গোলকিপারেরা নিয়ম ভাঙায় বিতর্ক

রবিবার রাতটা ছিল গোলকিপারদেরই। রাশিয়ার ইগর আকিনফেভ এবং ক্রোয়েশিয়ার দানিয়েল সুবাসিচ দলকে জিতিয়ে জাতীয় নায়ক হয়ে গিয়েছেন। ডেনমার্কের ক্যাসপার স্কেমিশেল শেষ পর্যন্ত দলকে না জেতাতে পারলেও তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত অনেকেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৫:২৪
Share:

চর্চায়: দাঁড়ানোর কথা গোল লাইনে (চিহ্নিত অংশের ওপর)। কিন্তু কিক মারার আগেই বেরিয়ে এসেছেন গোলকিপার। যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। ছবি: এএফপি

বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর লড়াই শুরু হতে না হতেই নতুন এক বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। টাইব্রেক বিতর্ক। দেখা যাচ্ছে, রবিবার রাতের দু’টো ম্যাচে যে ১৯টি পেনাল্টি কিক নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ১৫টি কিক নেওয়ার আগেই গোলকিপাররা গোল লাইন ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

Advertisement

রবিবার রাতটা ছিল গোলকিপারদেরই। রাশিয়ার ইগর আকিনফেভ এবং ক্রোয়েশিয়ার দানিয়েল সুবাসিচ দলকে জিতিয়ে জাতীয় নায়ক হয়ে গিয়েছেন। ডেনমার্কের ক্যাসপার স্কেমিশেল শেষ পর্যন্ত দলকে না জেতাতে পারলেও তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত অনেকেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এই তিন গোলকিপারই টাইব্রেকারের সময় নিয়ম ভেঙেছেন। যে পনেরোটি কিকের সময় গোলকিপাররা লাইন ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন, তার মধ্যে সাতটি বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা। সুবাসিচ এবং স্কেমিশেলই নিয়ম ভেঙেছেন বেশি। একটি মাত্র কিক বাদে বাকি সব ক’টি কিক নেওয়ার সময় গোললাইন ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তাঁরা।

স্পেনের দাভিদ দা হিয়া এক বারই মাত্র লাইন ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু তিনি ওই কিক বাঁচাতে পারেননি। স্কেমিশেল আবার শুধু টাইব্রেকের সময়ই নয়, ম্যাচ চলাকালীন ক্রোয়েশিয়া যখন পেনাল্টি পায়, তখনও একই কাজ করেছিলেন। লুকা মদ্রিচের মারা কিক তিনি বাঁচিয়ে দেন ঠিকই, কিন্তু পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে, লাইন ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন ডেনমার্কের গোলকিপার।

Advertisement

এই নিয়ে ফিফার আইন কী বলছে? আইনে পরিষ্কার লেখা আছে, ‘‘পেনাল্টি কিক নেওয়ার সময় গোলরক্ষকদের গোল লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে কিকারদের দিকে মুখ করে। যত ক্ষণ পর্যন্ত না কিক নেওয়া হচ্ছে, গোলকিপারদের গোল লাইনেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। কিক নেওয়ার পরে তারা এগিয়ে যেতে পারে।’’ কিন্তু দেখা গিয়েছে, আইনকে অগ্রাহ্য করেই কিক নেওয়ার আগে গোলকিপারেরা এগিয়ে গিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে রেফারিদের উচিত ছিল, কিকটিকে বাতিল করে নতুন করে কিক নেওয়ার জন্য বলতে। কিন্তু রেফারিরা এ সব কিছুই করেননি। প্রশ্ন উঠছে, এতগুলো ঘটনা কী ভাবে রেফারিদের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে? ফিফার নিয়মাবলিতে আরও বলা আছে, গোলকিপার যদি এ ভাবে আইন ভাঙেন, তা হলে রেফারি তাঁকে হলুদ কার্ড দেখাতে বাধ্য। অনূর্ধ্ব-১৭ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে এই অপরাধের জন্য কার্ড দেখেছিল আয়ারল্যান্ডের গোলরক্ষক। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড হওয়ায় তাকে মাঠ ছাড়তে হয়। টাইব্রেকারের সময় তাই গোলকিপারের বদলে অন্য পজিশনের ফুটবলারকে গোলকিপিং করতে হয়। সেই ম্যাচ হেরে যায় আয়ারল্যান্ড।

রাশিয়া বিশ্বকাপে ভিডিয়ো প্রযুক্তির (ভার) সাহায্য নিয়ে নানা ক্ষেত্রে পেনাল্টি দিয়েছেন রেফারিরা। কিন্তু সমস্যা হল, টাইব্রেকারের সময় ‘ভার’ ব্যবহার করার কোনও ব্যবস্থা নেই। যার ফলে পুরোটাই নির্ভর করছে ওই মুহূর্তে রেফারির সিদ্ধান্তের ওপর। কিন্তু রেফারি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে
ব্যর্থ হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন