কংক্রিটের পিচ চাইলেন মুরলী, ওয়াকার খুঁজছেন জেলার প্রতিভা

শহর ছাড়ার আগে একজন চাইলেন কংক্রিটের পিচ। আর এক জন চাইলেন সুঠাম চেহারার ফিট ক্রিকেটার। বঙ্গ ক্রিকেটের স্পিন ও পেস বিভাগে উৎকর্ষ বাড়াতে আপাতত এটাই প্রেসক্রিপশন মুথাইয়া মুরলীধরন এবং ওয়াকার ইউনিসের। উপমহাদেশে ফাস্ট ও স্পিন বোলিংয়ের এই দুই কিংবদন্তির প্রস্তাব শোনার পর তা দ্রুত কার্যকর করতে মঙ্গলবারই নীল-নকশা চূড়ান্ত সিএবির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৪ ০২:১৮
Share:

শিবিরের শেষ দিন মুরলীর সঙ্গে সৌরভ। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

শহর ছাড়ার আগে একজন চাইলেন কংক্রিটের পিচ। আর এক জন চাইলেন সুঠাম চেহারার ফিট ক্রিকেটার। বঙ্গ ক্রিকেটের স্পিন ও পেস বিভাগে উৎকর্ষ বাড়াতে আপাতত এটাই প্রেসক্রিপশন মুথাইয়া মুরলীধরন এবং ওয়াকার ইউনিসের।

Advertisement

উপমহাদেশে ফাস্ট ও স্পিন বোলিংয়ের এই দুই কিংবদন্তির প্রস্তাব শোনার পর তা দ্রুত কার্যকর করতে মঙ্গলবারই নীল-নকশা চূড়ান্ত সিএবির।

ঠিক কী চাইছেন মুরলী? সিএবি সূত্রে খবর, বাংলার স্পিনারদের পারফরম্যান্স ঝকঝকে করে তুলতে কংক্রিটের পিচ চেয়েছেন মুরলী। অগস্ট মাসে শহরে এসে এই কংক্রিটের পিচেই ইরেশ-গনিদের পরখ করতে চান তিনি। সিএবি কর্তাদের মুরলী বলে গিয়েছেন, “উঠতি বয়সে কংক্রিটের পিচে অনুশীলনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি। যে স্পিনার কংক্রিটের পিচে বল ঘোরাতে পারবে, সে বিশ্বের সব পিচেই টার্ন পাবে।” মুরলীর প্রস্তাব অনুযায়ী কংক্রিটের পিচ বানানোর চিন্তাভাবনা করছে সিএবি। যত দিন তা না হয়, তত দিন বিকল্প হিসেবে সল্টলেকে নিজের অ্যাকাডেমির কংক্রিটের পিচ ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্য স্বয়ং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে খবর।

Advertisement

শুধু নেট কিংবা প্র্যাকটিসেই মন দেওয়া নয়। ক্রিকেটারদের ম্যাচ প্র্যাকটিসেও জোর দিয়েছেন মুরলী। তার জন্য অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটারদের দু’দিনের ম্যাচ খেলাতেও বলেছেন তিনি।

এ দিনই কলকাতা ছেড়ে গেলেন মুরলীধরন। তার আগে সকালে বাংলার ২৮ জন স্পিনারকে নিয়ে নেটে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান। ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেই আমির গনি, ইরেশ সাক্সেনা, সৌরাশিসদের প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ট্রেনিং শিডিউল এবং ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়ার পরামর্শ দেন বিশ্বজয়ী এই প্রাক্তন শ্রীলঙ্কান অফস্পিনার। ক্রিকেটারদের বলে যান, “তিন মাস পরে এসে দেখতে চাই কতটা নিখুঁত বোলিং তোমরা করছ।” সঙ্গে টার্ন করানো নিয়ে স্পিনারদের বেশি ভাবতে বারণ করেছেন মুরলী। তাঁর দাওয়াই, “আগামী তিন মাস নিখুঁত হওয়ার দিকে মন দাও। বাকি দায়িত্ব আমার।” নিশানা নিখুঁত করার জন্য একটা স্টাম্প রেখে করে বোলিং অনুশীলনের জন্যও স্পিনারদের বলে গিয়েছেন মুরলী। ইতিমধ্যেই তিন জুনিয়র ক্রিকেটারকে পছন্দ হয়েছে তাঁর। পরের বার এসে এদের ঘষেমেজে নেওয়ার দায়িত্ব নিজের হাতে রাখবেন বলে এ দিনই সিএবিকে জানিয়েছেন মুরলী।

মুরলীর মতোই সিএবি-র এই ‘ভিশন ২০২০’ নিয়ে রীতিমতো একাগ্র ওয়াকার। তিনি আবার এ দিন নেটের বদলে দিন্দা, শিবশঙ্কর, নীলকণ্ঠ দাসদের ভিডিও অ্যানালিসিসেই সময় দেন। প্রতিটি বোলারকে তুলে দেন প্র্যাকটিস শিডিউলের ফাইল। যা শুরু হবে আগামী সোমবার থেকে।

তবে শিবিরে আসা জোরে বোলারদের বেশির ভাগেরই ফিটনেস নিয়েই সন্তুষ্ট নন ওয়াকার। ক্রিকেটারদের বলেছেন, “ফাস্ট বোলারদের ফিটনেসটাই মূলধন। সেটাকে কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা যাবে না।” এ ব্যাপারে তিনি যে ‘নো কম্প্রোমাইজ’ মনোভাব নেবেন তা ঠারেঠোরে ক্রিকেটারদের বুঝিয়েও দিয়েছেন ‘ভুরেওয়ালা বম্বার’ ওয়াকার। ক্রিকেটারদের তিনি বলেছেন, যারা ফাঁকিবাজি মারবে প্রয়োজনে তাদের বাদ দিয়ে নতুন ক্রিকেটারদের আনা হবে শিবিরে। সেই বিকল্প তালিকা ওয়াকারের হাতে রয়েছে। অগস্টে জেলার সুঠাম চেহারা এবং ফিট বোলারদের ক্যাম্পে চাইছেন এই প্রাক্তন পাক পেসার। সিএবি কর্তাদের তিনি বলেছেন, গ্রাম থেকে তরুণ প্রতিভা তুলে আনতে। যাদের কাঁধের জোর রয়েছে। মুরলীর মতো তিনিও এই ‘র ট্যালেন্ট’ শান দিয়ে নেবেন বলে কর্তাদের জানিয়েছেন। ওয়াকারের এই প্রস্তাব শুনে দেরি করতে নারাজ সিএবি। আগামী দু’-তিন মাসের মধ্যেই জেলায় শিবির করে বোলিং প্রতিভা তুলে আনার পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন