দাবার বিশ্বযুদ্ধ

আনন্দ হয়তো শেষ গেমে টেনে নিয়ে যাবে

ভিশিকে নিয়ে দাবামহলে যেন গেল গেল রব উঠেছে! শুক্রবার দশ নম্বর গেমও ড্র (৩২ চালে) হওয়ায় আমাদের ছেলে কোণঠাসা হয়ে পড়ল বলেও দিচ্ছেন কেউ কেউ। কার্লসেন আর আনন্দ এখন ৫.৫-৪.৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে। শেষ দু’রাউন্ড ড্র রাখলেই টানা দ্বিতীয় বার বিশ্বখেতাবের মুকুট উঠবে কার্লসেনের মাথায়। আনন্দকে তাই বাকি দুটো গেমে হারলে তো চলবেই না। বরং একটায় জিততেই হবে লড়াইয়ে ফিরতে।

Advertisement

দিব্যেন্দু বড়ুয়া

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৪১
Share:

ভিশিকে নিয়ে দাবামহলে যেন গেল গেল রব উঠেছে! শুক্রবার দশ নম্বর গেমও ড্র (৩২ চালে) হওয়ায় আমাদের ছেলে কোণঠাসা হয়ে পড়ল বলেও দিচ্ছেন কেউ কেউ। কার্লসেন আর আনন্দ এখন ৫.৫-৪.৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে। শেষ দু’রাউন্ড ড্র রাখলেই টানা দ্বিতীয় বার বিশ্বখেতাবের মুকুট উঠবে কার্লসেনের মাথায়। আনন্দকে তাই বাকি দুটো গেমে হারলে তো চলবেই না। বরং একটায় জিততেই হবে লড়াইয়ে ফিরতে।

Advertisement

শুক্রবার একটা সময় সুবিধেজনক অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও কার্লসেনকে হারাতে না পারাটা দাবার বিশ্বযুদ্ধে ভিশির বিপক্ষে গেল বলেই অনেকে ধরছেন। আমি কিন্তু বলব এখনও পর্যন্ত আনন্দের যা পারফরম্যান্স তাতে মহাযুদ্ধ শেষ গেম পর্যন্ত যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। গত বার কিন্তু এই দশ নম্বর রাউন্ডেই খেতাবি লড়াই থেমে গিয়েছিল। কার্লসেন জিতেছিল ৬.৫-৩.৫-এ। সেই তুলনায় এ বার ভিশিকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে। ওর তুখোড় ওপেনিংয়ের সামনে কার্লসেনকে খুব কষ্ট করেই এঁটে উঠতে হচ্ছে। অন্তত শেষ তিন গেমে সে রকমই ইঙ্গিত পেলাম।

অনেকে প্রশ্ন করবেন তা হলে এ দিন কেন ভিশি সুবিধেজনক জায়গায় থেকেও জিততে পারল না? আসলে এই পর্যায়ের দাবায় প্রতিপক্ষ বড়সড় ভুল না করলে ফায়দা তোলা খুব কঠিন। ষষ্ঠ গেমে যেমন কার্লসেন একটা বড় ভুল করে ফেলেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ভিশি সেটারও সদ্ব্যবহার করতে পারেনি। পরে ও বলেছিল ‘উপহার’ আশা করেনি বলেই কার্লসেনের ভুলটা ধরতে পারেনি। এ দিন আনন্দ সাংবাদিক বৈঠকে বলেছে, ওর নিজের খেলায় কোনও খুঁত নজরে পড়েনি। কার্লসেন দারুণ ডিফেন্স করায় ড্র ছাড়া উপায় ছিল না।

Advertisement

আসলে ম্যাচের ঠিক এই পর্যায়ে দু’জনের উপরই অসম্ভব চাপ রয়েছে। এক জনের চাপ লিড কমানোর। অন্য জনের লিড ধরে রাখার। তবে কার্লসেনের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কিন্তু খুব একটা ভাল ঠেকছে না আমার। সপ্তম গেমে তো বোর্ডে একটা সময় চোখ বন্ধ করে বেশ কিছুক্ষণ চিন্তা করতে থাকায় কার্লসেন ঘুমিয়েই পড়ল কি না তা নিয়ে কটাক্ষ করা পর্যন্ত শুরু হয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল সাইটগুলোয়।

আনন্দও নিশ্চয়ই ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছে। যেটা ওর একটা সুবিধে হয়ে উঠতে পারে পরের গেমগুলোয়। শুরুর দিকে কার্লসেনকে যতটা চনমনে লাগছিল এখন কিন্তু ততটা লাগছে না। চুয়াল্লিশের আনন্দের বিরুদ্ধে কি তা হলে তেইশের কার্লসেনেরই ফিটনেস লেভেল ঠিক নেই? শনিবার পঞ্চম রেস্ট ডে।

রবিবার সাদা ঘুঁটিতে কার্লসেন। নিশ্চিত ভাবেই চেষ্টা করবে দীর্ঘ সময় গেমটা টেনে নিয়ে যাওয়ার। যাতে শেষ গেমে ভিশি ক্লান্ত হয়ে যায়। কার্লসেনের ওই ফাঁদে পা না দিয়ে ভিশি মরণকামড়টা দিতে পারে কি না সেটাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন