ছকের ধাঁধা নিয়ে ব্রাজিল যাচ্ছেন ইতালির কোচ প্রান্দেলি।
একটা নয়, দুটো নয়, তিন-তিনটে ফর্মেশনে টিমকে খেলানোর স্ট্র্যাটেজি করে ফেলেছেন সিজার প্রান্দেলি। এবং ইতালির কোচ আশাবাদী, তাঁর টিম ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলবে।
“দলের খেলা পাল্টাতে পারাটা খুব জরুরি একটা সম্পদ। তাই আমরা দু’তিনটে ফর্মেশন নিয়ে কাজ করছি। ৪-৩-১-২, ৪-৫-১ আর ৩-৫-২,” এ দিন ইতালির এক সংবাদপত্রকে বলেছেন প্রান্দেলি। ৫৬ বছরের কোচ সঙ্গে যোগ করেছেন, “৪-৩-৩ ছকটা নিয়ে কাজ করা একটু কঠিন। ব্যাকে তিন জন খেলানোটা খুব রক্ষণশীল বিকল্প নয়। উইঙ্গারের জায়গায় ওখানে সেন্টারব্যাক বা ডিফেন্সিভ ফুলব্যাক খেলালে কিন্তু এই ফর্মেশনটা হারের অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে।”
অন্যান্য দেশের কোচেরা যেখানে আপাতত গ্রুপ পর্ব নিয়ে ভাবছেন, প্রান্দেলি কিন্তু সেখানে ব্রাজিলে পা দেওয়ার আগে থেকেই ফাইনালের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। এবং চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তিনি বলে দিচ্ছেন, “গ্রুপ টেবলের দিকেই আমি তাকাচ্ছি না। আমি জানি, নকআউটে উঠতেই হবে আমাদের। তার পর কী ভাবে ফাইনালে ওঠা যায়, তার জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। আমার লক্ষ্য খুব সহজ— ফাইনালে ওঠা। তার পর দেখা যাক কী হয়!”
পাশাপাশি ইতালি টিমে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিশেষ আচরণবিধি চালু করা হয়েছে। যার নিয়মে নিজেদের ক্লাবের হয়ে খেলার সময় যদি কোনও ফুটবলার অভব্য আচরণ করে, তা হলে জাতীয় দলের বিবেচনায় তাকে রাখা হবে না। চার বছর আগে তৈরি এই বিশেষ ‘কোড’ নিয়ে খুব খুশি প্রান্দেলি। তবে তিনি এটাও মনে করেন যে, পরিস্থিতি বিচার না করে স্রেফ আচরণবিধি মেনে কাউকে বাদ দেওয়াটা অন্যায়। “এই কোডের জন্য আমাদের ফুটবল-পরিবেশে অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে চোখ-কান বুজে কোডের নিয়ম না মেনে আমি নিজে কী দেখেছি বা শুনেছি, তার বিচারেই সব সিদ্ধান্ত নিই,” বলেছেন প্রান্দেলি।
ইতালীয় ফুটবল নিয়ে তাঁর মত, “খারাপ আচরণ, অখেলোয়াড়োচিত ফুটবল— এ সব শুধু ইতালিতেই হয়। ভেবে দেখুন, বিশ্বের অন্য কোনও দেশে কিন্তু এখন এ সব হয় না। হ্যাঁ, আমি টাফ ফুটবল চাই। কিন্তু সেটা যেন ন্যায্যও হয়।” প্রান্দেলির আরও সংযোজন, “১২০ মিনিট খেলার পর পেনাল্টি নেওয়ার মতো ধৈর্য যদি এক জন প্লেয়ারের থাকে, তা হলে নব্বই মিনিটেও সেই একই রকম ধৈর্য ধরতে হবে তাকে। যাতে সে কারও সঙ্গে হাতাহাতি না করে। বা কারও কাছে মার খাওয়ার অভিনয় না করে।”
প্রান্দেলির মতে ইতালির সবচেয়ে বড় সমস্যা ফুটবল মাঠে নেতার অভাব। “আমাদের ফুটবলে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো প্লেয়ারের খুব অভাব। কোনও প্লেয়ারকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে যখন, তখন তাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো নেতা আমাদের টিমে নেই। এ রকম নেতারই দরকার আমাদের। যে কারও মুখের উপর বলতে পারবে যে, তুমি ভুল করছ। মাঝে মধ্যে কোচকেই এই কাজটা করতে হয়।”