উত্তাল সাও পাওলো।
পেলে— তুমি প্রতারক, শতকের সেরা প্রতারক!
রোনাল্ডো লুইস নাজারিও ডি লিমা— তুমি শত্রু, গোটা ব্রাজিলের শত্রু!
বিশ্বফুটবলে এঁরা দুই আজও বন্দিত। পেলেকে সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফুটবলার ধরা হয়। রোনাল্ডোর মতো স্ট্রাইকারও ফুটবল-পৃথিবীতে খুব কমই এসেছে। কিন্তু বন্দিত দুই ব্রাজিলীয় মহাতারকা ফুটবলার নিজ দেশেই এখন বিক্ষোভকারীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু! তাও বিশ্বকাপের ঠিক পঁচিশ দিন বাকি।
সাও পাওলো এয়ারপোর্টের বাইরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ বাঁধছে। লুঠ করে আতসবাজি সংগ্রহ করে সে সব ছুড়ে মারা হচ্ছে পুলিশের দিকে। শুধু তাই নয়, দেশের কিংবদন্তি ফুটবলারদের উদ্দেশ্যেও ব্যানারে লিখে ফেলা হচ্ছে বাছা বাছা বিশেষণ, অপমানজনক সব মন্তব্য।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ।
বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই সাও পাওলোয় নতুন র্টামিনাল খোলা হয়েছে। যেখানে শুক্রবার রাতের দিকে হামলা চালায় পঞ্চাশ জন বিক্ষোভকারী। বিমানবন্দরের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা দু’টো গাড়িকে আক্রমণ করা হয়। বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও পাল্টা স্টান গ্রেনেড ছুঁড়তে শুরু করে। এমনিতেই বৃহস্পতিবার তুমুল বিক্ষোভে প্রায় ‘নারকীয়’ অবস্থা সৃষ্টি হয় ব্রাজিলে। সাও পাওলো, মানাওস, ব্রাসিলিয়া, পোর্তো আলেগ্রে, বেলো হরাইজন্তে-র মতো প্রধান প্রধান শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে প্রায় দশ হাজার মানুষ। সে সব তো শান্ত হয়নি, উল্টে শুক্রবার রাতে তা আরও বাড়ে। সঙ্গে চলতে থাকে পেলে এবং রোনাল্ডোর নামে গালিগালাজ। যা দেখে কারও কারও বিশ্বাস করাই শক্ত ঠেকছে, আদৌ এ সব ব্রাজিলেই ঘটছে কি না? যে দেশ কি না ফুটবলের ধাত্রীভূমি হিসেবে পরিচিত। কোনও কোনও মহল থেকে আবার বলা হচ্ছে, পুরো ব্যাপারটাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ঘটানো হচ্ছে। কিছু সুবিধেবাদী লোকজন নাকি বিশ্বকাপের সময় দেশের সমস্যাকে তুলে ধরে ফায়দা তুলতে চাইছে। বলা হচ্ছে, টিকিটের চাহিদা রীতিমতো আকাশছোঁয়া। ম্যাচের টিকিটের জন্য এক কোটি আবেদন জমা পড়েছে। ২৩ লক্ষ টিকিট ইতিমধ্যে বিক্রিও হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তা হলে ব্রাজিলীয়রা ফুটবল নিয়ে অসূয়া দেখাচ্ছেন, বলা যাবে কী ভাবে? পেলে বা রোনাল্ডোকেও বা এঁরা ‘প্রতারক’ মনে করবেন কী ভাবে?