দেবব্রত ও রোশন। ব্যাটে-বলে সফল।
ম্যাচ-২, রান-৫৫৩!
ম্যাচ-১, উইকেট-৯!
বাংলার ক্রিকেট ময়দানে শুক্রবার এই দু’টো ঘটনাই ঘটে থাকল। প্রথমটা ঘটালেন মোহনবাগানের দেবব্রত দাস। সিএবি লিগে। গত ম্যাচে ৩১৫ করার পর শুক্রবার নেতাজি সুভাষ ইন্সটিটিউটের বিরুদ্ধে করলেন ১৭২ বলে ২৩৮! দু’ম্যাচে মিলিয়ে সাড়ে পাঁচশোর উপর রান যাঁর হয়ে গেল। দ্বিতীয় কীর্তির কারিগর আবার রোশন সিংহ। যিনি অজয় ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রফির ফাইনালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালকে একা জিতিয়ে দিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালের বিরুদ্ধে। মাত্র ১০ রান দিয়ে ন’-ন’টা উইকেট নিয়ে!
রোশন নতুন চমক। কিন্তু দেবব্রত তা নন। একটা সময় বাংলার অন্যতম সেরা সম্ভাবনা ধরা হত এই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানকে। এখন বিস্ফোরণের সঙ্গে জুড়েছে ধারাবাহিকতা। তাঁর রানের ভিতের উপরই নেতাজি সুভাষের বিরুদ্ধে ৫৯৫-৫ তুলল মোহনবাগান। অপরাজিত সেঞ্চুরি করলেন ঋদ্ধিমান সাহাও (১০৭)। জাতীয় দল থেকে ছিটকে যাওয়ার পর যিনি এই প্রথম কোনও ম্যাচে নামলেন। যদিও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু আজ দেবব্রত।
‘‘আমি মনে করি না এখনও ধারাবাহিক আমি। আরও এ রকম খেলতে হবে,’’ বলছিলেন দেবব্রত। যিনি নিজের ক্রিকেট কেরিয়ারে মেঘ থেকে রোদ ফেরাতে এ বছর আলাদা অফ সিজন শিডিউল করেছিলেন। এক-দেড় মাস ফিটনেস ট্রেনিং। তার পর ব্যাটে হাত। দেহরাদুনে অভিমন্যু ঈশ্বরনের বাবার অ্যাকাডেমিতেও চলে গিয়েছিলেন একা, প্রায় মাসখানেকের জন্য। রূপান্তর ঘটেছে, কিন্তু পিছনে খাটনিটাও ছিল। ‘‘রঞ্জি খেলতে চাই। কিন্তু তার জন্য আমাকে এ রকম খেলে যেতে হবে। যাতে নির্বাচকদের নজরে পড়া যায়,’’ বলে দিলেন দেবব্রত।
আর রোশন? কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঁ হাতি পেসার ফাইনালে ধ্বংস করে দিলেন বিপক্ষকে। প্রথমে ব্যাট করে কলকাতা তুলেছিল ২৩৫। রঞ্জিত সাউ করেন ৫০। জবাবে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা ইনিংসটাই শেষ হয়ে যায় ৫০ রানে!
নেপথ্যে— রোশন সাউয়ের ন’উইকেট। মাত্র দশ রানে ন’উইকেট!
হিসেবটাও ভয়ঙ্কর। ৫.১-১-১০-৯। শোনা গেল, রিষড়ার ছেলে মিচেল জনসনের অন্ধ ভক্ত। নিজেও বাঁ হাতি পেসার। কিন্তু জনসনের মতো গতিতে নয়, রোশন বিপক্ষকে এ দিন ভাঙেন সুইংয়ে। ‘‘ন’টা উইকেটের মধ্যে ছ’টা বোল্ডই করেছি। দু’টো এলবিডব্লিউ আর একটা ক্যাচ,’’ পরে বলছিলেন রোশন। তবে নিজের কৃতিত্বের চেয়েও বাঁ হাতি পেসার বড় করে দেখছেন টিমের কৃতিত্বকে। বলেও দিলেন, ‘‘আমার বিশ্ববিদ্যালয় যে আবার টুর্নামেন্ট জিতল, সেটাই বড় কথা।’’