Sport News

‘কেউ ভাবতেও পারেননি, নেমাররাও এ ভাবে মুখ থুবড়ে পড়বেন’

এই ব্রাজিলকে ঘিরে প্রত্যাশা তুঙ্গে ছিল। কারণ, তিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে দলটা। দু’টো প্রস্তুতি ম্যাচেও নজর কেড়েছিলেন নেমাররা। দেখেছিলাম, দল হিসেবে খেলছি আমরা।

Advertisement

ডগলাস দ্য সিলভা

সাও পাওলো শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০৪:০৫
Share:

হোঁচট: প্রথম ম্যাচে সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও জয় এল না। হতাশ নেমার। রবিবার রস্তভ এরিনায়। ছবি: গেটি ইমেজেস

ব্রাজিল ১ • সুইৎজারল্যান্ড ১

Advertisement

আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনা ড্র করতেই আনন্দে মেতে উঠেছিলেন ব্রাজিলের মানুষ। জার্মানি রবিবার মেক্সিকোর কাছে হেরে যাওয়ায় তা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল। আর সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০ মিনিটে ফিলিপে কুটিনহোর অসাধারণ গোলে ব্রাজিল এগিয়ে যাওয়ায় রীতিমতো উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল সাও পাওলোর রাস্তায়। গাড়ির হর্ন বেজেই চলেছে। মনে হচ্ছিল, আমরা শুধু এই ম্যাচটা নয়, বিশ্বকাপই যেন জিতে গিয়েছি। কেউ ভাবতেও পারেনি যে, নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-রাও এ ভাবে মুখ থুবড়ে পড়বেন।

এই ব্রাজিলকে ঘিরে প্রত্যাশা তুঙ্গে ছিল। কারণ, তিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে দলটা। দু’টো প্রস্তুতি ম্যাচেও নজর কেড়েছিলেন নেমাররা। দেখেছিলাম, দল হিসেবে খেলছি আমরা। আক্রমণে একসঙ্গে চার-পাঁচ জন ফুটবলার উঠছেন, রক্ষণ শক্তিশালী করতে সবাই মিলে নেমে আসছেন। একেবারে নতুন ব্রাজিল। যাদের প্রধান অস্ত্রই দলগত সংহতি। তাই ভেবেছিলাম, এ বারের বিশ্বকাপে ‘ই’ গ্রুপ থেকে সহজেই শেষ ষোলোয় পৌঁছব। কিন্তু ভাবতে পারিনি, ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ব্রাজিলের চেয়ে চার ধাপ পিছিয়ে থাকা দেশের সামনেও আটকে যেতে হবে।

Advertisement

সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্রাজিল শুরুটা প্রত্যাশা অনুযায়ীই করেছিল। নিজেদের মধ্যে পাস খেলতে খেলতে আক্রমণে উঠছিল। মাঝমাঠ থেকে আক্রমণে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। সামনে নেমার, ফিলিপে কুটিনহোরা। দেখে খুব ভাল লাগল, সদ্য সুস্থ হয়ে ওঠা নেমারের যাতে ফের চোট না লাগে, তার জন্য সতর্ক ছিলেন ওঁর সতীর্থরা। তা ছাড়া তিতে জানতেন, সুইৎজারল্যান্ডের প্রধান লক্ষ্যই থাকবে নেমারকে খেলতে না দেওয়া। এই কারণে উইলিয়ান ও কুটিনহোকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছিলেন তিতে। প্রথম গোলের নেপথ্যে ব্রাজিল ত্রয়ী। বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ে অসাধারণ বাঁক খাওয়ানো শটে গোল করলেন কুটিনহো। এর আগেও বহু বার এ ভাবে গোল করেছেন বার্সেলোনা তারকা। তাই গোলটা দেখে বিস্মিত হইনি। আমি মুগ্ধ হয়েছি ওঁর খেলার ধরন দেখে। বার্সেলোনায় মেসির সঙ্গে খেলার ফলে অনেক বদলে গিয়েছেন কুটিনহো। আগের চেয়ে অনেক পরিণত এবং ভয়ঙ্কর। মেসির পরে এ বার অনেকেই নেমারের সমালোচনা শুরু করবেন। ভুললে চলবে না, নেমার সদ্য চোট সারিয়ে মাঠে ফিরেছেন। পুরোপুরি ছন্দে ফিরতে ওঁর একটু সময় লাগবেই।

এগিয়ে গিয়ে ভেবেছিলাম, বড় ব্যবধানে জিতব। কারণ, বলের দখল বেশি ছিল নেমারদেরই। তা সত্ত্বেও ম্যাচটা ব্রাজিল জিততে পারল না। ৫০ মিনিটে রক্ষণের সামান্য ভুলে সুইৎজারল্যান্ডের মিডফিল্ডার স্টিভন জুবের বক্সের মধ্যে থেকে কার্যত বিনা বাধায় হেড করে গোল শোধ করেন। যদিও গোলের পরে মিরান্দা রেফারির কাছে অভিযোগ করছিলেন, জুবের হেড করার আগে তাঁকে ধাক্কা মেরেছিলেন। আমার কিন্তু রিপ্লে দেখে মনে হয়নি যে, ফাউল ছিল।

প্রশ্ন উঠতে পারে ২০ মিনিটের মধ্যে এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কেন জিততে পারল না ব্রাজিল? আমার মতে, দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের ছকে খেলেই বাজিমাত করেছে সুইৎজারল্যান্ড। তিতে ভাবতেও পারেননি, তাঁর দেখানো পথে হেঁটেই ব্রাজিলের জয়ের স্বপ্ন ভেঙে দেবেন জারদান শাকিরিরা।

ব্রাজিলের বিরুদ্ধে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলল সুইৎজারল্যান্ড!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন