কিন্তু দূরপাল্লার শটে গোল পাচ্ছেন...
ডং: আমরাও পাচ্ছি। মেহতাব, অবিনাশের বিশ্বমানের গোলগুলো এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলেন?
প্র: বাগান কোচ বলেছেন, আপনাকে নিয়ে নাকি বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে। ডুডুও বলেছেন যে, ডার্বিতে এখনও বাগানকে খেলেনি ডং!
ডং: ম্যাচের আগে অনেকেই অনেক কিছু বলবে। বড় বড় কথা বলতে আমি ভালবাসি না। আমি পারফরম্যান্সে বিশ্বাসী। সবাই আমাকে নিয়ে মাতামাতি করছে কারণ আমি পারফর্ম করেছি। গোল করেছি। কাউকে ডেকে বলিনি যে আমাকে নিয়ে লেখো। বাড়াবাড়ি করো। সম্মানটা খেলে অর্জন করেছি। ডুডুদের উত্তরটা ডার্বিতেই দেব।
প্র: আপনার সব গোল বিরতির পরে। প্রথমার্ধে গোল পাচ্ছেন না কেন?
ডং: শুরুতে বিপক্ষ দলের ফুটবলাররা বেশি তাগিদ নিয়ে মাঠে নামে। অনেক বেশি ঝরঝরে, ফিট থাকে। কিন্তু বিরতির পরে ক্লান্তি ফিটনেস কমিয়ে দেয়। তখন ম্যান টু ম্যান মার্কিংও কাজে দেয় না। গোল করতেও সুবিধা হয়।
প্র: গোল করে গোল ধরে রাখার ব্যাপারে কতটা আতঙ্কে ভুগছেন? বিশেষ করে আগের ম্যাচে ডিফেন্ডাররা যে রকম ভুল করেছেন?
ডং: ভুল একা ডিফেন্ডারদের নয়। ফুটবলের নিষ্ঠুর নিয়ম হল, দশটা মিস করে একটা গোল করলেই নায়ক স্ট্রাইকার। কিন্তু দশটা ভাল বাঁচিয়ে একটা গোল খেলেই খলনায়ক ডিফেন্ডার। আমি এই তত্ত্বে একেবারেই বিশ্বাসী নই। যে ভুলগুলোর জন্য আমরা বেশ কিছু ম্যাচে গোল হজম করেছি, সেটার জন্য গোটা টিম দায়ী। মাঝমাঠ থেকে সাপোর্ট আসেনি। স্ট্রাইকাররাও বিপক্ষ বক্সে আতঙ্ক ছড়াতে পারেনি। একটা কথা বলতে পারি। গোল খাওয়ার কোনও ভয় নেই আমাদের। কেন না গোল খেলেও আমরা গোল করতে পারি।