প্রস্তুতি: শনিবার ইন্দ্রপতনের দিনেই স্পেনের অনুশীলনে আন্দ্রে ইনিয়েস্তা। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নামছেন আজ। ছবি: গেটি ইমেজেস
মাঠে থাকবেন এগারো জন রুশ। আর গ্যালারিতে হাজার হাজার সমর্থক। তাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে জেতার কাজটা মোটেই সহজ বলে মনে করছেন না স্পেনের মিডফিল্ডার থিয়াগো আলকানতারা।
রাশিয়া ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে স্পেনের হয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে এসেছিলেন আলকানতারাই। তাঁর সাফ কথা, ‘‘আমরা কিন্তু কোনও বিশেষ এগারো জনের বিরুদ্ধে খেলব না। খেলব একটা দেশের বিরুদ্ধে। পুরো দেশটাই আমাদের হারাতে মাঠে থাকবে। তাই অত সহজে জিতে যাব যাঁরা ভাবছেন তাঁরা ভুল ভাবছেন।’’
রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের গ্রুপে স্পেনকে তাদের চেনা ছন্দে খেলতে দেখা যায়নি। প্রথম ম্যাচ তারা ৩-৩ ড্র করেছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালের বিরুদ্ধে। ইরানের বিরুদ্ধেও যথেষ্ট স্নায়ুর চাপে ভুগেছেন জেরার পিকেরা। তাই জয়ও এসেছে নামমাত্র গোলে। এমনকি মরক্কোর সঙ্গে ২-১ জিতলেও সেই ম্যাচেও দারুণ কিছু খেলেননি আন্দ্রে ইনিয়েস্তারা। ফুটবল পণ্ডিতেরা অবশ্য বলছেন, বিশ্বকাপ শুরুর মুখে কোচ য়ুলেন লোপেতগি বরখাস্ত হওয়ায় স্পেন দলটার এক সময় টালমাটাল অবস্থা দাঁড়িয়েছিল। দলের ভিতরকার ঝামেলার জন্যই নাকি প্রত্যাশিত ছন্দে দেখা যায়নি স্পেনকে।
সেখান থেকে অবশ্য নক-আউট পর্বে উঠে আসাটাকেই বিরাট কিছু মনে করছেন অনেকে। কিন্তু স্পেনের ডিফেন্স নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। সঙ্গে তিন ম্যাচে পাঁচ গোল হজম করা স্পেনের গোলরক্ষক দাভিদ দ্য হিয়াকে নিয়েও উঠছে নানা প্রশ্ন। অবশ্য দ্য হিয়ার উপযুক্ত বিকল্পও নেই স্পেন দলে। তাই রাশিয়ার বিরুদ্ধেও গোলে দ্য হিয়া থাকবেন ধরে নেওয়া যায়। নতুন কোচ ফের্নান্দো ইয়েরো সম্ভবত রক্ষণে আস্থা রাখবেন দানি কার্ভাহাল, সের্খিয়ো র্যামোস, জেরার পিকে আর জোর্দি আলবার উপর।
রাশিয়া ম্যাচ নিয়ে ইয়েরো বলেছেন, ‘‘আমাদের দেখতে হবে রাশিয়া যাতে কোনও ভাবে গোল করার বেশি সুযোগ তৈরি করতে না পারে। এই বিশ্বকাপ নিয়ে স্বপ্ন একটা আমরাও দেখছি। কিন্তু সেই স্বপ্নকে সত্যি করতে হলে আমাদের আত্মসমালোচনা করতেই হবে। দেখতে হবে ম্যাচে কখনও যেন আমাদের মধ্যে প্রাণশক্তির অভাব না দেখা দেয়। না হলে কিন্তু প্রতিপক্ষ দল যে কোনও সময় স্পেনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেবে।’’
অতীতে স্পেন ফেভারিট হিসেবে খেলতে নেমে কিন্তু আগে তিন বারই নক-আউট পর্যায়ে আয়োজক দেশের কাছে হেরেছে। যার মধ্যে ২০০২ বিশ্বকাপের তারা দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে টাইব্রেকারে ৩-৫ গোলে হেরেছিল। তার আগে ১৯৩৪ সালে তারা হেরে যায় আয়োজক দেশ ইতালির কাছে। ১৯৫০ সালে বিশ্বকাপ হয়েছিল ব্রাজিলে। সে বার তারা আয়োজক দেশের কাছে হারে ১-৬ গোলে। ইয়েরো অবশ্য এই ধরনের পরিসংখ্যানকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁর কথা, ‘‘জিততে হলে জেতার মতো খেলতে হবে। সেটাই আসল। অন্য কোনও তথ্যে আমার উৎসাহ নেই। তবে আমি জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’’
এ দিকে স্পেন শিবিরের খবর, ইয়েরো তাঁর আক্রমণে রবিবার মার্কো আসেনসিয়োর জায়গায় খেলাতে পারেন দাভিদ সিলভাকে। স্পেনের ডিফেন্ডার দানি কার্ভাহাল বলেছেন, ‘‘আসেনসিয়ো খেলবেই তা নিশ্চিত নয়। কোচ এখনও কিছু চূড়ান্ত করেননি। তবে যেই খেলুক, আমাদের জিততেই হবে। এটা বাঁচা-মরার প্রশ্ন। আর নক-আউটের খেলাগুলোও অন্য রকম হবে।’’