দেশকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে দেশের জার্সি তুলে রাখলেন ফিলিপ লাম। ৩০ বছরের জার্মান অধিনায়ক দেশের হয়ে ১১৩টা ম্যাচ খেলেছেন। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং বুন্দেশলিগা ট্রফি জিতেছেন লাম। তাঁর অবসরের খবরে গোটা দেশ আশ্চর্য হয়ে গেলেও তাঁর এজেন্ট রোমান গ্রিল জানিয়েছেন, সত্যি সত্যিই অবসর নিচ্ছেন লাম।
“বিশ্বকাপ জিতেছি, এটাই অবসর নেওয়ার সঠিক সময় আমার জন্য। বেশ কয়েক দিন আগেই ঠিক করে ফেলেছিলাম, ব্রাজিল বিশ্বকাপ আমার শেষ টুর্নামেন্ট হতে চলেছে। আমি ভাগ্যবান যে কেরিয়ারের শেষ আর বিশ্বকাপ ট্রফি জয় একই সঙ্গে হল,” জার্মান ফুটবল সংস্থার ওয়েবসাইটে একটা খোলা চিঠিতে জানিয়েছেন লাম। তিনি আরও জানিয়েছেন, গোটা মরসুমই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেছিলেন।
বিশ্বজয়ের পরের দিন সকালে ব্রেকফাস্ট করতে করতেই তাঁর সিদ্ধান্তের কথা কোচ জোয়াকিম লো-কে জানিয়েছিলেন লাম। আর এ দিন সকালে তাঁর অবসরের কথা জানান জার্মান ফুটবল সংস্থার (ডিএফবি) প্রেসিডেন্ট উল্ফগ্যাং নিয়ের্সবাখকে। যার পরে ডিএফবি প্রেসিডেন্ট বলেন, “দেশের প্রতি লামের বিরাট অবদান। ওকে সব কিছুর জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছি।” সঙ্গে যোগ করেছেন, “দশ বছর ওর সঙ্গে কাজ করে প্রচুর আনন্দ পেয়েছি। চেষ্টা করেছিলাম যদি ওর সঙ্গে কথা বলে অবসরের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেওয়াতে পারি। কিন্তু খুব তাড়াতাড়িই বুঝে গেলাম, তার উপায় নেই। লাম শুধু অসাধারণ প্লেয়ারই নয়, ও একজন রোল মডেল।” আর জার্মান কোচ লো বলেছেন, “ধন্যবাদ ফিলিপ, সব কিছুর জন্য। ও এমন এক জন ফুটবলার যার কাছে সাফল্যের চেয়ে বড় কিছু হয় না।”
আধুনিক ফুটবলের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার হিসেবে নিজেকে তর্কাতীত ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন লাম। জার্মান ফুটবলের রেনেসাঁর পিছনে অন্যতম নায়কও তিনি। কোচ জোয়াকিম লো-র পাশাপাশি জার্মান বিশ্বকাপ অভিযানে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন লামও। তাঁর অবসরের খবর শুনে ফুটবলপ্রেমী জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেলও বলেছেন, “জাতীয় দলের জন্য লাম যা যা করেছে, তার জন্য ওকে গভীর শ্রদ্ধা জানাতে চাই।” ফ্রিৎজ ওয়াল্টার (১৯৫৪), ফ্রাঞ্জ বেকেনবাউয়ার (১৯৭৪) এবং লোথার ম্যাথেউজের (১৯৯০) পরে চতুর্থ জার্মান অধিনায়ক হিসেবে গত রবিবার বিশ্বকাপ জেতেন লাম। জার্মান ফুলব্যাক অবশ্য ক্লাব ফুটবল এখনই ছাড়ছেন না। বুন্দেশলিগা চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ক্লাব স্তরে খেলবেন তিনি। ২০১৮ পর্যন্ত বায়ার্নের সঙ্গে চুক্তি আছে লামের। তাঁর আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল ২০০৪ সালে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে। ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে মাইকেল বালাকের কাছ থেকে দেশের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নেন লাম।