আনাজ বিক্রি করে পদক ভারোত্তোলনে

দারিদ্র তাঁকে দমাতে পারেনি। বাজারে আনাজ বিক্রি করেও যে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পদক জেতা যায়, তা ফের প্রমাণ করলেন কালীগঞ্জ ব্লকের বল্লভপাড়ার বাসিন্দা অপু সাহা।

Advertisement

সন্দীপ পাল

কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০০
Share:

প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে মধ্যপ্রদেশে অপু সাহা। নিজস্ব চিত্র

দারিদ্র তাঁকে দমাতে পারেনি। বাজারে আনাজ বিক্রি করেও যে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পদক জেতা যায়, তা ফের প্রমাণ করলেন কালীগঞ্জ ব্লকের বল্লভপাড়ার বাসিন্দা অপু সাহা।

Advertisement

সপ্তম আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসেছিল মধ্যপ্রদেশে। সেখানে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে ব্রোঞ্জ জিতেছেন অপু। ওই প্রতিযোগিতায় শনিবার ১১৫ কিলোগ্রাম বিভাগে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন তিনি।

সোমবার অপু বাড়িতে ফেরার পরে আনন্দে মেতে উঠেছে তাঁর পরিবার, আত্মীয় পরিজনেরা। এটাই প্রথম নয়, এর আগেও ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন অপু। সে বার চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসেছিল ইন্দোনেশিয়ার বালিতে। সেখানেও দ্বিতীয় হয়ে ভারতের মুখ উজ্বল করেছিলেন তিনি।

Advertisement

তবে তাঁর সাফল্যের পথ মসৃণ ছিল না। বাবা পেশায় আনাজ বিক্রেতা। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে আনাজ বিক্রির ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন অপু। সংসার চালাতে সাইকেল নিয়ে রোজ কাটোয়ার বাজারে যান তিনি। সেখানে আনাজ বিক্রি করে বাড়ি ফেরেন। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পদক জেতার পরেও সেই রুটিন বদলায়নি। হাড়ভাঙা পরিশ্রমের মাঝে প্রস্তুতির জন্য সময় বার করা যেমন কঠিন, তেমনই দুষ্কর ভারোত্তোলনের বিশাল খরচ বহন করা। অপুর সেই লড়াইয়ের কথা এলাকার সকলেই জানেন। কালীগঞ্জের বিডিও নাজির হোসেন বলেন, ‘‘আমাদের যতটা সামর্থ্য ছিল, ব্লকের তরফে ওঁকে সাহায্য করেছি। ওঁর মতো প্রতিভাবান ভারোত্তোলক আমাদের ব্লকে আছেন, সেটাই তো গর্বের বিষয়।’’

২০১৪ সালে পঞ্জাবে আয়োজিত জাতীয় ভারোত্তলন ফেডারেশনের প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হন অপু। এর পরে স্থানীয় ক্লাব ও জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে ২০১৫ সালে পাড়ি দেন সৌদি আরবে। সেখানে আন্তর্জাতিক স্তরের চ্যাম্পিয়ানশিপে মেলে রুপো। ২০১৬ সালে ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতাতেও মেলে ব্রোঞ্জ। ২০১৭’তে কলম্বোয় অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতাতেও মিলেছে রুপো। ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে যাওয়ার আগে আর্থিক কারণে সমস্যা পড়েছিলেন। সে বারও সাহায্য পেয়েছিলেন জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন