নতুন বোর্ড প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে তৈরি সিএবি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
ভারতীয় ক্রিকেট সাম্রাজ্যের সিংহাসনে যখন ফের জগমোহন ডালমিয়া, তখন বাংলার ক্রিকেটে হয়তো ফের ‘আচ্ছে দিন’ আসছে। প্রত্যাশা যে রকম, ইঙ্গিতও তেমনই। কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য নাকি সুখবর আনতে চলেছেন নবনিযুক্ত বোর্ড প্রেসিডেন্ট।
কী সেই সুখবর?
ভারতে অনুষ্ঠেয় ২০১৬-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ-এর ফাইনাল হয়তো ইডেনে। ২৯ বছর পর শহরে কোনও বিশ্বকাপের ফাইনাল হতে পারে। ক্রিকেটের নন্দনকাননে শেষ বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের ফাইনাল হয়েছিল ১৯৯৩-এ হিরো কাপে। সেও হয়ে গেল ২১ বছর। আর চার দেশীয় ‘ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপ’-এর ফাইনাল হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। দুই দশকের খরা হয়তো কাটতে চলেছে ডালমিয়ার উদ্যোগে। ডালমিয়া বোর্ড প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে শহরে ফেরার পরের দিনই তাঁর শিবির থেকে এমন ইঙ্গিতই পাওয়া গেল।
সামনের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ভারতে। শুরু ১১ মার্চ। ভারতীয় বোর্ডে সব কিছু ঠিকঠাক চললে এবং আইসিসি-র সিলমোহর পড়লে ৩ এপ্রিল ফাইনাল হতে পারে ইডেনে। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আইসিসি। যার চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসনের সঙ্গে এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক পর্যায়ে কথা হয়েছে বলে ডালমিয়া শিবিরের খবর।
তাদের যুক্তি, সর্বাধিক দর্শকাসনের জন্যই ইডেনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল হওয়া উচিত। একই যুক্তিতে ২০১১-র বিশ্বকাপ ফাইনালও ইডেন করতে চেয়েছিল, কিন্তু তৎকালীন বোর্ড প্রধানদের সিএবি-র প্রতি বিমাতৃসুলভ মনোভাবের জন্য সেই আবেদন মঞ্জুর হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে এখনও। তাই এ বার যখন বোর্ড প্রেসিডেন্ট বাংলার ঘরের লোক, তাই সুযোগ নষ্ট করতে চায় না সিএবি। কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বললেন, “বিশ্বকাপ যখন ভারতে, তার ফাইনাল ইডেনেই হওয়া উচিত। অস্ট্রেলিয়ায় শুনলাম, সর্বাধিক দর্শকাসনের জন্য চলতি বিশ্বকাপের ফাইনাল মেলবোর্নে হচ্ছে।”
ডালমিয়ার বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার উৎসব পালনে নানা রঙের আলো ও তাঁর ছবি-সহ ফ্লেক্স ও তোরণে ইডেন সেজে উঠলেও মঙ্গলবার তিনি ইডেনে আসতে পারলেন না। চেন্নাইয়ে তিন দিন ধরে বোর্ডের সভার ধকল ও সোমবার রাতে বিমানবন্দরে ফিরে সিএবি-র আধা ও মেজো কর্তাদের ‘অভ্যর্থনায়’ বহরে বিধ্বস্ত তিনি। ধাক্কাধাক্কিতে হাতে চোটও পেয়েছেন। রাতেও বাড়িতে ফেরার পর ক্ষতস্থান থেকে রক্ত পড়েছে। মঙ্গলবার সারা দিন আলিপুরের বাড়িতে বিশ্রামে ছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। তাঁর মোবাইলও ছিল বন্ধ। সিএবি-তে তাঁর ঘনিষ্ঠ কর্তারাও তাঁকে ফোন করে পাননি বলে জানালেন। বোর্ডের নব নির্বাচিত কর্তাদের হয়তো মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ডেকে বৈঠকে বসবেন ডালমিয়া। শারীরিক কারণেই যে ঘনঘন অন্য শহরে যেতে পারবেন না, তা তাঁর টিমের সদস্যদের জানানোয় তাঁরাও অধিকাংশ বৈঠক এখানে এসে করতে রাজি হয়েছেন বলে সূত্রের খবর। অর্থাৎ এখন থেকে কলকাতাই ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের রাজধানী।