মেয়ে আউট হতে আঁধার কৌর ঘরে

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালে হরমনপ্রীত পঞ্চাশ পূর্ণ করার পরে ফোনে আনন্দবাজারকে হরমন্দর বলছিলেন, ‘‘বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে নামছে মেয়ে, অথচ ওর কোনও চাপ নেই। উল্টে আমাদের বলল, তোমরা টেনশন কোরো না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৫:৪২
Share:

৮০ বলে ৫১ রান করে ফিরে যান হরমনপ্রীত।

পঞ্জাবের মোগা জেলায় ভুল্লার পরিবারের কেউ-ই শনিবার সারারাত ঘুমোতে পারেননি উৎকণ্ঠায়। মেয়ে হরমনপ্রীত কৌর যে ভারতের হয়ে লর্ডসে বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামছেন।

Advertisement

ভোরবেলা উঠেই তাই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গ্রামের গুরুদ্বারে প্রার্থনা করতে ছুটেছিলেন হরমনপ্রীতের বাবা হরমন্দর সিংহ ভুল্লার। তাতেও অবশ্য উদ্বেগ কমেনি তাঁর। তবে দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ইংল্যান্ড থেকে মেয়ে ফোন করতেই চাপমুক্ত হয়ে যান হরমন্দর!

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালে হরমনপ্রীত পঞ্চাশ পূর্ণ করার পরে ফোনে আনন্দবাজারকে হরমন্দর বলছিলেন, ‘‘বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে নামছে মেয়ে, অথচ ওর কোনও চাপ নেই। উল্টে আমাদের বলল, তোমরা টেনশন কোরো না। কথা দিচ্ছি— আমরাই ট্রফি নিয়ে ফিরব।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘আমার মেয়ের মানসিকতাটাই এ রকম। প্রবল চাপের মধ্যেও কখনও ভেঙে পড়তে দেখিনি ওকে।’’

Advertisement

মেয়ের সঙ্গে কথা বলে যে স্বস্তিটা ফিরেছিল, তা ফের উধাও হয়ে যায় ইংল্যান্ড টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ায়। হরমন্দর বলছিলেন, ‘‘হরমন বলেছিল, টস জিতে আগে ব্যাটিং করে বেশি রান তুলে চাপে ফেলা যাবে ইংল্যান্ডকে। কিন্তু এ দিন টস হেরে গেলাম আমরা।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘তবে দারুণ বল করেছে আামাদের বোলাররা। বিশেষ করে আপনাদের বাংলার ঝুলন গোস্বামী তো অসাধারণ। ওর জন্যেই ইংল্যান্ডকে ২২৮ রানে আটকে রাখা সম্ভব হয়েছিল।’’

কিন্তু মাত্র ৩৫ রানে ভারতের দুই উইকেট পড়ে যেতেই হারের আতঙ্কে ভুগতে শুরু করে দিয়েছিলেন মোগাবাসী-রা। ভারতীয় তারকা ব্যাটসম্যানের বাবা বললেন, ‘‘গত এক সপ্তাহ ধরেই আমাদের গ্রামে উৎসবের আবহ। সেমিফাইনালে দুরন্ত জয়ের পরে আত্মীয়রাও সকলে আমাদের গ্রামে চলে এসেছেন। প্রথম দু’টো উইকেট পড়ে যেতেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরো গ্রাম। কিন্তু আমার মনে হচ্ছিল, হরমনপ্রীত নামলে ছবিটা বদলে যাবে।’’

পুনম রাউতের সঙ্গে জুটি বেঁধে ধীরে ধীরে ভারতকে ম্যাচে ফেরাতে শুরু করেন হরমনপ্রীত। ৯৫ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন তাঁরা। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পুনরাবৃত্তির স্বপ্ন যখন দেখছেন হরমন্দর, তখনই বিপর্যয়। ৮০ বলে ৫১ রান করে আলেক্স হার্টলের বলে ট্যামি বোমন্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান হরমনপ্রীত। তখনও আশা ছাড়েননি হরমন্দর। বলছিলেন, ‘‘এখনও হাতে অনেক উইকেট আছে। আশা করছি, বাকিরা ভারতকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়তে সফল হবে।’’

হরমন্দরের স্বপ্ন অবশ্য অপূর্ণই থেকে গেল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন