চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে টিকে থাকতে ইস্টবেঙ্গল নির্ভর করে আছে মোহনবাগানের ওপরসবুজ মেরুন সমর্থকরা এটা ভেবে উচ্ছ্বসিত হতেই পারেন। কিন্তু লাল-হলুদ কোচ মোহনবাগান-বেঙ্গালুরু ম্যাচকে এমন কোনও বাড়তি গুরুত্ব দিতে এক্কেবারে নারাজ।
মোহনবাগান সমর্থকদের হতাশ করে দিয়েই সোমবার আর্মান্দো বলে দিলেন, “মোহনবাগান কাকে হারাল বা কার বিরুদ্ধে জিতল, তা নিয়ে ভাবতে যাব কেন? মোহনবাগানের সঙ্গে আমাদের তো আর কোনও খেলাও নেই। আমার ভাবনায় এখন শুধুই পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ মহমেডান। শনিবার ওদের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট না পেলে কিন্তু আবার চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই থেকে ছিটকে যেতে হবে।” পাঁচ বার আই লিগ রয়েছ যাঁর ঝুলিতে, তিনি যে লিগের সিঁড়ি ভাঙার অঙ্ক ভাল কষবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাই, সমর্থকরা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও, বাস্তবের জমিতে দাঁড়িয়ে আর্মান্দো বললেন, “আমি ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই। লিগ চ্যাম্পিয়ান হওয়া বা পাঁচ ম্যাচে জেতার কথা এখন থেকেই ভাবছি না।”
শরীর ভাল নয়। তবু সোমবার সল্টলেকের বাড়িতে বসেই অবনমনের আওতায় থাকা পেন-নবি-লুসিয়োনোদের আটকানোর অঙ্ক কষতে শুরু করে দিয়েছেন গোয়ান কোচ। বললেন, “মহমেডান অবনমনের আওতায় আছে তো কী হল, ওরা কিন্তু ভাল দল। যে দলের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায়, তারা খোঁচা খাওয়া বাঘের চেয়েও হিংস্র হয়ে ওঠে।” কথাগুলো বলার সময় গলায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। তবু সে সবে ভ্রুক্ষেপ নেই দেশের সফলতম ক্লাব-কোচের। রবিবার গুরুত্বপূর্ণ স্পোর্টিং ম্যাচের উত্তেজনা এবং মানসিক চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আর্মান্দো। ইস্টবেঙ্গলের সহ-সচিব চিকিৎসক শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত বললেন, “মানসিক চাপ এবং অসহ্য গরমে ‘হিট স্ট্রোক’ মতো হয়ে গিয়েছিল আর্মান্দোর। তবে এখন ভাল আছেন। ভয়ের কোনও কারণ নেই।”
মহমেডান ম্যাচের আগে আর্মান্দোকে চিন্তায় রেখেছে চোট-আঘাতের দীর্ঘ তালিকা। তবে সৌমিক দে এবং মেহতাব হোসেনের আজ মঙ্গলবার থেকে অনুশীলন শুরু করার কথা। জেমস মোগার বুধবার স্ক্যান হবে। তার পর বোঝা যাবে, কবে মাঠে ফিরতে পারবেন দক্ষিণ সুদানের স্ট্রাইকার। মোগা নিজে অবশ্য বললেন, “আগের চেয়ে আমি অনেক ভাল আছি।” তবে বলজিৎ সিংহ সাইনি, লালরিন্দিকা, অভ্র মণ্ডলদের পারফরম্যান্স অনেকটাই স্বস্তি দিচ্ছে আর্মান্দোকে। সে কথা স্বীকার করে আর্মান্দো নিজেই বললেন, “দলের চোট-আঘাত সমস্যা যেমন রয়েছে, তেমনই অভ্র, বলজিৎ, ডিকারাও তো ভাল খেলছে। ওদের প্রশংসা করতেই হবে।” সঙ্গে যোগ করলেন, “ছেলেদের বলেছি, চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ের চিন্তা মাথা থেকে বের করে দিতে। ওরা মনের আনন্দে খেলুক। ফলের চিন্তা করার দায়িত্ব আমার।”
ফুটবলারদের চাপ মুক্ত করছেন। অথচ নিজে তো বাড়তি চাপ নিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন? প্রশ্ন শুনে একটু যেন রেগেই গেলেন আর্মান্দো। বলে দিলেন, “পাঁচ বার আমার কোচিংয়ে ডেম্পো আই লিগ জিতেছে। আমার আর নতুন করে কীসের চাপ? আর যে কোনও সময়ে মানুষ অসুস্থ হতে পারে। চাপের সঙ্গে এর সম্পর্ক কোথায়?”
এভারেস্টের পথে দেবরাজ: মোহনবাগানের অন্ধ ভক্ত দেবরাজ দত্ত বুধবার সকালে এভারেস্ট অভিযানে বেরোচ্ছেন। তাঁকে উৎসাহ দিতে সোমবার যুবভারতীতে তাঁর হাতে সবুজ-মেরুন পতাকা তুলে দিলেন মোহনবাগান ফুটবলাররা। ক্লাবের পক্ষ থেকে দেবরাজকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয় এ দিন।