প্রথম বার প্লে-অফে রাশিয়া। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম প্লে-অফে নামার সামনে রাশিয়া। গ্রুপ পর্ব থেকে এর আগে কখনও এ রকম কৃতিত্ব দেখিয়ে রাশিয়া পরের রাউন্ডে উঠতে পারেনি। শেষ বার হয়েছিল সোভিয়েত জমানায়। ১৯৮৬ সালে। তাই রবিবার স্পেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার এই লড়াই ঐতিহাসিক।
কতটা সুযোগ আছে রাশিয়ার জেতার এই ম্যাচে?
‘‘জিততে পারলে মির্যাক্ল হবে,’’ বলেছেন রাশিয়ার স্ট্রাইকার আর্তেম জুউবা। তবে আমাদের সবারই পা কিন্তু বাস্তবের মাটিতেই রয়েছে। গ্রুপ পর্বে দুটো মাঝারি মানের দলের বিরুদ্ধে জয়ের পরে, উরুগুয়ের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের কাছে যে ০-৩ হেরে গিয়েছে রাশিয়া, সেটা মাথায় রয়েছে। ছোটখাট ভুলগুলোরও মাশুল গুনতে হয়েছে ওই ম্যাচে। সুয়ারেস আর কাভানি দেখিয়ে দিয়েছেন, ওরা কত উঁচু মানের ফুটবলার। স্পেনও খুব কঠিন প্রতিপক্ষ।
যাই হোক, রবিবারের ম্যাচে রাশিয়া কিন্তু আরও একটু জোর পেয়েই মাঠে নামবে। দু’জন খুব গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার আলেকজান্ডার গোলোভিন এবং মারিয়ো ফের্নান্দেস প্রথম একাদশে ফিরছেন। উরুগুয়ের বিরুদ্ধে দু’জনেই ছিলেন না। বাইশ বছর বয়সি গোলোভিন খুব প্রতিভাবান এবং রাশিয়ার ফুটবলে দ্রুত নাম করছেন। প্রতি দিনই আমরা জল্পনা শুনি, জুভেন্তাসে সই করতে যাচ্ছেন গোলোভিন। চেলসি আর অন্যবড় বড় ক্লাবও গোলোভিনের উপর আগ্রহ দেখাচ্ছে। আন্দ্রেই আর্শাভিনের পরে দ্বিতীয় রুশ ফুটবলার হিসেবে ইউরোপের নামি ক্লাবে সই করতে পারেন গোলোভিন। আর্সেনালের তারকা ছিলেন আর্শাভিন। পাশাপাশি ব্রাজিলের মারিয়ো ফের্নান্দেস বিশ্বকাপে রাশিয়ার হয়ে নামা প্রথম বিদেশি ফুটবলার। ২০১২ থেকে তিনি রাশিয়ায় খেলছেন। মারিয়ো খুব ভাল ফুটবলার। দলের জন্য অপরিহার্য।
ইতিহাস বলছে স্পেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার রেকর্ড ভাল নয়। ১০ বারেরও বেশি মুখোমুখি হলেও মাত্র এক বার জিতেছে রাশিয়া। তাও বহু কাল আগে। এমনকী রুশ ফুটবল ইতিহাসে সেরা টুর্নামেন্ট, মানে ২০০৮ ইউরোতেও দুটো হারের মুখে পড়তে হয়েছিল স্পেনের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে। গ্রুপ পর্বে ১-৪ আর সেমিফাইনালে ০-৩।
এ দিকে, রাশিয়ার ফুটবলে সফলতম কোচ গাস হিডিঙ্ক শিবিরে এসে ফুটবলারদের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন। হয়তো এটা দলের জন্য সৌভাগ্য আনতে পারে।
রাশিয়ার দুটো সুবিধে আছে এই লডাইয়ে। খেলাটা হবে লুঝনিকি স্টেডিয়ামে। দেশের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামে। প্রায় ৮০ হাজার দর্শকাসনের মধ্যে অধিকাংশই রাশিয়ার সমর্থক থাকবে। এটা সাহায্য করতে পারে। দ্বিতীয় সুবিধে, দলের উপর বিন্দুমাত্র কোনও চাপ না থাকা। যদি রাশিয়া হেরেও যায়, দলের কোনও ফুটবলারকে কেউ দোষারোপ করবে না। আর যদি ম্যাচটা জিতে যায়, তা হলে সবাই জাতীয় নায়ক হয়ে উঠবে।