ঋদ্ধি: ৭৪ ন.আ.। বুধবার ইডেনে। -শঙ্কর নাগ দাস
প্রজ্ঞান ওঝাকে নিয়ে কি মোহ কাটছে বাংলার? বোধহয় তাই। বুধবার তাঁকে মাঠের বাইরে রেখেই অসমের বিরুদ্ধে টিম নামাল বাংলা। সঙ্গে দলে আরও দুটো পরিবর্তন। যাঁকে টি-টোয়েন্টির দলে আনা নিয়েই প্রশ্ন ছিল, সেই অভিমন্যু ঈশ্বরনকেও এগারোর বাইরেই রেখে দেওয়া হল। অন্য দিকে আবার মারকুটে ব্যাটসম্যান দেবব্রত দাসের হ্যামস্ট্রিং। তাঁকেও এ দিন দলে রাখা যায়নি। এতগুলো পরিবর্তন করে দল নামিয়েও অনায়াসে দশ উইকেটে ম্যাচ জিতল বাংলা।
দেবব্রতর ব্যাটিং ঝড়ের প্রয়োজন হয়নি এ দিন। আর কাউকেই দরকার হয়নি। বাংলার দুই ওপেনার-উইকেটকিপার মিলেই জয়ের রান তুলে নিলেন অনায়াসে। ঋদ্ধিমান সাহা ও শ্রীবৎস গোস্বামী। এঁদের দেড়শোর পার্টনারশিপই অসমের বিরুদ্ধে বাংলাকে দশ উইকেট জিতিয়ে দিল। বুধবার ইডেনে জাতীয় টি টোয়েন্টির আঞ্চলিক পর্বে।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অসম ১৪৭ টার্গেট দেওয়ার পর বাংলা ব্যাট করতে নামলে ঋদ্ধি (৪৫ বলে ৭৪) ও শ্রীবৎস (৫২ বলে ৭১) এই রান তুলে নেন। বাংলা যখন ম্যাচ জেতে, তখনও চার ওভার বাকি। আগের দিনের চেয়ে কিছুটা সহজ উইকেট পাওয়ায় যে এ দিন ব্যাট করতে কোনও অসুবিধা হয়নি, তা ঋদ্ধিমান সাহাই জানিয়ে দিলেন। জেতার পর বললেন, ‘‘কাল যতটা কঠিন উইকেট ছিল, আজ ততটা পাইনি। বল ভালই ব্যাটে আসছিল। তাই শট নিতে অসুবিধা হয়নি।’’ অন্য দিকে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া নিয়ে শ্রীবৎস বলছেন, ‘‘ঋদ্ধিমান আর আমি তো আগেও ওয়ান ডে-তে ওপেন করেছি। তাই আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালই। আজ সেটাই কাজে লাগল।’’
ঋদ্ধি ১১টা চার ও একটা ছয় মারেন। শ্রী দশটা চার হাঁকান। এর আগে ক্যাপ্টেন ও কিপার বি অরুণ কার্তিকের ৭৬-এর ইনিংস ছাড়া অসমের আর কারও ব্যাটে তেমন রান ছিল না। সায়ন ঘোষ তিন উইকেট নেন। দিন্দা, কণিষ্ক শেঠ ও ঋত্বিক একটা করে উইকেট নেন।
এ দিন প্রজ্ঞান ওঝার জায়গায় আমির গনিকে খেলানো হয়। ঈশ্বরনের জায়গায় খেলেন অভিষেক রামন ও ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় খেলেন দেবব্রতর জায়গায়। ত্রিপুরার বিরুদ্ধে মঙ্গলবারের ম্যাচে মোটেই ভাল করতে পারেননি ওঝা। বরং নিজের শেষ ওভারে দলকে হারের দিকে টেনে নিয়ে যান। যা শেষ পর্যন্ত সামলান দিন্দা। এ বার রঞ্জি মরসুমেও ভাল বল করতে পারেননি ওঝা। তাই এই মরসুমে তাঁকে বাংলায় রাখা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বুধবার ম্যাচের শেষ দিকে মাঠে দাঁড়িয়েই পরের দুই ম্যাচের দল নিয়ে আলোচনা সেরে নেন সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, যুগ্মসচিব অভিষেক ডালমিয়া, নির্বাচকদের প্রধান দেবাঙ্গ গাঁধী এবং দুই নির্বাচক অরূপ ভট্টাচার্য ও মদন ঘোষ। সেই বৈঠক সেরে দেবাঙ্গ ইডেন থেকে বেরনোর সময় জানিয়ে গেলেন, পরের দুই ম্যাচের দল অপরিবর্তিতই থাকবে। তবে সিএবি-র অন্য সূত্রের খবর বৃহস্পতিবার সকালে দেবব্রত-র এমআরআই রিপোর্ট পাওয়ার পরই পরের দুই ম্যাচের টিম চূড়ান্ত হবে। বাংলার পরের দুই ম্যাচ শুক্রবার ওড়িশা ও রবিবার ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে।
ওঝাকে পরের দুই ম্যাচে রেখে দেওয়া হচ্ছে কি না, তা নিয়ে কিছু বলতে চাইলেন না নির্বাচকরা। সিএবি সূত্রের খবর, তাঁকে একটা শেষ সুযোগ নাকি দেওয়া হতে পারে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: অসম ১৪৬-৯ (বি অরুণ কার্তিক ৭৬ ন.আ., সায়ন ৩-৩০) বাংলা ১৫০-০ (ঋদ্ধিমান ৭৪ ন.আ., শ্রীবৎস ৭১)।