এটা অস্তিত্বের লড়াই, বলে দিলেন এলকো

ডুডু-র‌্যান্টিদের ফুটবলার জীবনে যা কখনও ঘটেনি তাই ঘটল বৃহস্পতিবার। নাটকে ভরা ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে। সকালে বিদায়ী কোচ আর্মান্দো কোলাসোর কাছে অনুশীলন করলেন। পরামর্শ শুনলেন। আর সন্ধ্যায় নতুন কোচ এলকো সতৌরির সঙ্গে মিলিত হয়ে ছবির পোজ দিল পুরো টিম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৪৫
Share:

এলকোর প্রবেশ। বৃহস্পতিবার লাল-হলুদে। ছবি: উৎপল সরকার।

ডুডু-র‌্যান্টিদের ফুটবলার জীবনে যা কখনও ঘটেনি তাই ঘটল বৃহস্পতিবার। নাটকে ভরা ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে।

Advertisement

সকালে বিদায়ী কোচ আর্মান্দো কোলাসোর কাছে অনুশীলন করলেন। পরামর্শ শুনলেন। আর সন্ধ্যায় নতুন কোচ এলকো সতৌরির সঙ্গে মিলিত হয়ে ছবির পোজ দিল পুরো টিম।

সবথেকে কাহিল অবস্থা সহকারী কোচ সুজিত চক্রবর্তীর। ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে দুই কোচের পাশে দাঁড়িয়ে সব কথায় মাথা নাড়তে হল তাঁকে।

Advertisement

আড়াই দিন রাজারহাটের এক হোটেলে আত্মগোপন করে থাকার পর লাল-হলুদের ‘ডিটেকটিভ’ কর্তাদের সঙ্গে এসে মিডিয়ার সামনে ধরা দিলেন আর্মান্দোর উত্তরসূরি ডাচ কোচ। এবং জানিয়ে দিলেন, “ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাব সবসময়ই চ্যাম্পিয়ন হতে চায়। কিন্তু তিন মাসে কি করতে পারব তা ঈশ্বরই জানেন।”

আর্মান্দোর লজ্জাজনক বিদায়কে ‘সহানুভূতির চোখে’ দেখলেও, গোয়ান কোচ সম্পর্কে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি প্রাক্তন ইউনাইটেড কোচ। কর্তারা তাঁর আসা নিয়ে লুকোচুরি খেললেও মাত্র চার মাসের জন্য চুক্তি করে আসা অকপট এলকো জানিয়ে দিলেন, তিনি কলকাতা ডার্বি দেখেছেন টিভিতে। “পরপর ম্যাচ। তিন মাস তো প্রি-সিজন করতে হয়। সেই সময়টাই পাব। খেলতে হবে প্রচুর ম্যাচ। অনেক ফুটবলারকে চিনিই না। তা সত্ত্বেও এসেছি। এটা অস্তিস্ত্বের লড়াই হিসাবে দেখছি,” বলে দেন লাল-হলুদের নতুন কোচ। মোহনবাগান কথা বলেও যাঁকে দু’মাস আগে নেয়নি। নিয়েছিল সঞ্জয় সেনকে। ইউনাইটেড থেকে বিদায় নেওয়ার পর যিনি কলকাতায় আসার জন্য মুখিয়েও ছিলেন। এলকোর ঝকঝকে মুখ-চোখ দেখে মনে হচ্ছিল প্রত্যাশিত সুযোগ পেয়ে তিনি কতটা আপ্লুত।

তবে হোটেলে ‘বন্দি’ থাকলেও সময় নষ্ট করেননি বুদ্ধিমান-চৌকস ডাচ কোচ। হোমওয়ার্ক করে এসেছিলেন সাংবাদিক সম্মেলনে। জানেন, দু’দিনের মধ্যেই উড়ে যেতে হবে এএফসি কাপ খেলতে। সে জন্য বিপক্ষ মালয়েশিয়ান টিমের দু’টো ভিডিও ইতিমধ্যেই জোগাড় করে ফেলেছেন এলকো। যা আর্মান্দো জমানায় ভাবাই যেত না। “আমি পাসিং ফুটবল খেলতে পছন্দ করি। কিন্তু অনুশীলনের সুযোগ নেই। একদিনে তো আর তাজমহল তৈরি হয়নি। সময় লেগেছে। মিডিয়া-ক্লাব কর্তা সবার সাহায্য চাই সাফল্য পেতে। সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করব। আমার রক্ত এখন লাল-হলুদ।” যা শুনে পাশে বসে গর্বিত ভঙ্গী নিয়ে হাসতে দেখা যায় ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদারকে। যিনি চব্বিশ ঘণ্টা আগেই বলেছিলেন, “এলকো, ফেলকো, টেলকো কাউকে আমরা আনিনি। চিনিও না।”

ইউনাইটেডে থাকাকালীন বিশ্বকাপার কার্লোস হার্নান্ডেজের সঙ্গে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল এলকোর। এ দিন সে জন্যই সম্ভবত বারবার বলছিলেন, “ফুটবলারদের ব্যক্তিগত মনস্তত্ত্ব জানি না এখনও। তবে আমার সুবিধা ডুডু-র‌্যান্টির মতো দু’জন ভাল স্ট্রাইকার আছে হাতে। সে জন্য ৪-৪-২ ফর্মেশনই আমার পছন্দ, সেটাকে একটু বদলাবদলি করে নিতে হবে। সময় তো দিতেই হবে,” বলেই ঘাড় ঘুরিয়ে তিনি দেখে নেন পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা ডুডুদের।

কথা দিয়েও এলকোর হাতে ফুল তুলে দিতে আসেননি আর্মান্দো। কর্তাদের তুলে দেওয়া ফুল নিয়েই আপাতত আজ শুক্রবার থেকে মাঠে নেমে পড়তে হচ্ছে ‘কম্পিউটার কোচ’-কে। এলকো যে তাঁর এই নামটি নিজেই বলে দিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন