আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার টেনিস লিগের জন্য নাদাল, সেরেনাদের নিলাম হওয়ার পর আটচল্লিশ ঘণ্টাও কাটেনি। কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বচ্ছতা নিয়ে। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটগুলোয় বিভিন্ন টেনিসপ্রেমী সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞদের অনুযোগ উপচে পড়েছে। কেন আইপিটিএলের প্রধান উদ্যোক্তা মহেশ ভূপতি টুর্নামেন্টের আয়োজন নিয়ে এত লুকোছাপা করছেন। মহেশ সত্যিই এ ব্যাপারে একেবারে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন। জানতে চাইলে শুধু বলছেন, আয়োজনের প্রত্যেকটা খুঁটিনাটি ব্যাপার ঠিক সময়ে জানানো হবে। ঠিক সবাই জানতে পারবেন।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রবিবার দুবাইয়ের ওবেরয় হোটেলের রুদ্ধদ্বার কক্ষে নিলাম হওয়া নিয়ে। আইপিএলের মতো বা রিল্যায়ান্স-আইএমজি-র আসন্ন ভারতের পেশাদার ফুটবল লিগের নিলামের মতো কেন আইপিটিএলের নিলামও টিভিতে সরাসরি দেখানো হয়নি! মার্কি প্লেয়ার-সহ চার দলের আঠাশ জন টেনিস তারকার কে কত দর পেলেন সেটাও কেন পরিষ্কার ভাবে জানানো হচ্ছে না? মুম্বই, ব্যাঙ্কক, সিঙ্গাপুর, দুবাইচারটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের মালিক কারা? শহরভিত্তিক দলগুলোর নাম কী? লোগো কেমন দেখতে? জার্সির রং কী? এ রকম হাজার প্রশ্ন আপাতত টেনিসমহল জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে? কিন্তু উত্তর দেওয়ার কেউ নেই!
ইদানীং ভারত এবং অন্য দেশে বিভিন্ন খেলার পেশাদার লিগের মূল আয়ের উৎস যেটা আইপিটিএল-ও সেই টিভিস্বত্ব থেকেই প্রধানত টুর্নামেন্টের খরচ তুলবে। কিন্তু সেটার অঙ্কই বা কত তাও সংগঠকদের তরফ থেকে বিন্দুমাত্র আঁচ দেওয়া হয়নি এখনও। টুর্নামেন্টের নিলাম, খেলার দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাওয়ার পরেও। স্কাই স্পোর্টসের তরফে মূলত আইপিটিএলের খবরাখবর দেওয়া হচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন স্কাই টিভি পেয়ে থাকতে পারে টিভিস্বত্ব। এমনকী অ্যান্ডি মারে, পিট সাম্প্রাসরা চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে তাঁদের এজেন্টরা এ সব ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন উদ্যোক্তাদের কাছে। সে জন্যই মারে অত দেরিতে, নিলাম পর্বের মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে সই করেন। আন্দ্রে আগাসি তো নিলামে বিক্রি হওয়ার পরেও জানিয়েছেন, তাঁর পছন্দের মতো দিনে ম্যাচ না ফেললে তিনি আইপিটিএল থেকে সরে দাঁড়াতেও পারেন। বছরের শেষে নভেম্বর-ডিসেম্বরের ছুটির দিনগুলোয় তিনি স্টেফি গ্রাফ আর বাচ্চাদের ছেড়ে এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্যে খেলে বেড়াতে পারবেন না। আগাসিকে মানানোও এখন মহেশের একটা বাড়তি সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আইপিটিএলের অনুমতি অবশ্য এশীয় টেনিস ফেডারেশন (এটিএফ) দিয়ে দিয়েছে। এআইটিএ প্রেসিডেন্ট অনিল খন্না-ই এশীয় টেনিস সংস্থার শীর্ষকর্তা। তিনি ফোনে বললেন, “টুর্নামেন্টের প্লেয়ারদের পেমেন্টের চল্লিশ পার্সেন্ট ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি হিসেবে জমা দেওয়ার ব্যাপারে মহেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এটিএফ-কে। নিয়ম মতো এশীয় টেনিস সংস্থার অনুমতি নিয়ে আইপিটিএল করতে হবে। সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে ওই গ্যারান্টি মানি জমা দেওয়ার একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। তার মধ্যে টাকাটা জমা পড়া চাই।”
অর্থাৎ, সব মিলিয়ে আইপিটিএল মূর্তির শুধু কাঠামোটায় খড় বাঁধা হয়েছে। মাটি, রং, চক্ষুদান—অনেক কর্মই এখনও বাকি!