মহড়া: নতুন পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছেন মুলার। ছবি: গেটি ইমেজেস
কেন তাঁকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে হবে? পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন জার্মানির তারকা ফুটবলার থোমাস মুলার। যাঁর পরের ম্যাচে শুরু থেকে খেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জার্মানির সংবাদ মাধ্যম।
জার্মানির বিশ্বকাপ ঘাঁটি সোচিতে সাংবাদিকরা মুলারকে প্রশ্ন করেন, ‘‘শনিবার আপনাকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে হলে কি হতাশ হবেন?’’ সঙ্গে সঙ্গে মুলার উত্তর দেন, ‘‘অবশ্যই। আমি কেন? যে কোনও ফুটবলারই বোধহয় হতাশ হয়ে পড়বে।’’
প্রথম ম্যাচেই হারের পরে জার্মানি শিবির এখন বেশ চাপে। তার ওপর দলের কয়েক জন ফুটবলারের পারফরম্যান্স নিয়ে উঠছে অনেক প্রশ্ন। যেমন মেসুত ওজ়িল। তাঁর দলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তনরাও। তাঁকে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে না দেখে ও মাঠে গা-ছাড়া ভাব দেখানোয় দলের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এ বার মুলারকে নিয়েও উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
যদিও জার্মান কোচ ওয়াকিম লো-র হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতা তেমন নেই। দেশের হয়ে গত চার বছরে দশ গোল দেওয়া মুলারকে হয়তো প্রথম এগারো থেকে বাদ দেবেনও না। কিন্তু শনিবার ফের যদি জিততে না পারে জার্মানি, তা হলে লো-র দলবাছাই নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।
লুঝনিকি স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে জার্মানির আক্রমণ ভাগের ডানদিকে দিশাহারা মুলারকে দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। জার্মানি প্রতিপক্ষের গোলমুখ খুলতে না পারার পিছনে অনেকে তাঁর ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন। যে সমালোচনার জবাবে মুলার বলেছেন, ‘‘গোল করার মতো অবস্থায় আমি সে দিন একবারও আসিনি। তা হলে আমাকে বসানোর প্রশ্ন উঠছে কেন?’’
কথাটা অবশ্য ভুল বলেননি মুলার। আসলে কোচ কার্লো আঞ্চেলোত্তির তত্ত্বাবধানে বায়ার্ন মিউনিখে ২০১৬-১৭ মরসুম ভাল না যাওয়ার পরে য়ূপ হাইঙ্কেস কোচ হিসেবে আসার পরে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে ফর্মে ফিরে আসেন মুলার। যে খেলা তিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারছেন না বলে ধারণা জার্মান সংবাদমাধ্যমের।
বিশ্বকাপ কভার করতে যাওয়া জার্মান সংবাদিকদের অনেকের বক্তব্য, আক্রমণের ছক ঠিকমতো সাজিয়ে মুলারের জন্য জায়গা তৈরি করা দরকার। আর এখানেই জার্মান কোচ লো-র বড় পরীক্ষা বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে কোন দিকটা দেখবেন লো? এক হারেই জার্মানির অন্দরমহলে যে ভাবে অশান্তি শুরু হয়ে গিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, তা অবাক করার মতো।
দু’দিন আগে মানুয়েল নয়্যারদের বৈঠক নাকি বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। দলের শিবিরে ভাগও দেখা দিয়েছে বলে খবর। বেয়ার্নের খেলোয়াড়রা এক দিকে এককাট্টা। তাঁদের সঙ্গে আছেন টনি খোস। ওজ়িল, জেহোম বোয়াটেং, স্যামি খেদিয়ারা, জুলিয়ান ড্রাক্সলাররা একসঙ্গে অন্য টেবলে বসে দুপুর ও রাতের খাওয়া সারছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে। এ সবই অস্বীকার করে মুলার বলেন, ‘‘আমরা যদি নিজেদের মধ্যে এমন দলাদলি করি, তা হলে আর পরের দুটো ম্যাচ জিততে হবে না। বিশ্বাস করুন, আমরা এখন এক হয়ে জয়ের কথা ছাড়া কিছুই ভাবছি না।’’ দলের মধ্যে ভাগাভাগি নিয়ে মুলার বলেন, ‘‘২০১২-র ইউরো কাপে এমন হয়েছিল। বেয়ার্ন আর ডর্টমুন্ডের ফুটবলাররা দু’দলে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। এখন সে সব কিছুই নেই।’’ তবে তিনি যাই বলুন, শনিবার সুইডেনকে না হারানো পর্যন্ত জার্মান শিবির সম্পর্কে এই ধরণাটা পাল্টে দিতে পারবেন না মুলাররা।