আরসিজিসি মাতালেন ভূমিপুত্র শঙ্কর। —নিজস্ব চিত্র
ট্রফিটা বাঁ হাতে বুকের কাছে আঁকড়ে রাখা। ডান হাতে অবিরাম অভিনন্দনের করমর্দন সামলাচ্ছেন। বিকেল চারটের পর খাওয়ার ফুরসত পেলেন। ম্যাকলিয়ড রাসেল ট্যুর চ্যাম্পিয়নকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘিরে সংবাদমাধ্যমের ভিড়। কিন্তু জয়ীর মুখে নেই বিরক্তি বা ক্লান্তির লেশ। বরং ক্রমশ চওড়া প্রাপ্তির হাসিটা। শঙ্কর দাস যে দেখিয়ে দিলেন, রূপকথাও সত্যি হয়!
“ট্রফি মা-কে উত্সর্গ করছি। মা-ই আমার আদর্শ!” উদ্ভাসিত সদ্য পিজিটিআই বর্ষসেরার মুখ।
আরসিজিসিতে অর্জুন অটওয়াল থেকে গগনজিত্ ভুল্লার, তাবড় তারকাদের হারিয়ে একত্রিশ বছরের শঙ্কর দাসের একটা বৃত্ত পূর্ণ হল এ দিন। যার শুরু বছর একুশ আগে রয়্যাল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাবেই। দশ বছরের বাচ্চা দুই দাদা, ক্যাডি অপু আর মানিক দাসের হাত ধরে আসত কোর্সে। গাছের ডাল কুড়িয়ে প্লাস্টিকের বল মেরে চলত ‘গল্ফ’। প্লেয়ারদের বল কুড়িয়ে আনলে মিলত দু’টাকা। শঙ্কর বলছিলেন, “ক্লাস সিক্সের পর আর লেখাপড়াই করিনি। স্বপ্ন দেখতাম এই কোর্সে আমিও জিতছি।” বাস্তবের জমিতে পা রাখা মৃদুভাষীর প্রত্যয়ের জোরে স্বপ্ন সত্যি হল। কতটা কঠিন ছিল লড়াইটা? শঙ্করের কথায়, “প্রচুর টাফ! সমুদ্র পার করার মতো।” গোটা পরিবারই এ দিন কোর্সে হাজির। তবে স্ত্রী রূপা আর অসুস্থ মা অরুণা বাড়িতেই অপেক্ষা করেছেন সুখবরের। শঙ্কর জিতলেন ২৩ লক্ষ ৭৭, ৫০০-র চেক। পিজিটিআই চ্যাম্পিয়নের বছরের আয় পঞ্চান্ন লক্ষ। অথচ একটা সময় গল্ফের সরঞ্জাম কেনারও ক্ষমতা ছিল না। পেশাদার ট্যুরে দু’বছরে পাঁচ খেতাব জেতা শঙ্কর বলছিলেন, “ক্লাব পাশে না থাকলে পারতাম না। সদস্যরা প্রচণ্ড সাহায্য করেছেন।”
কলকাতা ম্যারাথনে চ্যাম্পিয়ন কবিতা
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
এ যেন প্রচারের বাইরে থেকে খেতাব জয়ের গল্প! মহিলাদের হাফ ম্যারাথনে জাতীয় রেকর্ড তাঁর দখলে। কিন্তু রবিবার টাটা স্টিল আয়োজিত ‘কলকাতা ২৫ কে’ দৌড়ের আসরে সেই কবিতা রাউত মিডিয়ার নজরে সে ছিলেন না। কবিতার মতোই পুরুষদের বিভাগে সার্ভিসেসের নীতেন্দ্র সিংহ রাও-ও ছিলেন আড়ালে। কিন্তু রবিবার সকালে ২১.৫৪ লক্ষ টাকা পুরস্কারমূল্যের এই কলকাতা ম্যারাথনে (ম্যারাথন না হলেও এই নামেই প্রচলিত) কামাল করে চ্যাম্পিয়ন হলেন দু’জনেই। এ দিন সাতসকালে রেড রোডের স্টার্টিং পয়েন্টে বসে গিয়েছিল তারকার মেলা। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর জিত্-এর সঙ্গে হাজির ছিলেন টলিউডের আবীর চট্টোপাধ্যায়, নুসরত জাহান, টোটা রায়চৌধুরীরাও। তবে এরা কেউই পুরো দৌড়াননি। দৌড়ান কেবল বলিউডের প্রতিনিধি রাহুল বসু। আনন্দ দৌড়ে রাজনৈতিক জগতের অরূপ বিশ্বাস, সুলতান আহমেদ, মহম্মদ সেলিমদের সঙ্গে হাজির ছিলেন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্ল, অশোক দিন্দাও। সিএবি-র তরফে কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে-র নেতৃত্বে একশো জন প্রতিনিধি থাকলেও চিমা ছাড়া প্রাক্তন ফুটবলারদের কাউকেই যদিও দেখা যায়নি রেড রোড চত্বরে।